ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:১৮:৪৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস আজ

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫৪ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার

বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস আজ

বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস আজ

আজ ১৫ অক্টোবর। বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারো জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশও দিবসটি পালন করছে। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকার প্রতি স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার রেজুলেশন নম্বর ৬২/১৩৬-এর মাধ্যমে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। 

২০০৮ সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন করে আসছে। এর আগে ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ নারীদের খাদ্য উৎপাদনসহ বহুমুখী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতির জন্য বেইজিং সম্মেলনেই প্রতি বছরের ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস বিশ্বের গ্রামীণ নারীদের অধিকার বাস্তবায়নে সংগঠিতভাবে পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদনের ২০ ধরনের কাজে নারীরা জড়িত। অনেকসময় তারা ফসল উৎপদানে মাঠে যেমন কাজ করেন, তেমনি মাঠের বাইরে উৎপাদন কাজেও তারা প্রধান ভূমিকা রাখেন।

উন্নয়ন কর্মীরা বলছেন, প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি নারী বিভিন্ন ধরনের কৃষি উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক অবদানের মূল্যায়ন বা স্বীকৃতি তারা পাচ্ছেন না। এমনই প্রেক্ষাপটে আজ উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস।

বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় অংশ বাস করেন গ্রামে। কৃষিকাজে তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ’র (বিলস) এক গবেষণায় দেখা গেছে, চা শ্রমিক নারীদের বেলায় বৈষম্য আরও প্রকট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে চা বাগানে নারী শ্রমিকদের আসা-যাওয়া করতে হয়। মাতৃত্বকালীন ছুটির কোনো বালাই নেই। ৯৭ শতাংশ নারী চা শ্রমিকের কোনো নিয়োগপত্রই নেই।

শ্রম আইন, ২০০৬-এর ৩৪৫ ধারা অনুযায়ী, নারী-পুরুষের সমকাজে সমান মজুরি প্রদানের কথা বলা হয়েছে। খোদ শহরে পুরুষদের দৈনিক দিনমজুরি যেখানে ৮০০-১২০০ টাকা, নারীরা সেখানে পান ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তাছাড়া দেশে কৃষি, শিল্প, মৎস্য, গবাদিপশুর খামারসহ সব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে গ্রামের নারীদের অবস্থা শহরের নারীদের চেয়েও খারাপ। কোথাও তাদের সমান অধিকার নেই।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ অনুসারে কৃষিতে ৪৫ শতাংশ জনবল নিয়োজিত। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী, ১৯ শতাংশ পুরুষ। কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য খাতে ৩ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার জন নিয়োজিত। এ শ্রমশক্তির মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী এবং প্রায় ৩০ শতাংশ পুরুষ। দেশের জিডিপিতে বর্তমানে নারীর অবদান ২০ ভাগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীর গৃহস্থালি ও অবৈতনিক কৃষিকাজের আনুমানিক মূল্য আড়াই লাখ কোটি টাকা। বিবিএস ও ইউএন উইমেনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারীর গৃহস্থালি কাজের শ্রমমূল্য ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এসব কাজ ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ নারীই করে থাকেন। তথ্য অনুযায়ী, নারীরা পুরুষের তুলনায় গড়ে সাতগুণ বেশি সময় দেন অবৈতনিক কাজে। এ কারণে মোট অদৃশ্য শ্রমের প্রায় ৮৮ শতাংশই করছেন নারীরা।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিকশিত বাংলাদেশের প্রধান রুমী খান বলেন, কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ নিজ হাতে সরাসরি করেন নারীরা।

তিনি বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে মাঠে ফসল ফলানো, মাঠ থেকে ফসল আনার পরে সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে ঘরে তোলার ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ায় নারীর ভূমিকা অনেক বেশি।

রুমী খান আরও বলেন, আমরা কেবলমাত্র আবাদি ফসলকেই কৃষি বলি। কিন্তু কৃষিতে অনাবাদী অংশও থাকে। হাঁস-মুরগী, গরু, ছাগল সব মিলিয়ে কৃষি। আর এসব কাজে নারীদের ভূমিকাই প্রধান। কৃষিকাজে নারীর অবদানের স্বীকৃিতি দিতে হবে। কিন্তু নারীদের এই অবদানের কতটা মূল্যায়ন হচ্ছে?

তিনি বলেন, নারীকে মোটেও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাদের অবমাননা করা হয়েছে। পরিসংখ্যানে তাদের তুলে ধরা হয়নি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। এমনকি যারা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন তারা কাজের মানদণ্ডটা ভুলভাবে করেন বলে নারীদের অবদান দেখেন না।

রুমী খান বলেন, জাতীয়ভাবে কৃষিনীতি হলে নারীদের কৃষক হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। তাদের অবদানকে অর্থনৈতিক মানদণ্ডে ফেলে জাতীয় আয়ে তাদের অবদান তুলে ধরলে আমরা একধাপ এগোতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।