খাগডাছড়িতে বিদেশি খেজুর চাষে সফলতা
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১২:২৩ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার
সংগৃহীত ছবি
সবুজে ঘেরা উঁচু নিচু পাহাড়ের গা বেয়ে এঁকেবেঁকে চলা পথ, দৃষ্টিনন্দন অবিরত সবুজের হাতছানি, পাখ-পাখালির কলরবে মুখরিত চারদিক, কোথাও বন্যপ্রাণীর বিচিত্র ডাক। এমন নিস্তব্ধতায় মন ছুঁয়ে যায়। বলছিলাম, পাহাড়ের ঢালে বিশালাকার একখণ্ড জমিতে বিদেশি পরিক্ষামূলকভাবে খেজুরসহ বিভিন্ন জাতের ফলের বাগান করে স্বাবলম্বী হবার এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তার কথা।
খাগডাছড়ি মাটিরাঙ্গা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার আঁকাবাঁকা মেঠো পথ বেয়ে রসুলপুর নামক এলাকায় গভীর অরণ্য ভেদ করে বিশালাকার কয়েকখণ্ড জমিতে গাছে গাছে বিদেশি খেজুর ঝুলে আছে। দেখতেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। দেশের মাটিতে পরিক্ষামূলকভাবে বিদেশি খেজুরের চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন নুর আলম। পাহাড়ের মাটিতে আরবের এই খেজুর চাষের সফলতায় এখানকার কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ।
শাইখ সিরাজের কৃষি বিষয়ে অনুষ্ঠান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এই অঞ্চলে কৃষির বিপ্লব সৃষ্টি করার আগ্রহে সবুজ পাহাড়ের ২০১৯ সালে ১৩ একর জমি ক্রয় করেছেন নুর আলম। ক্রয়পূর্বক জমি প্রস্তুত করে একই বছর থেকে মিশ্র ফলের বাগান শুরু করেন তিনি। বর্তমানে প্রায় ১০ জন শ্রমিক দৈনিক এই বাগানে কাজ করেন।
নুর আলম দীর্ঘ বছর ধরে আইটি সেক্টরে সৌদি বাংলাদেশে কাজ করতেন। থাকেন ঢাকার শ্যামলীতে, দাম্পত্য জীবনে তিনি বিবাহিত ও একটি কন্যা সন্তানের জনক। আত্মীয়তার সম্পর্কের সূত্র ধরে পাহাড়ে এসে প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যান তিনি। মাটিরাঙ্গা কৃষি বিভাগের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে শুরু হয় পাহাড়ের জমিতে পরিকল্পনানুযায়ী বিভিন্ন ফল তথা খেজুরের চাষ।
উষ্ণ আবহাওয়া ও রুক্ষ মাটিতে অর্থকরী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মরুর সৌদি খেজুর। অন্যান্য ফলের চেয়ে এর সংরক্ষণকাল, চাহিদা ও বাজারমূল্য বেশি বিধায় এসব অঞ্চলে খেজুর চাষে আগ্রহ হচ্ছেন অনেকে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১শ আল রাজি টিস্যু কালচার সৌদি আরব ও ইংল্যান্ড থেকে এনে রোপণ করেন নুর আলম। এর আগে এই মাটি খেজুর চাষের জন্য উপযোগী কিনা সয়েল টেস্ট করিয়েছেন তিনি।
মাত্র ২-৩ বছরে খেজুরের বাগানে পানি, গাছ পরিষ্কার ও বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে সঠিক সময়ে নুর আলমের বাগানের খেজুর গাছে ফল ধরা শুরু হয়েছে। গাছে গাছে সবুজ, হলুদ ও লালচে খেজুরের সুবাস ছড়াচ্ছে। থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুর। এ যেন অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। কারণ মাটিরাঙ্গায় এই প্রথম পাহাড়ের মাটিতে বিদেশি খেজুরের চাষ।
এ খবর চারদিকে প্রকাশ হতেই প্রতিদিন অনেকেই খেজুরের বাগান দেখতে আসেন এখানে। শখের বশে নিজ হাতে গাছ থেকে সংগ্রহ করে খেজুর কিনছেন অনেকে, খেজুর গাছের খেজুর দেখার সঙ্গে প্রকৃতির দর্শন এ যেন বিনোদনের এক নতুন মাত্রা যোগ হলো। তাছাড়া খেজুরের বাগানে আশপাশের প্রকৃতি এত সুন্দর, যা কোনো প্রকৃতি প্রেমী কবির ভাষায় বর্ণনা শোভা পেতো।
তার বাগানে এখন বারোহি, আজওয়া, মিটজল ও আম্বারসহ বিভিন্ন জাতের খেজুরের জাত রয়েছে তাতে প্রায় অর্ধেক গাছেই এরই মধ্যে ফল ধরা শুরু হয়েছে। আগামী দেড়-দু’বছরে মধ্যে অন্য সব গাছে ফল ধরতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।
