ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১:২২:১৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

কেঁচো সার বিক্রি করে স্বাবলম্বী উত্তরের কৃষাণীরা

ফিচার ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৪১ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

কেঁচো সার উৎপাদন করে বেকারত্ব দূর করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষাণীরা। বাড়ছে নারীদের কাজের পরিধি ও আয়। এতে তারা একদিকে স্বাবলম্বী হচ্ছে আবার অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। 

কৃষাণীদের কেঁচো সারের গুণগত মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় কৃষক ও নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে জেলার কৃষকদের চাহিদা পূরণ করছেন।  সার বিক্রি করে তারা প্রতিমাসে আয় করছেন লাখ টাকা। মাত্র এক বছরের মধ্যে নিজেদের সফল খামারি হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন অনেকে। কৃষিণীরা আর্থিকভাবে যেমন স্বাবলম্বী হতে দেখে এখন জেলার অনেক যুবক ও নারীরা বিষমুক্ত এ জৈব সার উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ছেন।

জানা যায়, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন (সিডিএ) দিনাজপুরের আর্থিক সহায়তায় রাণীশংকৈল উপজেলার গাংগুয়া গ্রামে জৈব কৃষি চর্চা নারী উন্নয়ন জনসংগঠনের ৩৬ জন নারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গত বছর এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এ সংগঠনের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়েছে কেঁচো সার তৈরির শেড।

ফসলের ক্ষেতে রাসায়নিক সার ব্যবহারে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয় কৃষকদের। আর এই ব্যয় কমিয়ে আনতে কেঁচো দিয়ে তৈরি করা সার উৎপাদন শুরু করেন তারা। হাতের নাগালে ভালো মানের সার পাওয়ায় এখন কৃষকরা তা কম দামে কিনে জমিতে প্রয়োগ করছেন। ফলে ফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি হচ্ছে।

কৃষক আশরাফ আলী ও রহিমউদ্দিন বলেন, এ বছর কেঁচো সার দিয়ে ধান ও মরিচের আবাদ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। 

লুতফর হোসেন নামে আরেক কৃষক বলেন, কৃষাণীদের উৎপাদিত সার দিয়ে ধান, ভুট্টা, মরিচ ও মুগডাল আবাদ করেছি। অন্য সারের তুলনায় অর্ধেক খরচ হয়েছে।

সংগঠনের সদস্য কুলসুম আক্তার জানান, সিডিএর সহযোগিতায় গত বছর আমরা ২০টি হাউস তৈরি করি। এ শেড থেকে যে সার উৎপাদন হয় সেগুলো আমরা ১৫-১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। এপর্যন্ত আমরা এই শেড থেকে লক্ষাধিক টাকার অধিক কেঁচো সার বিক্রি করেছি।

আফসানা পারভীন নামের আরেক সদস্য জানান, কেঁচো, গোবর, কচুরিপানা, কলাগাছ, খড়কুটা দিয়ে মাত্র ২৫-৩০ দিনের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে কেঁচো বা জৈব সার। এলাকার বেশিরভাগ কৃষক এখন অন্য সারের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন এই সার। রিং, কারেন্ট ও হাউজ পদ্ধতিতে এ সার উৎপাদন করছি আমরা। বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কেঁচো সারের কোন বিকল্প নেই।

রহমত আলী নামের এক সদস্য জানান, শেডের ভিতরে অর্থাৎ বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন যেমন সহজ তেমনি এর চাহিদাও বেশি। এ কাজ থেকে বিনা ঝামেলায় অতিরিক্ত আয় হয়, পাশাপাশি নিজেদের জমিতেও ব্যবহার করছি এ সার। এর সারের ব্যবহারের চাহিদা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সিডিএর মহলবাড়ি ইউনিট ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব বলেন, গোবর, তরকারির খোসাসহ আবর্জনা দিয়ে কেঁচোর মাধ্যমে প্রক্রিয়া করে আদর্শ ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করা হয়। এগুলো ফসলের জন্য খুবই উপকারী। 

তিনি বলেন, গত বছর আমরা আমাদের এনজিও থেকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে এই জনসংগঠনের সদস্যদের টিনের শেডে ২০টি হাউস তৈরি করে দিই। এখন তারা সার উৎপাদনের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে আর্থিকভাবে ভালোই স্বাবলম্বী হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, কেঁচো সারটি ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক ভালো। এ সার ব্যবহারের খরচও অনেক কম। এছাড়া সারটি দিন-দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারে এবং কৃষকদের রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কম্পোস্ট সারের ব্যবহার বাড়াতে পরামর্শ দিয়ে থাকি। এতে নারীরা একদিকে স্বাবলম্বী হচ্ছে আর অন্যদিকে তাদের কর্মসংস্থান বাড়ছে। 

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে এ এলাকার নারীরা এখন আত্নমর্যাদায় বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। এ এলাকার নারীরা কেঁচো সার বিক্রিতে আরো ভালো করবে এবং এ ব্যবসায় নারীদের অগ্রগতির পথকে প্রসারিত করবে।