ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৫:৪৬:১৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

রোজা শুরু: নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:৩০ এএম, ২৪ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

নিত্যপণ্যের বাড়তি দরের চাপ নিয়েই সাধারণ মানুষকে রোজা শুরু করতে হচ্ছে। চাল থেকে ডাল, আটা, ময়দা, তেল, চিনি, মাংস, সবজি, ফল—এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি। গত এক বছরের ব্যবধানে কোনো কোনো পণ্যের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আবার রসুন, শুকনা মরিচের মতো পণ্যের দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশের বেশি।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, করোনা মহামারির ধাক্কা না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। বিশ্ব বাজারেই এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। তবে এ কথা মানতে নারাজ ভোক্তারা। তাদের দাবি, সিন্ডিকেট করে একটি চক্র পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। তা না হলে দাম এত বাড়বে কেন?

বৃহস্পতিবার রোজার আগের দিন রাজধানীর শান্তিনগর বাজার, কাওরান বাজার ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নিত্যপণ্যের বাজার রীতিমতো চড়া। গত কিছুদিন ধরে যে পণ্যটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে। অথচ এক বছর আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা। গত বছর প্রতি হালি ফার্মের ডিমের দাম ছিল ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা। যা এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা হালিতে। গত বছর প্রতি কেজি গরুর মাংস ছিল ৬৫০ টাকা। যা গতকাল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। খাসির মাংস এক বছরের ব্যবধানে কেজিতে ২৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ১০০ টাকায় উঠে গেছে।

রোজায় সাধারণত যে পণ্যগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে এর মধ্যে রয়েছে চিনি, ডাল, আটা, ময়দা, তেল ও দুধ। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব পণ্যের প্রত্যেকটির দাম বেড়েছে লাগামহীনভাবে। প্রতি কেজি চিনির দাম গত বছর ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। সেই চিনি এবার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। বিভিন্ন ধরনের ডালের মধ্যে অ্যাংকর কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, ছোলা কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা। যা গত বছর এ সময় ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। প্যাকেট ময়দার কেজি গত বছর ছিল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। গত এক বছরের হিসেবে ভোজ্য তেলের দামটা তুলনামূলক কম বেড়েছে। তাও ১০ শতাংশের বেশি। গতকাল বাজারে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ৮৭০ থেকে ৮৮০ টাকা। যা গত বছর ছিল ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন গতকাল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত বছর এ সময় ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। রোজায় দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার তৈরির জন্য দুধের চাহিদা বাড়ে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্যাকেটজাত বিভিন্ন দুধের দামও। গত বছর বিভিন্ন প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধের কেজি ছিল ৫৮০ থেকে ৬৯০ টাকা। যা এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮৫০ টাকা।

নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়া-কমা নিয়ে বাজারদরের প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সেই প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত এক বছরের ব্যবধানে কোনো কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ থেকে ১১৬ দশমিক ২২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি প্যাকেট আটা ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্যাকেট ময়দা ৩৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, অ্যাংকর ডালের দাম ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ, সয়াবিন তেল ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ, ছোলা ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ, দেশি রসুন ১২০ শতাংশ, শুকনা মরিচ ১১৬ দশমিক ২২ শতাংশ, মানভেদে আদা ৮২ দশমিক ৬১ শতাংশ, জিরা ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগি ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ, চিনি ৫১ দশমিক ৬১ শতাংশ, ডিম ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ, খেজুরের দাম ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এসব পণ্যের অনেকগুলোই গত দুই তিন মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

এদিকে চিনি, ডাল, তেলের পাশাপাশি রোজা উপলক্ষে বাজারে সবজি, ফলের দাম আরও এক দফা বেড়েছে। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে প্রতি কেজি পটোল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টম্যাটো ৪০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। লেবুর দাম বেড়েছে লাগামহীনভাবে। প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

বেড়েছে মাছের দামও। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে প্রতি কেজি রুই ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাবদা ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সব ধরনের ফলের দামও বেড়েছে। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফলের মধ্যে ভালো মানের খেজুর প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা,  কমলা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, তরমুজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আপেল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, মালটা ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, আঙ্গুর ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও এসব ফল কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে।