আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস আজ
অন্তরা আলম | উইমেননিউজ২৪.কমআপডেট: ০১:৪৩ পিএম, ৬ মে ২০১৮ রবিবার
আজ শনিবার আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ বা ধাত্রী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও প্রসূতি মা ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমানো, জনসাধারণের কাছে মিডওয়াইফারী সেবার গুরুত্ব ও মিডওয়াইফদের মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল, বিভিন্ন সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মা ও শিশু স্বাস্থ্যের মানসম্মত সেবা প্রদানে মিডওয়াইফ এগিয়ে’।
দিবসটি পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
মাতৃত্ব জীবন বাঁচানোর কাজে মিডওয়াইফদের ভূমিকা তুলে ধরতে প্রতি বছর ৫ মে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস। সন্তান প্রসবে মায়েদের যুগ যুগ ধরে সেবা দিয়ে আসার স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৮০ এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে আন্দোলন শুরু হয়। পরে ১৯৯২ সালে ৫ মে তারিখটিকে আন্তর্জাতিক ধাত্রী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
১৯৯২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফ নামের সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফের (আইসিএম) অন্তর্ভুক্ত ৭৩টি দেশের ৮৭টি ধাত্রী সংগঠন ১৯৯২ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দিবস পালন করে আসছে। পর্যায়ক্রমে ১০৮টি দেশে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ সংস্থাটির মূল লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী দক্ষ মিডওয়াইফ তৈরির মাধ্যমে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করাসহ মা ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস এবং তাদের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করা। এছাড়া এ দক্ষ জনবলকে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুষ্ঠুভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ক্ষমতায়ন করা।
এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো- প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন নারী, নবজাতক ও তাদের পরিবার যেখানেই বাস করুক না কেন, তাদের সফল ও নিরাপদ প্রসবের জন্য সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে সমগ্র বিশ্বের ধাত্রীদের সংগঠিত ও উদ্বুদ্ধ করা। গর্ভকালীন ও সন্তান জন্মদানের সময় প্রত্যেক নারীর মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার আছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি।
২০০৫ সালে আইসিএম কর্তৃক মিডওয়াইফের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়, ‘ধাত্রী হলো সেই ব্যক্তি, যিনি একটি অনুমোদিত ধাত্রীবিদ্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত প্রশিক্ষণার্থী হয়ে একটি অনুমোদিত ধাত্রীবিদ্যা পাঠ্যক্রমে সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করার পর রেজিস্টার্ড বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়ে ধাত্রীর পেশায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করেন।
একজন মিডওয়াইফ বা ধাত্রী একইসঙ্গে দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিকারী পেশাজীবী। তিনি প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন নারীর প্রসবকালীন এবং প্রসব-পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান, যত্ন ও উপদেশ দেবেন, নিজ দায়িত্বে প্রসব পরিচালনা ও নবজাতকের সেবা প্রদান করবেন। এ সেবার মধ্যে পড়ে-রোগ প্রতিরোধ, স্বাভাবিক প্রসবের জন্য মাকে প্রস্তুত এবং মা ও শিশুর জটিলতা নির্ণয় করে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করাসহ অন্যান্য সঠিক সাহায্য প্রদানে প্রয়োজনীয় জরুরি ব্যবস্থা নেয়া।
ধাত্রীর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো- স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি ও কাউন্সেলিং করা এবং এ কাজ শুধু ব্যক্তি নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পরিবার ও কমিউনিটিতে বিস্তার করা। আত্মসামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকে পিছিয়ে পড়া একটি দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠীর নিরিখে খুবই সীমিতসংখ্যক ধাত্রী আমাদের এখনো বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ প্রসূতির মধ্যে ৩২০ জনের মৃত্যু হয় প্রসব, প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ, খিচুনিসহ আরও কয়েটি উপসর্গের কারণে।
গ্রামীণ জীবনে এখনও আঁতুড় ঘরের ব্যবস্থা আছে। আর সেই ঘরটা সাধারণ সবচেয়ে ছোটো এবং স্বাস্থ্যগতভাবে অনিরাপদ। মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো সন্তান। সেই শ্রেষ্ঠ সম্পদ সন্তানের আগমন উপলক্ষে নিশ্চয় চমৎকার না হোক স্বাস্থ্যসম্মত একটা আয়োজন থাকতেই হবে। প্রবসকালীন আপদ-বিপদের জন্য পরিবারের সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে সার্বিক অর্থে। প্রয়োজনে এলাকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিতে হবে মাকে। সন্তানের স্বার্থেই মাকে সুস্থ রাখা অনিবার্য। নিছক অচল পয়সার মতো সংস্কারের মায়ায় মা ও সন্তানকে কিছুতেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া যায় না।
