ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১৮:১৫:৪০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

রংপুরে গ্রামীণ নারীদের ভাগ্য ফিরছে আইজি কার্যক্রমে

ফিচার ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

কোভিড-১৯ মহামারী  ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও রংপুর অঞ্চলের বহু গ্রামীণ নারী সরকারের আয় বৃদ্ধি কার্যক্রমের (আইজিএ) মাধ্যমে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ভালো উপার্জন করছে। সরকারী সহায়তা এবং নিজস্ব উদ্যোগে শত শত গ্রামীণ মহিলা আইজিএ পরিচালনার মাধ্যমে বেকার যুব মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি  এবং স্বনির্ভরতা অর্জনে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
রংপুরভিত্তিক গবেষণা সংস্থা নর্থবেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সামসুজ্জামান বলেন, গ্রামীণ নারীদের জন্য সরকারের বিভিন্ন সহায়তার ফলে তারা গত ১৩ বছরে বিভিন্ন আইজিএ-তে নিযুক্ত হতে সক্ষম হয়েছে। তাদের অনেকেই রংপুর অঞ্চলের সরকারি দপ্তর এবং কিছু এনজিও থেকে সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেয়ে যুব মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ছোট-বড় উদ্যোগ, ব্যবসা ও বাণিজ্য চালু করেছে। 
তিনি বলেন, ‘এছাড়া, আশ্রায়ণ প্রকল্পের অধীনে গৃহহীন নারীদের পুনর্বাসন, আইজিএ’র জন্য প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, ভাতা ও অন্যান্য সহায়তা তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি এবং ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়তা করেছে।’
রংপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, ব্যাপক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন অনেক গ্রামীণ নারীর জীবনযাত্রার উন্নয়নে কার্যকরভাবে সহায়তা করেছে। 
রংপুরের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাওসার পারভিন বলেন, গত ১৩ বছরে সেলাই, সূচিকর্ম ও অন্যান্য ব্যবসায় প্রশিক্ষণ এবং সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সহায়তা পেয়ে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি বেকার তরুণী ভালো আয় করছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল ফারুক বলেন, শুধু রংপুর জেলায় আইজিএ’র মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি বেকার, যাদের অধিকাংশই নারী; প্রশিক্ষণ ও সুদমুক্ত ঋণ পেয়েছে। 
‘আমার বাড়ী- আমার খামার প্রকল্প (এবিএকে)’ এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের (পিএসবি) রংপুর জেলা সমন্বয়কারী জাহাদুল ইসলাম বলেন, রংপুর জেলায় এবিএকে এবং পিএসবি’র সহায়তায় এক লাখেরও বেশি দরিদ্র পরিবার জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সুবিধাভোগীরা বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করে বিশেষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ঋণ প্রদানসহ আইজিএ, উদ্যোক্তা, ব্যবসা, পশুপালন, হাঁস-মুরগি, মৎস্য ও বসতবাড়িতে চাষাবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।’
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের রংপুর জোনাল অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, শতভাগ গ্রামকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় আনার ফলে রংপুর বিভাগের গ্রামীণ জনগণের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বহু বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ নারীসহ স্থানীয় উদ্যোক্তারা ২৩ হাজার ৩০টি বিদ্যুৎচালিত কুটির শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পল্লী অর্থনীতির উন্নতির জন্য গ্রামের নারীদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’
বাসস-এর সাথে আলাপকালে বেশ কয়েকজন গ্রামীণ নারী বলেছেন যে, তারা এসএসএনপি এবং অন্যান্য কর্মসূচির সরকারী এবং বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তায় কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদের জীবন ও জীবিকার মান উন্নয়নে সক্ষম হয়েছেন।
রংপুর সদর উপজেলার কুরশা বলরামপুর গ্রামের এবিএকে-পিএসবি প্রকল্পের সুবিধাভোগী আলেফা বেগম জানান, ১৩ বছর আগেও তিনি তার স্বামী ও চার সন্তানসহ অনেক কষ্টে ছিলেন। ‘আমি ২০১২ সাল থেকে ১০,০০০ টাকা, ১৫,০০০ টাকা এবং ১৮,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে গরু, ছাগল এবং ভেড়া কিনেছি’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তার এগারো লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে, যার মধ্যে ১২টি গরু, ১৩টি ছাগল এবং ১৮টি ভেড়া রয়েছে এবং দুই একর চাষের জমি লিজও নিয়েছেন। 
সৈয়দপুরের সফল কারিগর শাবানা বেগম ও সালেহা খাতুন জানান, অলংকারিক নকশা ও এমব্রয়ডারির মাধ্যমে তারা সাধারণত মাসে ১০ হাজার টাকা  থেকে  ১৬ হাজার  টাকা পর্যন্ত আয় করেন। 
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা ‘নারী পণ্য’র ফরিদা পারভিন বলেন, নারীদের পোশাকে হাতে কাজ করা সেলাই  প্রায় ৪০০ গ্রামীণ তরুণীকে ভাগ্য পরিবর্তন করে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। 
তিনি বলেন, ‘নারীরা তাদের দক্ষতা এবং শাড়িতে হাতের কাজ , থ্রি-পিস এবং অন্যান্য পোষাকে স্প্যাংলিং, নকাশাকৃত সেলাই এবং এমব্রয়ডারির কাজের মানের উপর নির্ভর করে, প্রতি মাসে ৯ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকে।’