ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১২:০৮:৫৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ: ৩০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:২১ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভয়াবহ পরিণতির প্রতি শঙ্কা প্রকাশ করে ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ এর পক্ষ থেকে ৩০ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার  ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’র পক্ষে 'আমরাই পারি' জোট এ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন 'আমরাই পারি' প্রোগ্রাম অফিসার মারজিয়া প্রভা।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সারাদেশব্যাপী যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সংঘটিত হলো, তাতে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ প্লাটফর্মের পক্ষ থেকে পরাজয়ের গ্লানি অনুভব করছি। এই সাম্প্রদায়িক আক্রমণ শুধু বিশেষ কোন জনগোষ্ঠীর উপরেই নয়, এই আক্রমণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের উপর। আমাদের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার হরণ করেছে এই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। দীর্ঘ কয়েক দশকের আন্দোলন, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলার জন্য যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আজ রাষ্ট্র পরিচালনা করলেও, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বৃদ্ধি আমাদের মনে উদ্বেগ জাগায়। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় এবং জীবনমান বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু লোপ পেয়েছে বহুত্ববাদী এবং সহিষ্ণু সমাজ তৈরির প্রত্যয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়,সম্প্রতি ন্যাক্কারজনক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, স্থানীয় প্রশাসনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালনে চরম গাফিলতি দেখিয়েছে। পাশাপাশি একদল স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বিভিন্ন মাধ্যমে সমাজে মানুষের মাঝে মৌলবাদ, অসহিষ্ণুতা এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার করে যাচ্ছে। আমরা রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার এবং সনাতন ধর্মালম্বী নাগরিকের নির্যাতনের বিষয়ে বারবার হুঁশিয়ার করে এসেছি। কিন্তু রাষ্ট্র অনেক ক্ষেত্রেই নীরব ভূমিকা পালন করেছে। আজ পর্যন্ত রাষ্ট্র বিগত কোন একটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতারও বিচার সম্পন্ন করেনি । শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক এই সহিংসতার ঘটনায় শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারনে একটি জনগোষ্ঠীর উপর এহেন নির্বিচার অত্যাচারেও, সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কোন সংবেদনশীল বক্তব্য দিতে দেখা যায় নাই। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, রাষ্ট্রের এহেন আচরণ এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই সকল সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে উৎসাহিত করে। এ দায় শুধু রাষ্ট্রের নয়, সমাজেরও।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের নিজেদেরও বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন, গত ৫০ বছর ধরে কেন আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়তে পারিনি? কেন একটি বিশেষ নাগরিকগোষ্ঠীর জীবন, সম্পদ ও মর্যাদা কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে একটি ভোট পাওয়া না পাওয়ার সমীকরণের বিষয় হয়েছে? কেন গোয়েন্দা সংস্থা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হামলার বিরুদ্ধে আগাম ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে? কেন পূর্বের সাম্প্রদায়িক সহিংসতাগুলোর বিচার হয়নি? কেন মুক্ত চিন্তার উপর দমন নিপীড়ন চালিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আরও জোরালো করা হচ্ছে?

কোন রাজনৈতিক দলেরই এই প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে দাবীদার দলের তো নয়-ই। তাদের আত্মসমীক্ষা জরুরী যে, মুল সংকটটা কোথায়। কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে পারছে না তার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করার কোন বিকল্প কিন্তু তাদের কাছে নাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা বলতে চাই, আর একটিও সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। আর একজন নাগরিকও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে যেন বিপন্ন বোধ না করেন। আর একটি স্থাপনাতেও যেন হামলা না হয়। এ সহিংসতা প্রতিরোধ করার বিষয়ে আশু পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা এক সময় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির কবলে যাবে। সেই ভয়াবহ পরিণাম থেকে বাংলাদেশের নাগরিককে বাঁচাতে এই মূহুর্তেই সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন

১.     ড. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

২.     সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী এবং চেয়ারপারসন, আমরাই পারি জোট

৩.     খুশী কবির, মানবাধিকারকর্মী এবং সমন্বয়কারী, নিজেরা করি

৪.     রোকেয়া কবীর, নির্বাহী পরিচালক, বিএনপিএস

৫.    জয়ন্তী রায়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

৬.     জিনাত আরা হক, নির্বাহী সমন্বয়কারী, আমরাই পারি জোট

৭.   হাবিবুর রহমান চৌধুরী, উন্নয়নকর্মী

৮.     সোহরাব উদ্দিন, সহ সভাপতি, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদ

৯.     আসিফ মুনীর, প্রজন্ম ৭১

১০.   শামসুল হুদা, মানবাধিকারকর্মী

১১.   জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ

১২.   এমবি আখতার, উন্নয়নকর্মী

১৩.   ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সম্পাদক, পরিবেশ বার্তা

১৪.   মাহমুদ সেলিম, উদীচী  

১৫.  মোতাহার আকন্দ, চেয়ারপারসন, রাইটস সেন্টার

১৬.   সালেহ আহমেদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন

১৭.   পারভেজ হাসেম, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন

১৮.   আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট

১৮.   কাজল দেবনাথ, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

২০.   মধুমিতা বড়ুয়া, সভাপদি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মহিলা ঐক্য পরিষদ

২১.   শ্যামলী মূখার্জি, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ

২২.   শাহনাজ সুমী, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ

২৩.  চন্দন লাহিড়ি, স্টেপস

২৪.   মাহাবুব বেগম হেনা, আমরাই পারি জোট

২৫.   সাজ্জাদ হোসেন, সংস্কৃতিকর্মী

২৬.   নাহিদ শামস, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন

২৭    তাহসিনা রুমা, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন

২৮.   কাজী আবদুর রহমান, শিক্ষক, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

২৯.   আশীষ কুমার মজুমদার, উপদেষ্টা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং সিনেট সদস্য, জাহাংগীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৩০.  আকবর উদ্দিন মিলন, ফরাসি ভাষা শিক্ষক, অলিয়েস ফ্রসেজ