ঢাকা, সোমবার ২৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৮:০০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেন রিতু আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে হিটস্ট্রোকে একদিনে ১৭ মৃত্যুর রেকর্ড ঢাকাসহ ৫ জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ আজ, প্রাথমিক খোলা বিপজ্জনক দাবদাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে ফিলিপিন্সে সরকারি স্কুলে সশরীরে পাঠদান স্থগিত

ইতিহাসের অংশ বাংলাদেশের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০৬ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার

কুমারখালী বালিকা বিদ্যালয়, কুমারখালী, কুষ্টিয়া ।

কুমারখালী বালিকা বিদ্যালয়, কুমারখালী, কুষ্টিয়া ।

নারীশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন ১৮৫৪ সালে নদীয়ার কৃষ্ণনগরে। তার এক বছর পর ১৮৫৫ সালে কুমারখালীতে নারীশিক্ষার কাজ শুরু করেন রামধন মজুমদার ও কাঙাল হরিনাথ মজুমদার। ১৮৬৩ সালের দিকে কুমারখালী বালিকা বিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

ইতিহাস বলছে, ১৮৫৪ সালে কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার তার নিজ গৃহ চণ্ডীমন্ডপে প্রথম নারী শিক্ষা চালু করেন। তার এই মহতী উদ্যোগটি আনুষ্ঠানিক রূপ পায় ১৯৬৩ সালে কুমারখালী বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কৃষ্ণধন মজুমদার কুমারখালী শহরে পৌরসভার পদ্মপুকুরের উত্তর পাড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি নির্মাণ করেন। তখন ছাত্রী সংখ্যা ছিলো মাত্র ৮ জন। এই মহতী কাজে সহযোগিতা করেছিলেন তার জ্যেষ্ঠ সহোদর রামধন মজুমদার ও কাঙাল হরিনাথ মজুমদার। কাঙাল হরিনাথ মজুমদার সেই বিদ্যালয়ের প্রথম অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। 

বিদ্যালয়টি অবিভক্ত বাংলার তৃতীয় এবং বাংলাদেশের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়। ১৮৬৬ সালে বিদ্যালয়টিতে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৪। ১৮৮০ সাল থেকেই বিদ্যালয়টি মাসিক ১২ টাকা সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত হয়।

১৯২৯ সালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রমথনাথ চক্রবর্তী বিদ্যালয়ের জায়গা বৃদ্ধি করেন এবং প্রথম দালান নির্মাণ করেন যা এখন পরিত্যাক্ত। পুরাতন ভবনে ক্রমবর্ধমান ছাত্রীদের সংকুলান না হওয়ায় ১৯৩৪ সালে পদ্মপুকুরের পূর্ব পাড়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯২৯ সালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি দালানঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। ইটের গাঁথুনি ও টিনের ছাউনিযুক্ত ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্তে কুষ্টিয়ার তৎকালীন মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট পি ডি মার্টিন এ কাজে এগিয়ে এলেন। গৃহনির্মাণের ব্যয় নির্ধারিত হলো আনুমানিক তিন হাজার টাকা। এক-তৃতীয়াংশ স্থানীয় জনগণ, বাকি দুই-তৃতীয়াংশ দেয় সরকার।

বিদ্যালয় সম্প্রসারণে সে সময় যারা দান করেছিলেন তাদের নাম ভবনের একটি সাদা পাথরে আজও লিপিবদ্ধ আছে।

কালের ক্রম ধারায় বর্তমানে বিদ্যালয়টি ‘কুমারখালী পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ নামে পরিচিত। এখন বিদ্যালয়ের একাধিক ভবন রয়েছে এবং প্রায় ১৫০০ ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে সাধারণ শাখায় বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ রয়েছে। কৃষিবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি ও কম্পিউটার বিষয়ে পাঠদানের অনুমতি রয়েছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কারিগরি শিক্ষার তিনটি ট্রেড চালু আছে। প্রতিবছর এসএসসি ফলাফল পাসের হার ৯০-এর বেশি। জেএসসি ফলাফলও একই রকম। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। 

জেলার মধ্যে ফলাফলে পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ অবস্থান রয়েছে। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি, যেমন ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতাতেও শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যালয়ের আধুনিক বিজ্ঞানাগার রয়েছে, রয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ও ভাষা ল্যাব। ভোকেশনাল শাখায় তিনটি বিভাগের পৃথক তিনটি পরীক্ষাগার রয়েছে। 

বাংলাদেশের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়টি ২০১৭ সালে জাতীয়করণ হয়। বিদ্যালয় সূত্র বলছে, বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী সরকারের মন্ত্রণালয়ে উপসচিব, বুয়েটের শিক্ষকসহ সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে কর্মরত রয়েছেন।