ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৫০:০৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা নতুন করে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

রোকেয়া সদনের ৩৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:০৭ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রোকেয়া সদনের ৩৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল শাড়ী কুটিরের কর্ণধার মুনিরা ইমদাদ ও বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ  ডা. শাহীদা চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালে নারী-পুরুষ সবাই মিলে যুদ্ধ করেছি। তখন ধর্মের বা লিঙ্গের প্রশ্ন আসেনি। ১৯৭৫ এর পর মৌলবাদের আলোকে দেশ পরিচালিত হয়েছে। এখন মৌলবাদের অবস্থাকে প্রতিহত করে প্রতিরোধের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। নারী নির্যাতন সারা পৃথিবীতে প্রকট আকার ধারণ করছে মৌলবাদেও উত্থানের কারণে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি শিশুসদন পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি এসিডদগ্ধ নারীদের জন্য ফান্ড এবং ক্যান্সার, কিডনী, থ্যালামাইসিস রোগে আক্রান্ত নারীদের জন্য এককালীন ফান্ডের ব্যবস্থা আছে।’ তিনি এসময় রোকেয়া সদনের কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে সার্বিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  টাঙ্গাইল শাড়ী কুটিরের কর্ণধার মুনিরা ইমদাদ বলেন, ‘তাতী সম্প্রদায়ের মধ্যে মেয়েদের বাল্যবিয়ে দেয়ার প্রবণতা আছে।’ এটা আইন করে জোরালোভাবে প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি।

বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ  ডা. শাহীদা চৌধুরী বলেন, ‘সহিংসতার শিকার মেয়েদের মানসিক অবস্থাকে আমরা গুরুত্ব দেইনা। তাদের মনের মধ্যে থাকা কষ্টের জন্য সারাজীবনইভুগতে থাকে।’ এমন মনোভাব কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘কঠিন দিনগুলোতে রোকেয়া সদনের ভিত্তি শক্ত করতে সাহায্য করেছেন অনেক নারী। একেকটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার লক্ষ্য হয় ভিন্নধরণের। আশ্রয় কেন্দ্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নুতন কি পদ্দতি নেয়া যায় নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কি পদ্ধতি নেয়া তা আলোচনার জন্য আজকের সভা। আমাদের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, নারী নির্যাতন নির্মূল করতে হবে। ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্টর কথা বলা হচ্ছে। সহিংসতার শিকার নারী যারা আছেন তাদের পুনর্বাসন করতে হবে, সমাজের মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশে থাকা আশ্রয়কেন্দ্র যারা পরিচালনা করেন তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কোন সংঘবদ্ধ আইন করা হবে কিনা, নীতিমালা করা হবে কিনা এগুলি ভাবতে হবে।’ সহিংসতারশিকার  নারীদের সহায়তাদানের কাজকে সেবামূলক না দেখে তাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনাকারীদের উদ্দেশ্যে। এসময় প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য আলাদা আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বিপ্লবী কর্মকার, অর্পণা কর্মকার, শংকরি মিত্র এবং সাথী চক্রবর্তী। চিত্রে মহিলা পরিষদের রোকেয়া সদনের কর্মকান্ড  সম্পর্কে উপস্থাপন করেন আইটি অফিসার দোলন কৃষ্ণ শীল।

সদনের মেয়েদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন শান্তা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রোকেয়া সদন একটি আশ্রয়কেন্দ্র কিন্তু একটা মমতাময়ী মায়ের আচলের মত বেধে রেখেছে। যেখানে দৈনন্দিন জীবন যাপনের নিয়ম, লেখাপড়া শেখানো এবং কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য উপযোগী করে তুলতে সহায়তা করা হয়  আমাদের স্বাবলম্বী করতে।’

স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘রোকেয়া সদনের দীর্ঘ ৩৭ বছরের পথচলায় অনেক অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে এই সদন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবং নির্যাতিত, বঞ্চনার শিকার এবং সহিংসতার শিকার নারীদের নিরাপত্তা ও আশ্রয় দানের লক্ষ্য নিয়ে। সহিংসতার শিকার এসকল নারী ও কন্যাদের সমাজের মূলধারায় প্রতিষ্ঠার জন্য আইনগত সহায়তা দেয়া, শারীরীক মানসিক সহায়তা, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয় যা এখনো চলমান আছে। তিনি এসময় বলেন, বর্তমানে এমন আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও তা সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।’

সদন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন সহ-সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে রোকেয়া সদন সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয় ১৯৮৫ সনে। নির্যাতিত, সহিংসতার শিকার, পরিত্যক্ত নারীদের রোকেয়া সদনের মাধ্যমে নানামুখী সহায়তা দানের মাধ্যম তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে এই সদন। নারী নির্যাতন প্রতিরোধের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এটি। এরকম নিরাপদ বেষ্টনীর জাল আরো বিস্তৃত করতে হবে।’


অনুষ্ঠানে মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক ও কর্মকতাসহ জন প্রায় শতাধিক জন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রোকেয়া সদন সম্পাদক নাসরিন মনসুর।