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যায় ৪৮.৬ ভাগ নারী। এর মধ্যে ১৮ ভাগ নারী সন্তান ধারণে সক্ষম। সন্তান ধারণে সক্ষম নারীদের গর্ভাবস্থায়, প্রবসকালীন ও পরবর্তী সময়ে অনেক সমস্যাই দেখা দেয়। যার কারণে এ সময়গুলোয় নারীকে খুব সতর্ক থাকতে হয়। আমাদের দেশে শিশুমৃত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে নবজাতক। বাংলাদেশ নবজাতকের মৃত্যুর হার খুব ধীরগতিতে কমছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি ১০০০ জনে ৪২ জন শিশু বিভিন্ন জটিলতায় মারা যায়। বর্তমানে সংক্রামক ব্যাধিজনিত মৃত্যুর কারণগুলো কমলেও যেসব কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়, সেই কারণগুলো এখনো কমানো যায়নি। বাংলাদেশে শতকরা ৩৩ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশ শিশু বয়স অনুযায়ী লম্বা হয় না এবং ৪১ শতাংশ শিশুর বয়সের চেয়ে ওজন কম।
দেশে প্রতি বছর অন্তত ২৪ লাখ নারী ঘরেই সন্তানের জন্ম দেন কোনো আধুনিক ব্যবস্থা ছাড়াই। এভাবে সচেতনতার অভাবে প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রবসকালীন মাতৃমৃত্যু। বড় শহরগুলোর বাইরে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে পড়ে প্রতি বছর বহু নারী প্রসবকালীন সময়ে মারা যায়। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় রক্তক্ষরণ, প্রসব-পরবর্তী জটিলতা এবং অস্বাস্থ্যকর আতুরঘরে প্রসবের কারণে ২৫ শতাংশ প্রসূতির মৃত্যু ঘটে। অদক্ষ ধাত্রীর হাতে এখনও ৮৫ শতাংশেরও বেশি প্রসব হয়; যাতে মায়েদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণ। বাল্যবিয়েও নিরাপদ মাতৃত্বের পথে একটি বড় বাধা। দেশে বয়ঃসন্ধিকালে গর্ভবতী হওয়ার সংখ্যা ৬০ শতাংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যেক তিনজন কিশোরীর একজনই গর্ভধারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর মাধ্যমে প্রসব করালেই হয়তো প্রসবকালীন শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যানটা পাল্টে যেতে পারে। আর এজন্য সবার আগে প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী, যারা ঘরে ঘরে পৌঁছে প্রসবকালে মায়েদের পাশে থাকবেন, কখনো নিজেরাই প্রসব করাবেন, আবার প্রসবের সময় জটিল পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের কাছে পাঠানোর জন্য বাড়ির অভিভাবকদের উৎসাহিত করবেন।
গর্ভবতী নারীরা যদি গর্ভকালীন সঠিক সেবা-শুশ্রুষা না পায়, তাহলে প্রসবকালীন নানা সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মনে করেন, নারী গর্ভবতী হওয়ার পরপরই ধাত্রীর শরণাপন্ন হওয়া উচিত। পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ এবং চলাফেরা করা উচিত। তাছাড়া একটি সুস্থ পারিবারিক পরিবেশ অর্থাৎ আনন্দময় পরিবেশে গর্ভবতী মাকে রাখা প্রয়োজন।
নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ৭০০ মহিলার জন্য একজন ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত মিডওয়াইফ পেশাজীবী প্রয়োজন। এসএসসি পাসের পর ৩ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স এটি। ২০১৩ সালে ২০টি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ৫২৫ জনকে ভর্তি করা হয়। ২০১৪ সালে ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ২৭টিতে উন্নীত করা হয়। আসন বরাদ্দ করা হয় ৭০০টি। ২০১৫ সালে ৩১টি ইনস্টিটিউট ৮০০ জনকে ভর্তি করা হয়।
দেশে বর্তমানে প্রয়োজন প্রায় ৮ লাখ দক্ষ মিডওয়াইফ। অল্প কয়েকটি চলমান ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। সরকারি-বেসরকারিভাবে জেলা উপজেলায় একাধিক মিডওয়াইফ প্রশিক্ষণের ডিপ্লোমা শিক্ষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
- হঠাৎ নো মেকআপ লুকে জয়া আহসান!
- হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
- কেরানীগঞ্জে ভবনে আগুন
- ব্যাচেলর পয়েন্টে যে চরিত্রে দেখা দিলেন স্পর্শিয়া
- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে প্রকাশ্য হুমকি
- লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি শুরু ১৭ ডিসেম্বর
- এমিনেমের অশালীন প্রস্তাব ফাঁস করলেন টাইটানিকের নায়িকা
- ‘ডাক্তার ও নার্সদের রুমকে ‘পার্টি অফিস’ বানাবেন না’
- পাকিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচ হেরে সিরিজও হারল বাংলাদেশ
- ফের নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদীকে গ্রেফতার করল ইরান
- হাসপাতালে ভিড় না করার আহ্বান তাসনিম জারার
- মেট্রোরেল চলাচল শুরু
- রাউটার যেখানে লাগালে ওয়াই-ফাইয়ের সেরা স্পিড পাবেন
- শীতে পিরিয়ডের সময় যে ফলগুলো খাবেন না
- নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা
- ত্বকে বয়সের ছাপ? দূর করবে এই ৪ পানীয়
- মেট্রোরেলের ভ্যাট প্রত্যাহার
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
- আপেল নিয়ে কী ইঙ্গিত দিলেন জয়া আহসান
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি: মেডিকেল বোর্ড
- পার্লামেন্ট ভেঙে দিল থাইল্যান্ড
- ছবি নামিয়ে ফেলায় অপমানিত বোধ করেছি: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
- তফসিল ঘোষণা: নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
- ওপেনএআই`র অ্যাপ সাজেশন নিয়ে বিতর্ক
- ৯ দিনের ব্যবধানে বাড়ল সোনার দাম
- গর্ত থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু সাজিদ মারা গেছে
- রাউটার যেখানে লাগালে ওয়াই-ফাইয়ের সেরা স্পিড পাবেন
- নারী সাংবাদিককে চোখ মেরে বিতর্কে পাক আইএসপিআর প্রধান
- সচিবালয় থেকে ৪ জনকে নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে
- নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা









