ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৩:০৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’

ফেল করিয়েও কাদম্বিনীকে ঠেকাতে পারেননি শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩১ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের মেয়ে কাদম্বিনী বসু। যাঁর কারণে প্রথম ১৮৭৭ সালে নারীদের জন্য কলকাতায় খুলতে হয়েছিল কলেজ। যে কলেজকে বলা হয় পুরো এশিয়ার মধ্যে প্রথম মহিলা কলেজ। সেখানেই ক্ষান্ত হননি তিনি; একের পর এক বন্ধ দুয়ার খুলে হয়ে ওঠেন গোটা ভারতের প্রথম নারী চিকিৎসক। রীতিমতো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু করেছিলেন প্র্যাকটিস, যিনি প্রাইভেটে রোগী দেখতে যেতেন টাট্টু ঘোড়ার গাড়িতে করে। এখানে রইল অবিভক্ত ভারতের প্রথম নারী চিকিৎসক কাদম্বিনীর লড়াইয়ের গল্প।

কলকাতা মেডিকেল কলেজ না করে দেওয়ার পরও কিন্তু হাল ছাড়লেন না কাদম্বিনী। ওদের শর্ত অনুযায়ী স্নাতক পাসের পর আবার আবেদন করলেন। এবার বাদ সাধলেন মেডিকেল কাউন্সিল ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের একাংশ।

নারীর পক্ষে কেন ডাক্তারি পড়া সম্ভব নয়, নানা যুক্তি দিয়ে তা বোঝানোর চেষ্ঠা করলেন তাঁরা। এ সময় কাদম্বিনীর পক্ষে দাঁড়ালেন বাংলার লেফটন্যান্ট গভর্নর রিভার্স টমসন। তাঁর হস্তক্ষেপে কাদম্বিনীকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করতে বাধ্য হয় মেডিকেল কলেজ কাউন্সিল। অবশেষে ১৮৮৩ সালের ২৩ জুন প্রথম ভারতীয় কোনো নারী হিসেবে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেলেন কাদম্বিনী। সঙ্গে বৃত্তি।

১৮৯৩ সালে কাদম্বিনীর শিক্ষাজীবনের সংগ্রাম নিয়ে একটি নিবন্ধ ছাপে ‘ওম্যান্স হেরাল্ড’। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘মেডিকেলে পড়তে গেলে তাঁকে পুরুষদের কাছ থেকে নানা অপমান সইতে হবে, এ কথা জানানোর পর তিনি বলেছিলেন, “সব রকম অপমান সহ্য করতে আমি প্রস্তুত আছি।”’

১৮৮৩ সালে ২০০ ছাত্রের সঙ্গে একমাত্র নারী হিসেবে মেডিকেল কলেজে ক্লাসরুমে প্রবেশ করেন কাদম্বিনী। বাবার কাছে একবার চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ছোট্ট বিনি। কথাটা হেসে উড়িয়ে না দিয়ে বরং উৎসাহই দিয়েছিলেন বাবা। বাবার অবর্তমানে কাদম্বিনীর স্বপ্নযাত্রায় সঙ্গী হয়েছিলেন তাঁর মাস্টারমশাই থেকে স্বামীর ভূমিকায় আসা দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী। কাদম্বিনী বসুকে মেডিকেল কলেজের গেটেও নামিয়ে দিয়ে যেতেন তাঁর প্রিয় ‘মাস্টারমশাই’।

এক নম্বরের আফসোস

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সিরিয়াল মাধবীলতার একটা ক্লিপ আজকাল ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সিরিয়ালের নায়িকাকে সেখানে ২ নম্বরের আফসোসে ভুগতে দেখা যায়।

নায়িকা বলেন, ‘আমি পদার্থবিদ্যায় ৯৮ নম্বর পাইছি, এক শর মধ্যে। আর ২ নম্বর পাই নাই কেন জানেন? যে কলমটা দিয়ে আমি পরীক্ষায় লিখছিলাম, সেই কলমটার কালি ফুরায় গেছিল।’ এই সংলাপ এখন তরুণদের মুখে মুখেও ট্রল হয়ে ফিরছে।

তবে কাদম্বিনীর মেডিকেল কলেজ জীবনের ফাইনালে সত্যিই এমন এক নাটকীয় ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন তাঁর এক শিক্ষক। যেখানে ১ নম্বর কম দিয়ে ফাইনালে ফেল করিয়ে দেওয়া হয় কাদম্বিনীকে।

কাদম্বিনীর ভর্তিরও আগে থেকে ঘটনার সূত্রপাত। না জেনে, না চিনে শুধু একজন নারী বলে সেই সময়ের কলকাতা মেডিকেল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. রাজেন্দ্রচন্দ্র চন্দ্র কাদম্বিনীকে খারাপ মেয়ের তকমা দেন।

কাদম্বিনীর মেডিকেল কলেজে পড়ার সবচেয়ে ঘোর বিরোধী ছিলেন এই অধ্যাপক। মেডিকেলে পড়ার পুরো সময়টাতে পদে পদে তাঁকে আটকেছেন। আরও অনেক ছাত্র, শিক্ষকের মতো তিনিও কাদম্বিনীকে কোনো কারণ ছাড়াই শত্রু হিসেবে গণ্য করতেন।

তারই ফলাফল হিসেবে ফাইনালে অন্য সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও নিজের সাবজেক্টে মৌখিক পরীক্ষায় রাজেন্দ্রচন্দ্র ১ নম্বর কম দিয়ে ফেল করিয়ে দেন কাদম্বিনীকে।

‘কাদম্বিনীকে ১ নম্বর কম দিয়ে পাস না করানোর বিষয়টি নিয়ে সিনেটের বৈঠকে তখন যে আলোচনা হয়েছিল, তার দালিলিক প্রমাণও রয়েছে।’ বলেন কাদম্বিনীকে নিয়ে গবেষণা করা বরুণ চট্টোপাধ্যায়। অথচ এই রাজেন্দ্রচন্দ্র পড়াশোনা করেছেন ইংল্যান্ডে, বিয়েও করেছিলেন বিদেশি মেম।

নিজের সঙ্গে ঘটা অন্যায়ে ভেঙে পড়েন কাদম্বিনী। তবে আবারও উঠে দাঁড়ান। তাঁর পাশে দাঁড়ান কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. জে এম কোটস। এই ব্রিটিশ চিকিৎসক বুঝেছিলেন কাদম্বিনীর সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।

এই প্রিন্সিপালের উদ্যোগে সিন্ডিকেটে আলোচনার মাধ্যমে কাদম্বিনীকে ‘লাইসেনসিয়েট ইন মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি’ বা এলএমএসের সার্টিফিকেট দেওয়া হয় ১৮৮৬ সালে। আবার দুই বছর এলএমএস পড়েন কাদম্বিনী।

কিন্তু এবারও সেই একই শিক্ষকের পরীক্ষায় তাঁকে অকৃতকার্য দেখানো হয়। এবার কোটস নিজের অধিকার প্রয়োগ করে কাদম্বিনীকে ‘গ্র্যাজুয়েট অব বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ’ (জিবিএমসি) উপাধি দেন। এরপরই চিকিৎসক হিসেবে প্র্যাকটিস করার ছাড়পত্র পান কাদম্বিনী।

১৮৮৮ সালে প্রথম নারী চিকিৎসক হিসেবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রাইভেটে রোগী দেখতে শুরু করেন চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ বা ‘বেঙ্গলি’র মতো কাগজে নিয়মিত কাদম্বিনীর বিজ্ঞাপন ছাপা হতো।

১৮৮৩ সালে বিএ ডিগ্রি অর্জনের পর মেডিকেল কলেজে ভর্তির কয়েক দিন আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন কাদম্বিনী। পাত্র তাঁর সেই মাস্টারমশাই বিপত্নীক দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী। দুজনের বয়সের ব্যবধান অনেক, তার ওপর দ্বারকানাথের ঘরে তখন পাঁচ সন্তান। এই অবস্থাতেই ৩৮ বছরের দ্বারকানাথকে ব্রাহ্ম ধর্মমতে বিয়ে করেন ২২ বছরের কাদম্বিনী।

কাদম্বিনী বসু এবার পাকাপাকিভাবে হলেন কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। কাদম্বিনী একটা কিছু করবেন, আর সেটা নিয়ে সমালোচনা হবে না, তা কি হয়! তবে কারও কথার তোয়াক্কা করার মতো মেয়ে কাদম্বিনী নন। নিজের সিদ্ধান্তেই বন্ধু হয়ে পাশে থাকা মানুষটির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধেন তিনি।

