ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪৫:৫৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল

যশোরের বাঁধাকপি রপ্তানি হচ্ছে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২১ শুক্রবার

বাঁধাকপি

বাঁধাকপি

দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সবজি এখন রফতানি হচ্ছে বিশ্বের নানা দেশে। যশোরের শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি রপ্তানি হচ্ছে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়। এরই মধ্যে প্রথম চালানে ২০ হাজার কেজি বাঁধাকপি সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়েছে। ক’দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাঁধাকপির দ্বিতীয় চালানে আরো ২১ হাজার কেজি রপ্তানি হবে।

চলতি মৌসুমে বিদেশে বাঁধাকপি রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয় গত মঙ্গলবার। রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং উপ-পরিচালক (রপ্তানি) সামছুল আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, সলিডারিডাড নেটওয়ার্কের প্রোগ্রাম অফিসার রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী, কৃষিবিভাগের কর্মকর্তা,কৃষকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।

বাঁধাকপি রপ্তানিতে কৃষকের চোখে-মুখে এখন হাসির ঝিলিক। শীতকালীন সবজির মওসুমের শেষ দিকে বাঁধাকপির দাম কমে যাওয়ায় কৃষকের ক্ষেত থেকে সরাসরি বাঁধাকপি কিনে দেশের গন্ডি পেরিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সফল প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সিটি ইমপেক্স নামে ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের কাছ থেকে এই বাঁধাকপি কিনে প্রক্রিয়াজাত করে জাহাজযোগে সিঙ্গাপুরে রপ্তানি করেছে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাঁধাকপির দ্বিতীয় চালানে ২১ হাজার কেজি পাঠানোর জন্য আজ শুক্রবার রপ্তানিকারক জিয়াউল হকের পক্ষ থেকে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বাঁধাকপি কেনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিদেশের বাজারের জন্য রপ্তানিকারক শরিফুর রহমান আগামি রোববার আরও ২০ হাজার কেজি বাঁধাকপি কিনবেন বলে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্কের কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’র টেকসই কৃষির উন্নয়নে ‘সফল’ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চার মাসে যশোর থেকে ৭৪ হাজার ৩১৪ কেজি নিরাপদ সবজি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, পটল, পেঁপে, চিচিংগা, ঝিঙ্গে, বরবটি, লাউ, কলা, দেশি শিম ও গোল বেগুন।

যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে অস্থায়ী সবজি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় যানবাহনে করে গ্রামের মাঠ থেকে বাঁধাকপি কেটে ওই কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। শ্রমিকরা তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিউজপ্রিন্টের সাদা কাগজে একটা করে বাঁধাকপি মুড়িয়ে নাইলনের জালের ব্যাগে ভরে কাভার্ডভ্যানের ভিতরে সাজিয়ে রাখছে।

রপ্তানিকারক শরিফুর রহমান বলেন, যশোর থেকে কাভার্ডভ্যানে করে বাঁধাকপি চট্টগ্রাম নৌবন্দরে নেয়া হবে। পরে বিশেষায়িত কন্টিনারে ভরে জাহাজে করে তা সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুরে পৌঁছাতে চার থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যাবে।

তিনি আরো বলেন, এর আগে শুকনা খাদ্য ও আলুসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করেছি। কিন্তু বাঁধাকপি এই প্রথমবারের মত রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথম চালানে ২০ হাজার কেজি বাঁধাকপি পাঠানো হচ্ছে। পণ্যের গুণগতমান ঠিক থাকলে ও ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে পারলে সপ্তাহে অন্তত দু’টি চালান রপ্তানি করা যাবে। এতে কৃষকরাও লাভবান হবেন।

সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক শামসুল ইসলাম বলেন, ৭ বিঘা জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছি। প্রথম দিনে রপ্তানির জন্যে ৩ হাজার বাঁধাকপি বিক্রি করেছি। প্রতিটি কপির দাম আট থেকে নয় টাকা করে পাওয়া গেছে। স্থানীয় সবজির বাজারে এখন মানভেদে পাঁচ থেকে সাত টাকা দরে প্রতিটি বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে।
বাঁধাকপি রপ্তানিতে দাম ভালো পাওয়ায় আমরা লাভবান হচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, এই বাঁধকপির চাষ পদ্ধতি একটু ভিন্ন। বাঁধাকপির ক্ষেতে পরিমিত পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। কেঁচো সার ও জৈব বালাইনাশক বেশি ব্যবহার করা হয়। এজন্য এই সবজি নিরাপদ। আমরা আগে থেকে কৃষি বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে কৃষিবিভাগ আমাদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছে।

সফল প্রকল্পের পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম বলেন,কৃষকের সঙ্গে রপ্তানিকারকের সরাসরি সংযোগ স্থাপন হওয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমেছে।বাজারে পণ্য তোলার পরে বিক্রেতাদের খাজনা দিতে হতো, তাও এখন দেয়া লাগে না। এতে সরাসরি কৃষক ও রপ্তানিকারক লাভবান হচ্ছেন। টেকসই এই কার্যক্রমে কৃষিবিভাগ সরাসরি তত্ত্বাবধান করছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এ জেলায় মোট ১৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ রয়েছে। এরমধ্যে বাঁধাকপি রয়েছে ৭৫ হেক্টর জমিতে। জেলার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত সবজি উদ্বৃত্ত থাকে। যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। এ জেলার উৎপাদিত সবজি এখন বিদেশেও এখন রপ্তানি হচ্ছে।