ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৩:০২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পরলোকে জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তীব্র তাপপ্রবাহ, সতর্ক থাকতে মাইকিং ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপ আজ শুরু

কুলের বাম্পার ফলনে খুশি নাটোরের কুলচাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১০ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নাটোরে এবার কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। রসুনে ধরা খেয়ে এবার কুলচাষে কপাল খুলেছে এই জেলার চাষীদের।

নাটোর কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উঁচু এবং উষ্ণতম অঞ্চলে কুলের ফলন ভালো হয়। নাটোর সদর, লালপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলায় কুল চাষ হয়ে থাকে।

জেলার সাতটি উপজেলায় আগে আপেল কুল ও বাউ কুলের চাষ হলেও এখন নতুন জাত কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ বেড়েছে। প্রচলিত আপেল কুল ও বাউ কুলের চেয়ে আকারে বেশ বড় এই কাশ্মীরি আপেল কুল। নতুন এ জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছেন অনেকেই।
স্থানীয়ভাবে জাত উন্নয়ন করে উৎপাদিত কুল চাষে উৎসাহ বাড়ছে চাষীদের। সেজন্য আপেল কুল বা বাউকুলের পরিবর্তে নাটোরের ৭টি উপজেলায় বাড়ছে কাশ্মিরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের চাষ। কাশ্মিরী বা বল সুন্দরী কুল আকারে বড়, অধিক রসালো, মিষ্টি, পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং ফলনও হয় বেশি। তাই নাটোরের ফল চাষীরা এই কুল উৎপাদনের দিকে বেশি ঝুঁকছে।

লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়ার নাজমুল হাসান ও বাগাতিপাড়া উপজেলার আব্দুল বারি কাশ্মিরী কুল গাছের চাষ করেছেন। তারা বলেন, পেয়ারার চাষে একবারই ভালো ফলন হয় কিন্তু কাশ্মিরী কুল চাষে কয়েকবার ফলন পাওয়া যায়। আবার এতে কীটনাশক প্রয়োগ কম করতে হয়। পোকার উপদ্রব কম। ফলনও বেশি, খেতেও সুস্বাদু। তাছাড়া পরিচর্যাও সহজ।

তাদের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, নতুন জাতের এই কুলের গাছে থোকায় থোকায় কাশ্মীরি আপেল কুলে বাগান ভরে গেছে। ফলের ভারে গাছগুলি মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাগান থেকে কুল বিক্রয় শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা বাগানে কুল তোলা ও বাজারজাতকরণে ব্যস্ত।

বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ার কুল চাষী কাজল এবার ৫ বিঘা জমিতে কুলের চাষ করেছেন। তিনি জানান, চারা রোপণের ১০ মাস পরই চারাগুলো পরিপক্কতা পেয়েছে। গাছে ধরেছে থোকায় থোকায় কাশ্মীরি আপেল কুল। প্রতি গাছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কেজি করে আপেল কুল পাওয়া যাবে।
বনপাড়া এলাকার আরেক চাষী খবির উদ্দিন বলেন, এ বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন তিনি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে বর্তমান বাজার দর হিসাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে কুল বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রায় ৯ লাখ টাকার কুল বিক্রি করা সম্ভব।জেলার বনপাড়া বাইপাস, ওয়ালিয়া বাজার, সদর উপজেলার চানপুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কুলের পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৮-১০টি আড়তে প্রতিদিন কুল বেচাকেনা হচ্ছে।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাইপাস মোড়ে গড়ে ওঠা কুলের আড়তগুলো এ সময় বেচাকেনায় সরগরম থাকে। প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি টাকার বিভিন্ন জাতের কুল কেনাবেচা হয় এখানে।

এসব আড়তে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি জেলার কুলচাষি ও পাইকাররা কুল নিয়ে আসেন। এসব কুল ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে কিনে ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যান।

নাটোর কৃষি সপ্রসারণ অধিদফতরের মতে, জেলার উঁচু এবং উষ্ণতম অঞ্চলগুলোতে কুল চাষ ভালো হয়। সে দিক থেকে নাটোরের লালপুর, বড়াইগ্রাম, সদর, গুরুদাসপুর এবং সিংড়া উপজেলায় কুল চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি হয় লালপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া এবং গুরুদাসপুর উপজেলায়। গত বছরের তুলনায় এবার কুলের ভালো দাম পাচ্ছে চাষিরা। তাছাড়া খরচ কম হওয়ায় অন্যান্য বাগানের তুলনায় কুল বাগানের সংখ্যাও বাড়ছে। ভালো মানের কুল উৎপাদনে চাষিদের প্রশিক্ষণ এবং সঠিক পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যার কারণে কুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নাটোরে হাইব্রিড জাতের বাউকুল ও বারমিজ কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। সেই সঙ্গে চলতি বছর বেড়েছে কুল আবাদের পরিমাণও।