ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৫:৪০:৩৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

করোনায়ও ঋণ প্রবাহ বাড়ছে বেসরকারি খাতের

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২৪ এএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনাকালেই তলানি থেকে ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ। গত জুলাই মাস শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ২০১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব বলছে, গত জুন মাসের চেয়ে জুলাই মাসে ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমেছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। কারণ, জুন শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। তবে জুনে অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৬১ শতাংশে নেমে এসেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এই ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন বলছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ২ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে (গত বছরের জুলাই থেকে এই বছরের জুন) প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত সাত মাসে (জানুয়ারি- জুলাই) ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। গতবছরের ডিসেম্বর শেষে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫৩ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের স্থিতির পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫২ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১১ সালে মার্চে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৯ দশমিক ১৩ শতাংশে ওঠে।
২০১০-১১ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১১-১২ অর্থবছরে ছিল ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। অবশ্য ২০২০-২১ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। গত অর্থবছরের মুদ্রানীতিতেও এই একই লক্ষ্য ধরা ছিল। গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০-২১ অর্থবছরের যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হচ্ছে যথাক্রমে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেগুলোর বাস্তবায়নে গতি আসায় বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বাড়ছে। এছাড়া রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রফতানি আয়ও বাড়ার কারণেও বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়তে শুরু করেছে। তবে ছোট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সেই অর্থে ঋণ পাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের আগ্রাসী বিনিয়োগের কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে ঋণ প্রবৃদ্ধি। ওই পরিস্থিতিতে ২০১৮ সালের শুরুতে বেসরকারি ঋণপ্রবাহের লাগাম টানতে ব্যাংকের ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) কিছুটা কমিয়ে আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে।

এদিকে করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণসুবিধা নিয়ে যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য যথা সময়ে শুরু করা যায়, সেজন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহামারী মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে বড় শিল্প ও সেবা খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং কটেজ মাইক্রো ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে (সিএমএসএমই) ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল অন্যতম। এই দুই তহবিলের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা (১৫ হাজার ও ১০ হাজার কোটি টাকা) যোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

-জেডসি