এ বছর প্রায় দু’লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করা হলেও আগামীতে ফলন ভালো হবার সাপেক্ষে বিক্রি আরো বেশি হবে বলে আশা করেন তিনি। তাছাড়া এই স্থানে খেজুরের টিস্যু কালচারের চারা বিক্রি করা হয় বলে তিনি জানান।
এদিকে এ বাগানে, চাইনিজ কমলা গাছ, রামভুটান, লংগান, লটকন, মিয়াজাকি আম, গরুমতি, ভিয়েতনামি মাল্টা, কাটিমন আম, মিশরীয় মাল্টা, রিং মাল্টা, আলুবোখারা, আপেল, নাসপাতিসহ বিভিন্নজাতের ফলের গাছ রয়েছে।
কৃষি উদ্যেক্তা নুর আলম বলেন, আমদানি নির্ভর যেসব ফল রয়েছে সেসব যদি দেশে উৎপাদন করা হয় তাহলে আমদানি নির্ভরতা কমবে পাশাপাশি ডলার সেভ হবে। তাছাড়া আমি চাই যে, হারভেস্ট করার পর যে ফল অন্তত ১৫ দিন-১ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে সেসব ফল চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ুক। যেন আমরা সহজে বাজারজাত করতে পারি। এতে করে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত কম হবে। তাছাড়া খেজুর টা সম্পূর্ণভাবে আমদানি নির্ভর বিধায় আমদানি নির্ভরতা কমাতে মূলত আমি খেজুর চাষ শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, সৌদি খেজুরের চাষাবাদ থেকে ভালো ফল পাওয়ার জন্য কৃষকদের ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ খেজুর বাড়তে একটু বেশি সময় লাগে। আর এই খেজুরে পোকামাকড়ের আক্রমণের সম্ভবনাও খুব কম।
খেজুর বাগান দেখতে আসা আমির হোসেন বলেন, পাহাড়ের মাটিতে সৌদির খেজুর চাষ। খবরটি শুনে দেখতে এলাম। দেখে আশ্চার্য হলাম এও কি সম্ভব? পরিবারের জন্য কিছু খেজুর কিনে নিয়ে যাবো। বৈচিত্রময় সবুজ ও নান্দনিক পাহাড় বেশ সম্ভাবনাময় মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী এখানে সবুজ বিপ্লব সম্ভব।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, মাটিরাঙ্গা সৌদি খেজুর চাষের জন্য উপযোগী, কারণ এর জলবায়ু অনেকটা মধ্যপ্রাচ্যের মতো। এছাড়া সৌদি জাতের খেজুর কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রেও বেশি প্রতিরোধী।
সৌদির খেজুর বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনাময় ফল মন্তব্য করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ আলী বলেন, খেজুর একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। মাটিরাঙ্গার রসুলপুরে পরিক্ষামূলকভাবে খেজুর চাষ করার বিষয়টি কৃষি বিভাগ অবগত আছে। তার বাগানের অবস্থা বেশ ভালো। কিছু গাছে ফলন এসেছে, পরিপক্কও হয়েছে। তবে এসব চাষে কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে চাষ করার কথা বলেন তিনি।
- রাজের সঙ্গে প্রেম নিয়ে মুখ খুললেন মন্দিরা
- এই গরমে অল্প সময়ে রান্না করার উপায়
- অভিজ্ঞতা ছাড়াই নারীদের চাকরি দিচ্ছে প্রাণ গ্রুপ
- এসি কেনার আগে এই ৫ তথ্য না জানলে ঠকবেন
- আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলি
- কোথাও তাপপ্রবাহ, কোথাও বৃষ্টির পূর্বাভাস
- ফেসবুকের কল্যাণে এক যুগ পর মাকে ফিরে পেলেন সন্তান
- সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমানবাহিনী
- বসতবাড়িতে বিস্ফোরণ, আহত স্কুলছাত্রীর ঢাকায় মৃত্যু
- আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ ঢাকা আসছেন আজ
- বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন, ঘুমের মধ্যে মা-ছেলের মৃত্যু
- এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- আজ থেকে স্কুল কলেজ খোলা
- জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট
- সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের
- ‘এক মাসে ৫৩ নারীর আত্মহত্যা’
- বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- ঈদের কেনাকাটায় ফুটপাতই ভরসা নিম্ন আয়ের মানুষের
- শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি
- সনজীদা খাতুনের জন্মদিন আজ
- ঢাকার বিপণিবিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা