ঢাকা, শুক্রবার ১৯, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৬:১২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছেন তারেক রহমান আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আবারো আগুন-ভাঙচুর প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

রাজধানীতে গাছে গাছে আমের মুকুল, মুগ্ধ পথিক

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০১ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার

খিলগাঁও (তালতলা) সুপার মার্কেটের সামনে থেকে ছবিটি তোলা।  ছবি: উইমেননিউজ২৪.কম।

খিলগাঁও (তালতলা) সুপার মার্কেটের সামনে থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: উইমেননিউজ২৪.কম।

রাজধানীতে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। সেই মুকুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। মুগ্ধ হচ্ছেন পথচারিরা। নতুন মুকুলের সোনালী বর্ণের ছটা নজর কাড়ছে সকলের। ইট-পাথরের নগর জীবনে মিলছে গ্রামীণ আবহ।

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় বাসার সামনে এবং লেক বেষ্টিত পার্কে প্রচুর আম গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙা মুকুল। গাছের প্রতিটি ডালপালাতেও মুকুলে ছেয়ে আছে। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। আর চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের ঘ্রাণ। দুয়েকটি গাছে আবার ছোট্ট আকার ধারন করেছে আম।

ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডে সানিডেইল স্কুলের সিনিয়র সেকশানের সামনের উঠোনজুড়ে একাধিক আম গাছে ছেয়ে আছে হলুদাভ আমের মুকুলে। মিষ্টি গন্ধ মিশে আছে বাতাসে। 

এই স্কুলের একজন কর্মচারি বলেন, আমাদের স্কুলের গাছগুলোর আম খুব মিষ্টি। প্রতি বছর গাছগুলো ছাপিয়ে ফুল আসে। বেশ আম হয়। আমরা সবাই মিলেমিশে খাই সে আম। রাজধানী শহরে বসে গাছ থেকে পেড়ে আম খাচ্ছি এ এক অসাধারণ অনুভূতি।

খিলগাঁও (তালতলা) সুপার মার্কেটের তৃতীয় গেটে ভেতরে একটি মাঝারি আকারের আম গাছজুড়ে আমের মুকুলে ছেয়ে আছে। মুকুলের ভারে সুবজ পাতা আর দেখা যায় না। মুকুলের মিষ্টি গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিক। মৌমাছিরা উড়ে উড়ে বসছে ফুলে ফুলে। সে এক অসাধারণ দৃশ্য। এখানে শপিং করতে আসা ক্রেতারা অবাক হয়ে দেখছেন। কেউ কেউ ছবিও তুলছেন। 

ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা কাজী সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের বাসায় একটি বিশাল আম গাছ রয়েছে। গাছটিতে প্রতি বছর আম আসে। এবারও প্রচুর মুকুল এসেছে। মুকুলের ঘ্রাণে চারদিক মৌ মৌ করে সারাবেলা। ঘর থেকে সে সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। 

তিনি বলেন, আমাদের বারান্দা থেকে গাছের-ডালপালা সহজেই ধরা যায়। এতটা কাছে। আমাদের বাসায় বেড়াতে আসা অতিথিরা আমের মুকুল দেখে অবাক হয়ে যান। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্ন্ত কোকিলের কুহু কুহু ডাক আর মুকুলের সুগন্ধে দারুণ লাগে। 

নগরবাসী বলছেন ব্যস্ত এই নগরীতে এমন দৃশ্যের সচরাচর দেখা মিলে না। বসন্ত এসেছে সেই সঙ্গে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। এমন দৃশ্য দেখে প্রকৃতির রূপ যেন অন্যরকম এক প্রশান্তি জাগালো।

এ প্রসঙ্গে মগবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা শাহীন বেবি বলেন, আমার বেডরুমের বারান্দা থেকে দেখে যায় পাশের বাসার আম গাছটি। কী সুন্দর মুকুল এসেছে।  হালকা হলুদ থেকে গাঢ় হলুদের পরিণত হলো। পুরো প্রক্রিয়াটি আমি দেখলাম গত প্রায় একমাস ধরে। নগরজীবনে এটি একটি বিশাল প্রাপ্তি। ফুলগুলোর দিকে তাকালে মন ভালো হয়ে যায়।

তিনি বলেন, কোকিলের ডাক আর গাছে গাছে আমের মুকুল দেখে বুঝতে পারি বসন্ত এসে গেছে।

সরজমিনের ঘুরে দেখা গেছে, শুধু খিলগাঁও বা ধানমন্ডিই নয়, রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার, নয়াটোলা, মীরবাগ, সিদ্ধেশ্বরী, শান্তিনগর, কাররাইল, সেগুনবাগিচা, পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন, রমনা পার্ক,  আজিমপুর, পলাশী, ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ফুলার রোড, মোহাম্মদপুর, বসিলা, মিরপুর, উত্তরা, পুরান ঢাকাসহ নানা এলাকায় বেশ কিছু আম গাছ আছে। এবছর প্রায় সব গাছেই প্রচুর মুকুল এসেছে। তবে শেষ পর্যন্ত কতগুলো মুকুল আম হিসেবে টিকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। 

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রচুর মুকুল এলেও সময়মতো বৃষ্টি না হলে মুকুল ঝরে যাবে। এছাড়া ঝড়-বৃষ্টিতেও মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। তবে এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল ভালো ফুটছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো আমগাছে পরিচর্যা করলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজীনা হাসান বলেন, রাজধানীর গাছগুলো এবার প্রচুর আমের মুকুলে এসেছে। গাছগুলোর সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। তাহলেই ভালো ফলন পাওয়া যাবে। নিয়মিত গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে এবং প্রয়োজনে জৈব সার দেয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, আসলে প্রকৃত পরিচর্যার অভাবে ভালো আম পাওয়া যায় না। সাধারণ বাসাবাড়ির গাছগুলোর সেভাবে পরিচর্যা করা হয় না। এটা মালিকদের মনেও থাকে না। আর পথের গাছগুলোরও একই অবস্থা। এগুলোর আর একটি সমস্যা হয় আম সামান্য আকৃতি নিতেই ছেলেপেলেরা তা পেড়ে ফেলে।