দ্বারকানাথের আগের ঘরের সন্তানদের সঙ্গে মেডিকেলে পড়ার সময়ই নতুন করে একাধিকবার মা হন কাদম্বিনী। পড়াশোনা, সংসার, ক্যারিয়ার—সব সামলানোর পাশাপাশি মোট আট সন্তানেরই দায়িত্ব নিয়েছিলেন কাদম্বিনী।

স্বামী–সন্তানসহ বিশাল পরিবারের সবাই তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। আর তাই সংসার সামলেও ডাক্তারি পড়ার মতো কঠিন কাজটি তিনি শেষ করতে পেরেছিলেন।

এমনকি কাদম্বিনী যখন বিদেশে ডিপ্লোমা ডিগ্রির জন্য পড়তে গেলেন, তখন তাঁর ছোট ছেলের বয়স এক বছর। দুধের এই শিশুকে সৎমেয়ে বিধুমুখী ও তাঁর স্বামী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কাছে রেখে বিলেত যান।

১৮৯৮ সালে যকৃত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দ্বারকানাথ। তত দিনে নিজেই একটি নাম হয়ে উঠেছেন ডা. কাদম্বিনী। স্বামীর মৃত্যুর দিন বিকেলেও জরুরি কলে বিপন্ন এক রোগী দেখতে বেরিয়েছিলেন।

তাঁর বাড়িতে ঢুকলেও মিলত রুচিশীল পরিবেশের ছোঁয়া। নিজের হাতে ক্রুশ কাটায় নানা রকম জিনিস বানাতেন। বিদেশ থেকে ফিরে ঘরবাড়ি সাজিয়েছিলেন বিলেতি ঢঙে।

সমালোচনার জবাব

রোগী দেখতে প্রাইভেট চেম্বার পর্যন্ত খুলেছিলেন চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। রাত–বিরাতে ঘোড়ার গাড়ি চেপে রোগী দেখতে বেরিয়ে যেতেন। বিরোধীরা তখনো কাদম্বিনীর ডাক্তারি সনদ, রোগী দেখার যোগ্যতা নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক মন্তব্য করতেন।

কেউ কেউ তাঁকে নার্স বলেও বিদ্রূপ করতেন। কিন্তু এসবের মধ্যেও নিয়মিত অস্ত্রোপচার করতেন কাদম্বিনী, রোগীর সেবায় নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতেন। গরিবদের সেবা করেছেন আমৃত্যু। বিশেষ করে বাঙালি গরিব ও প্রান্তিক মুসলমানদের চিকিৎসাসেবা দিতেন কাদম্বিনী।

১৮৯০ সালে ৩০০ টাকা বেতনে ডাফরিন জেনানা হাসপাতালে যোগ দেন কাদম্বিনী। সমালোচকদের মুখে ছাই দিতে এবার বিদেশ থেকে ডিগ্রি আনতে মনস্থির করলেন। ১৮৯৩ সালে ডিগ্রি আনতে যখন ইংল্যান্ড যান, তখন তাঁর দুই সন্তানের একজনের বয়স ৬, আরেকজনের এক বছরের মতো।

তারপরও স্বামীর উৎসাহে দুধের সন্তান রেখে একা বিদেশযাত্রা করেন কাদম্বিনী। অবিশ্বাস্যভাবে ছয় মাসে স্কটিশ কলেজ থেকে সাফল্যের সঙ্গে তিনটি ডিপ্লোমা শেষ করেন। এরপর ফিরে এসে দারুণ উদ্যমে মানবসেবায় মনোযোগ দেন।

১৮৮৯ সালে বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে কংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনে প্রথম যে ছয়জন নারী প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন, কাদম্বিনী ছিলেন তাঁদের অন্যতম। পরের বছর কংগ্রেসের ষষ্ঠ অধিবেশনে প্রথম নারী বক্তাও ছিলেন তিনি।

নারী হওয়ার ‘অপরাধে’ সেই সময় সব সাধারণ মানুষ তাঁকে সাদরে গ্রহণ করতে পারেনি। আর তাই অনেক বাড়িতে গিয়ে অপমানিত হয়েছেন। কেউ কেউ তাঁকে রোগী দেখার পর বাইরের ঘরে খেতে দিয়েছেন। আবার খাবার শেষ করার পর বাসনটাও মেজে দিয়ে যেতে বলতেন। অনেকে তাঁর জাতপাত নিয়েও প্রশ্ন তুলতেন।

কাদম্বিনীর পেশা নিয়ে একাধিকবার কুরুচিপূর্ণ প্রতিবেদন করে ‘বঙ্গনিবাসী’। তাঁর রাতে রোগী দেখতে যাওয়ার বিষয়টিকে মেনে নিতে না পেরে পত্রিকাটি একবার মন্তব্য করে, ‘তিনি কি ডাক্তারি করেন নাকি বেশ্যাবৃত্তি?’

