ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৬:৪৯:৩৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

কারাগার বদলে দিচ্ছে নারী বন্দীর জীবন

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ঘরঘর শব্দে ঘুরছে সেলাই মেশিনের চাকা। নির্জন কক্ষে কাজ করে চলেছেন কয়েকজন নারী। গোপালগঞ্জ জেলা কারগারের ভেতরের চিত্র এটি। এই কারগারে সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী কারাবন্দীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। কারগারে বসেই নারী বন্দীরা সেলাই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

সেলাই প্রশিক্ষণে তারা সেলাই মেশিনের ব্যবহার, কাপড় কাটা, পোশাক তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। এরইমেধ্যে অনেকে পোশাক তৈরির কাজ সুন্দরভাবে রপ্ত করেছেন। তারা ছায়া, ব্লাউজ, স্যালেয়ার কামিজ তৈরি করতে পারছেন। কারাগারে বসেই তারা দক্ষকর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন। 

প্রশিক্ষিত এসব নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে সমাজ সেবা অধিদপ্তররের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়। জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও  কারগার কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে কারবন্দী নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। 

সমাজ সেবা অধিদপ্তররের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা আল আমিন মোল্লা জানান, প্রায় ৫ বছর আগে জেলা কারাগারে বন্দী নারীদের সেলাই প্রািশক্ষণ শুরু হয়। মাঝে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের শুরুর দিয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার দিক নির্দেশনায় এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ফের শুরু হয়। 

তিনি জানান, এখানে ১৩ টি সেলাই মেশিন দিয়ে এক সাথে ১৩ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ট্রেইনার রোজিনা সপ্তাহে ৩ দিন তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। প্রতিদিন তিনি ২ থেকে আড়াই ঘন্টা করে কারগারের নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে তাদের এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

আল আমিন মোল্লা বলেন, এ সমিতির সভাপতি জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। আর আমি সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করছি। এ সমিতিতে সরকার অর্থায়ন করেন। এছাড়া সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এ সমিতিতে অনুদান দিতে পারেন। 

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে যারা ভালো কাজ শিখবে তাদের আমরা ওই সমিতির মাধ্যমে পুনর্বাসন করব। বিনামূল্যে সেলাই মেশিনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা করে দেব। এভাবেই তারা দক্ষকর্মী হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।  

জেলা কারগারের জেলার মোশফিকুর রহমান বলেন, নারী বন্দীদের জন্য এখানে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এখান থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা দর্জি কাজের অনেক কিছুই শিখতে পারছেন।  কারগার থেকে মুক্তি পেয়ে তারা এটিকে কাজে লাগিয়ে টাকা রোজগারের সুযোগ পাবেন। অপরাধীর হাত কর্মীর হাতে পরিণত হবে।

কারাগারের সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, নারী অপরাধীদের সংশোধন করে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে কারগারে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এখানে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার নিয়মিত প্রশিক্ষণ তদারকি করছেন। আমরাও এ কাজে সহায়তা করছি। 

প্রশিক্ষক রোজিনা বেগম বলেন, এখানে অনেক প্রশিক্ষার্থী খুই মনোযোগী। তারা ইতিমধ্যে সেলাই মেশিন ব্যবহার, সেলাই করা, ব্লাউজ, ছায়া,স্যালেয়ার, কামিজ কাটিং শিখেছেন। অনেকে পোশাক তৈরি রপ্ত করেছেন। এদের পুনর্বাসন করা হলে তাদের পরিবারগুলো উপকৃত হবে। তারা সংসারের কাজের পাশাপাশি মাসে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা আয় করতে পারবেন।এতে তাদের সংসারে স্বাচ্ছন্দ আসবে। 

প্রশিক্ষাণার্থী সেলিনা সুলতানা বলেন, সেলাই প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। এখন প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। সেলাই মেশিন চালাতে পারছি। 

বন্দী ফাতেমা বেগম বলেন, গত ৬ মাসে সেলাই প্রশিক্ষণ থেকে সেলাই মেশিনের ব্যবহার , কাপড় কাটা, পোশাক তৈরি আয়ত্ত করতে পেরেছি। পুরোপুরি প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কোর্স শেষ করবো।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সবাইকে সামিল করতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই আমরা জেলা কারাগারের নারী বন্দীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তাদের হাতকে আমরা কর্মীর হাতে পরিণত করতে চাই।

সূত্র: বাসস