ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ২০:৪৩:৫৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

‘ধর্ষণের ঘটনায় বিচার পাওয়ার হার উদ্বেগজনক’

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৫৬ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ সোমবার

ছবি : সংগ্রহ করা

ছবি : সংগ্রহ করা

‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সহায়তা প্রাপ্তির সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, দেশে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় বিচার পাওয়ার হার উদ্বেগজনক। নির্যাতনের শিকারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোন গাইডলাইন নেই। ভুল রিপোর্ট প্রদান হলে কোনো শাস্তির বিধান নেই। এমন কি নির্যাতিতাদের জন্য পর্যাপ্ত সাপোর্ট সেন্টারও নেই। 

শনিবার, ডেইলি স্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট এই মত বিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভাটি গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসি) ও অক্সফ্যাম-এর সহায়তায় “ক্রিয়েটিং স্পেস টু টেক অ্যাকশন অন ভায়োলেন্স অ্যাগেইন্সট উইমেন অ্যান্ড গার্লস” প্রকল্পের আওতায় আয়োজন করা হয়।

আমরাই পারি জোট ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬টি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নারী নির্যাতনের তথ্য নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪৪১টি। এর মধ্যে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনাই সবচেয়ে বেশি। এসব ঘটনার ৫০% ঘটনাই ঘটেছে ঢাকা বিভাগে।  

২০১৮ সালে প্রকাশিত তথ্য মতে, নারী ও শিশু হত্যার বিচার হয়েছে মাত্র ৪১টি ও ধর্ষণের বিচার হয়েছে মাত্র ১৮টি। সংঘটিত হত্যা ও ধর্ষণের তুলনায় বিচার পাওয়ার হার নিতান্তই উদ্বেগজনক।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ২০১৮ সালে দায়েরকৃত পিংকি আক্তার মামলার বাদি পিংকি আক্তারের মা। তিনি জানান, তার মেয়ের মৃত্যুর পর প্রথমে পুলিশ আত্মহত্যার অজুহাত দেখিয়ে মামলা নিতে চায় নি। পরবর্তিতে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটিকে তার পক্ষপাতমূলক মনে হচ্ছে। বর্তমানে জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা তাদের হুমকি দিচ্ছে।

এছাড়া গত বছর ২ অক্টোবর সালমা ফারহানা মুক্তির মামলা এবং ২০১৬ সালে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী শ্রীমতি পূজা রানী দাস ধর্ষণ মামলার বর্তমান চিত্র এবং তাদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য মেডিকেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নারীবান্ধব নয়। 

তিনি বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর সারাদেশে সেল্টার হোমের  ব্যবস্থা করছে। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু যাতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পায় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক বলেন, পুলিশ, আইনজীবী, বিচারব্যবস্থা থেকে শুরু করে সরকারের কোন প্রতিষ্ঠানই নারী নির্যাতনের ইস্যুগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে না। নারীকে তার প্রাপ্য সম্মান দিচ্ছে না। 

হিউম্যান রাইট্স অ্যান্ড লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান বাদল বলেন,  আইনের ধারাগুলো সম্পর্কে মানুষকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।কারণ ভুল ধারায় মামলা হওয়ার কারণে মামলার বিচারকার্য বিলম্বিত হচ্ছে। নির্যাতনের শিকার নারীর আইনজীবী এবং আসামীর আইনজীবী যাতে সমান দক্ষ হয় সেই দিকে গুরুত্ব আরোপ করেন। 

আমরাই পারি জোটের নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক বলেন, হেল্পলাইন নাম্বার ১০৯ থেকে শুধুমাত্র থানার ওসির ফোন নাম্বার দেয়া হয়। কিন্তু ওসিরা পর্যাপ্ত সহায়তা করে না এবং বিষয়টি মনিটরিং করার ব্যবস্থাও নেই। নারী ও শিশু বিষয়ক মামলাগুলো লিগ্যাল এইড থেকে পাবলিক প্রসিকিউটরের কাছে চলে যায় এবং পিপি অনেক সময় রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। 

তিনি বলেন, নির্যাতনের মামলায় ময়না তদন্ত রিপোর্ট  দিতে দেরি করা হয় এবং পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য প্রতিবেদন ও রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয় যা নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিচারপ্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ করে।

সভাপতির বক্তব্যে আমরাই পারি জোটের জাতীয় কমিটির  কো-চেয়ারপার্সন ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতন রোধে বিচারব্যবস্থা শক্তিশালী ও নারীবান্ধব করতে হবে। বিচারব্যবস্থার দূর্বলতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়, পুলিশের অসহযোগিতা, অপর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতা ইত্যাদি কারণে নারী নির্যাতনের হার বেড়েই চলছে। 

তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাবের কারণে পুলিশ আলামত নষ্ট করে। ডাক্তার ভুল ময়না তদন্ত রিপোর্ট দেয়। জনপ্রতিনিধিরা অনেক সময় নির্যাতিতদের ভয়ভীতি দেখায়। এসব পরিস্থিতি থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। 

‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ নারীর প্রতি সকল নির্যাতন বন্ধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি নারী ও কন্যাশিশু যেন রাষ্ট্রীয় সেবা ও আইনি সহযোগিতা পায় এবং নির্যাতনের চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারে সে বিষয়ে কাজ করছে।