ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ২৩:৩৯:০১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক: প্রধানমন্ত্রী সবজির বাজারে স্বস্তি নেই যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ

নারী শ্রমিকের অধিকারই বদলেছে আজকের নারীবাদে

সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০১ এএম, ২০ মার্চ ২০১৯ বুধবার

ছবি : সংগ্রহ করা

ছবি : সংগ্রহ করা

‘আমরা নারী আমরা পারি’, এর অর্থ স্পষ্ট। কথাটির মধ্যে নারী বিপ্লবের যেমন যোগ রয়েছে তেমনই স্পষ্ট নারীবাদের। ১৬২ বছর আগে যে নারীর অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের সূচনা হয়েছিল তার সঙ্গে আজকের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনেক পার্থক্য। সেদিনের নারীদের লড়াই ছিল শুধুই শ্রমজীবী নারীদের জন্য এবং সেই আন্দোলন হয়েছিল শুধু বিদেশের হাতে গোনা কয়েকটি দেশে। ১৬২ বছর পরে এই দিন যখন প্রায় সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে তখন সময়ের সঙ্গে অধিকার এবং দাবির বিভিন্ন ধাপের মাধ্যমে বদল হয়েছে নারী দিবসের।

যেমন এই বছরের অর্থাৎ ২০১৯ সালের নারী দিবসের থিম ‘ব্যালেন্স ফর বেটার’। গঙ্গা থেকে টেমস বা নীলনদ কিংবা বিশ্বে যত নদী সাগর রয়েছে তার যত জল গড়িয়েছে তার সঙ্গে নারীবাদ এবং প্রতিবাদের ভাষা সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বদলেছে। এখনও চারটি ধাপে নারীবাদ এসেছে। প্রথম ধারা, যা ফার্স্ট ওয়েভ ফেমিনিজম নামে পরিচিত, তার জন্মলগ্ন বিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুতে (১৯০০-১৯৫৯ সাল)। এই সময়ে নারীবাদ সোচ্চার হয়েছিল সম্পত্তিতে, নির্বাচন লড়ার ক্ষেত্রে নারীদের সমানাধিকারের বিষয়ে।

 
দ্বিতীয় ধারার ফেমিনিজম বা নারীবাদের জন্ম ১৯৬০ সালে। লিঙ্গ বৈষম্য, প্রজননের অধিকার, আইনি বৈষম্য, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য নিয়ে নারীরা সোচ্চার হতে থাকেন এই সময়ে। ফেমিনিজমের তৃতীয় ধারার নারীবাদের জন্ম গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে (১৯৯০-২০০০ সাল)। এই সময়ের নারীবাদে উঠে আসতে থাকে ব্যক্তিসত্তার প্রসঙ্গ। ২০০০ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত নারীবাদের যে ধারা চলছে, তার কেন্দ্রে রয়েছে লিঙ্গ ভিত্তিক হেনস্থা এবং নারী বিদ্বেষ বিরোধী জনমত গঠন।

দিনটির পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের ইতিহাস। অনেক দেশে তাই আজও দিনটি পরিচিত আন্তর্জাতিক নারী শ্রমিক দিবস হিসেবেই। ১৮৫৭ সালে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতো কারখানার নারী শ্রমিকেরা। রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিবাদে অধিকাংশ সময়েই যেটা দেখা যায়, এক্ষেত্রেও তাই-ই হলো। সেই মিছিলে চলল সরকারি লেঠেল বাহিনীর দমনপীড়ন।

১৯০৮ সালে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হল। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এর পর ১৯১০-এ ডেনমার্কের কোপেনহাগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে।

এখানেই প্রথম ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ক্লারা। সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ থেকে নারীদের সম অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে।
১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হতে শুরু করে নিয়মিত ভাবে। ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৮ মার্চের দিনটিকে।

দিনটির পিছনে যেহেতু রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের ইতিহাস তাই অনেক দেশে তাই আজও দিনটির পরিচিত আন্তর্জাতিক নারী শ্রমিক দিবস হিসেবেই। আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুশ, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, কিউবা, জর্জিয়া, গিনি বিসাউ, এরিট্রিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজিস্তান, লাওস, মলদোভা, মঙ্গোলিয়া, মন্টেনিগ্রো, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, ইউক্রেন, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং জাম্বিয়াতে আন্তর্জাতিক নারীদিবস আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। চিন, ম্যাসিডোনিয়া, মাদাগাস্কার, নেপালে এই দিনটিতে শুধুমাত্র নারীরাই সরকারি ছুটি পান৷

৥ ভারতিয় পত্রিকা অবলম্বনে