ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৯:৪৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

থানার ভেতরে ‘হ্যান্ডকাপ হাতে’ নারী নেত্রীর ছবি ভাইরাল!

কুমিল্লা প্রতিনিধি | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩৫ এএম, ৭ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি মডেল থানার ভেতরে বসে হাতে হ্যান্ডকাপ নিয়ে ছবি তুলেছেন স্থানীয় নারী নেত্রী সালমা আক্তার নূপুর। পুলিশের অফিসারদের টেবিলে বসে এমন ছবি তোলার পর তা নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করলে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে গত ২১ সেপ্টেম্বর। আর এরপর থেকেই থানার নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও পুলিশের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে।

প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ মানুষের পক্ষে থানার ভেতরে প্রবেশ তো দূরের কথা, পুলিশের টেবিলে বসে হ্যান্ডকাপ হাতে ছবি তোলা কল্পনাতীত। অথচ নূপুর কোনো বাধা ছাড়াই এমন ছবি তুলেছেন। এমন কর্মকাণ্ডের পর কোতোয়ালি থানা পুলিশের নীরবতা এখন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

জানা গেছে, পলাতক আ.লীগের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার কন্যা তাহসিন বাহার সূচনার আস্থাভাজন ছিলেন সালমা আক্তার নূপুর। আর নূপুরকে ছবি তোলার এমন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন কথিত বৈষম্যবিরোধী নারী সমন্বয়ক জান্নাত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সালমা নূপুরের সঙ্গে এক নারীর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে তিনি যান কোতোয়ালি মডেল থানায়। তার সঙ্গে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী নারী সমন্বয়ক জান্নাত। থানায় প্রবেশের পর নূপুর জান্নাতের প্রভাব খাটিয়ে পুলিশের টেবিলে বসেন এবং হাতে হ্যান্ডকাপ নিয়ে ছবি তোলেন।

একাধিক ব্যক্তি নাম না বলার শর্তে বলেন, যে সালমা নূপুর বিগত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের মেয়র সূচীর আস্থাভাজন ছিলেন এবং সূচীর প্রভাব খাটিয়ে তখনকার সময় নানা অপকর্ম করেছেন তাকে কিভাবে বৈষম্যবিরোধী সংগঠনের নেত্রী জান্নাত প্রশ্রয় দেয়?

শহরের সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ‘যেখানে সাধারণ মানুষ থানায় ঢুকতে ভয় পায়, সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ে কেউ যদি পুলিশের টেবিলে বসে হ্যান্ডকাপ হাতে ছবি তোলে, তা পুলিশের নিরপেক্ষতার ওপর বড় প্রশ্ন তোলে।’

ছবির তোলার বিষয়ে সালমা আক্তার নূপুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছবিটি মজা করে উঠিয়েছি এবং মজা করেই ফেইসবুকে পোস্ট করেছি। এবিষয়ে থানা আইনি পদক্ষেপ নিলে আপনি কি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে নূপুর সারাবাংলাকে বলেন, আমি থানার ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার কে ম্যানেজ করেছি। এবং আমার পোস্ট ডিলেট করে ফেলেছি। আপনি পারলে নিউজ করে দেন।’

এ বিষয়ে সবন্বয়ক জান্নাতকে একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেসেজ দিলে তিনি সাংবাদিক কে বলেন, ‘আমি আপনাকে চিনি না। তাই কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। আমি সরাসরি আপনার সঙ্গে দেখা করব, এরপর আর কোন যোগাযোগ করেননি।’

এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবু রায়হান ও সদস্য সচিব রাশেদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অভিযোগের বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগে সমন্বয়ক জান্নাত এক মহিলাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে একটি অভিযোগ দেওয়ার জন্য। আমি জানতাম না ওই মহিলা আ.লীগের দোসর, সমন্বয়ক জান্নাত সঙ্গে করে নিয়ে আসছে তাই আমি আমার সেকেন্ড অফিসার কুতুবুদ্দিন কে দায়িত্ব দেই। এরপর কি হয়েছে তা আমি জানিনা। আর ওই নূপুর কিভাবে হ্যান্ডকাপ হাতে নিয়ে ছবি তুলেছে তাও আমি জানিনা।’

সেকেন্ড অফিসার কুতুবুদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এক অফিসার হ্যান্ডকাপটি টেবিলে রেখে ওয়াশ রুমে গিয়েছিল হাত মুখ ধোয়ার জন্য। তখন এ নূপুর এ ছবিটি তোলে। কিন্তু সমন্বয়ক জান্নাত নূপুরকে সঙ্গে করে এনেছে বিধায় আমরা নূপুরকে কিছু বলিনি।’

থানার ভিতরে এমন কর্মকাণ্ডে আপনারা কোন আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে প্রশ্ন করা হলে সেকেন্ড অফিসার কুতুবউদ্দিন কোন জবাব না দিয়ে নীরব থাকেন।