সাধারণত সমাজের সব অপমান মুখ বুজে সহ্য করলেও এবার আর  ছাড় দিলেন না কাদম্বিনী। পত্রিকাটির সম্পাদকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করলেন তিনি ও দ্বারকানাথ। বিচারে সম্পাদকের ছয় মাসের জেল ও জরিমানা হয়। মানহানির ক্ষতিপূরণ হিসাবে কাদম্বিনীকে দেওয়া হয় তিন হাজার টাকা।

১৮৯৪ সালে ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলের প্রথম ভারতীয় নারী অধ্যাপক হয়েছিলেন। কিছুদিন সেই চাকরি করে পরে পুরোপুরি প্রাইভেট প্র্যাকটিসে ফেরেন। কাশীর মহারাজার আমন্ত্রণে রাজবাড়িতে রোগী দেখতে গেছেন কাদম্বিনী।

একাধিকবার নেপালের রাজপরিবারের চিকিৎসার জন্যও কাদম্বিনীর ডাক পড়েছিল। শোনা যায়, রাজমাতাকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলায় খুশি হয়ে রাজা তাঁকে পারিশ্রমিক ছাড়াও নানা রকম দামি উপহার দিয়েছিলেন, তার মধ্যে ছিল ঘোড়ায় টানা একটা ফিটন।

১৯২৩ সালের ৩ অক্টোবর জটিল এক অপারেশন শেষে এই ফিটনে করেই বাড়ি ফিরেছিলেন কাদম্বিনী। ফেরার পর দোতলার ঘরে হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়। রোগী দেখে সেদিন ৫০ টাকা ভিজিট পেয়েছিলেন। যা তাঁর মৃত্যুর পর ব্যাগে পাওয়া যায়। এই টাকাতেই কাদম্বিনীর সৎকার হয়েছিল।

কে প্রথম

অবিভক্ত ভারতবর্ষের প্রথম নারী চিকিৎসক আসলে কে? বিভিন্ন জায়গার নানা রকম তথ্যের কারণে এ বিষয়টা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভোগেন। কারণ, প্রথম নারী চিকিৎসক হিসেবে তিনজনের নাম ঘুরেফিরে আসে।

কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ছাড়া বাকি দুজন হলেন বোম্বের মেয়ে আনন্দীবাঈ যোশী ও রুখমাবাই রাউত। তবে এর মধ্যে রুখমাবাই রাউত লন্ডন স্কুল অব মেডিসিনে যে বছর পড়তে যান (১৮৮৬ সাল), তত দিনে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এলএমএসের সনদ পেয়ে গেছেন কাদম্বিনী।

তাই এই প্রতিযোগিতায় রুখমাবাই টেকেন না; কারণ, তিনি পাস করে বেরিয়েছিলেন ১৮৯৩ সালে। অন্যদিকে কাদম্বিনীর মতো একই বছর (১৮৮৬ সালে) আমেরিকার পেনসিলভানিয়ার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করেন আনন্দীবাঈ যোশী।

যোশীর স্বামী তাঁকে ডাক্তারি পড়তে পাঠিয়েছিলেন আমেরিকা। তবে যোশী যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরেন ১৮৮৭ সালে। দেশে ফিরে প্র্যাকটিস শুরু করার আগেই মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ভারতের পুনে শহরে মারা যান। আর তাই সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, কাদম্বিনী গাঙ্গুলীই ভারতবর্ষের প্রথম প্র্যাকটিসিং নারী চিকিৎসক।

যা কিছু প্রথম—তাঁর সবটাতেই যে প্রতিকূলতা পেরোতে হয়, সেটা তো কাদম্বিনীদের ১০০ বছর পর বাংলাদেশের প্রথম নারী পাইলট সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানাকেও করতে হয়েছে।