ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৪:৩৬:৫৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

লিচুতে রঙিন কিশোরগঞ্জের মঙ্গলবাড়িয়া, চাহিদা দেশজুড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:১৫ পিএম, ১৬ মে ২০২১ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রসে টইটুম্বুর। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। আকারে বড় অথচ বীচি ছোট। ঠিক যেন রসগোল্লা। সিঁদুরে লাল এই লিচুতে রঙিন এখন মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম। এ লিচুর নাম মুখে আসলেই জিভে পানি এসে যায়। কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম মঙ্গলবাড়িয়ার নামেই লিচুর নাম হয়েছে ‘মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু’।

বৈশাখের শেষ দিকে পাকতে শুরু করে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু। বাজারে অনেক জাতের লিচু উঠলেও লোকজনের চোখ থাকে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর দিকে। রসালো, সুমিষ্ট, সুন্দর গন্ধ ও গাঢ় লাল রঙের বৈশিষ্ট্যের কারণে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর খ্যাতি দেশজুড়ে। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার এ লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।

এই সময়টাতে গ্রামে প্রবেশের মুখে চোখে পড়ে সারি সারি লিচু গাছে সিঁদুর রঙের থোকা থোকা লিচু। বাতাসের তালে, গাছের পাতার ফাঁকে দুলছে সিঁদুরে লাল লিচু।

প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনা, ঘরের পাশে এবং রাস্তার ধারে সারি সারি লিচু গাছ দেখেই বুঝা যায়, এটি মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম। গ্রামের প্রায় সবার বাড়িতেই রয়েছে ৮-১০টি বা তার চেয়েও বেশি লিচু গাছ।

এ লিচুর ফলন প্রচুর ও কদর বেশি থাকায় এর চাষ এলাকার মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। মঙ্গলবাড়িয়াসহ আশপাশের চার শতাধিক পরিবারে লিচু চাষই জীবন-জীবিকার অন্যতম উপায়। তারা বংশ পরম্পরায় লিচু চাষের সঙ্গে যুক্ত।

অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি লিচুর আবাদ করে এই গ্রামের মানুষ পেয়েছেন সচ্ছলতা, বদলে গেছে তাদের জীবন।

চাষীরা জানিয়েছেন, মৌসুম শুরুর আগেই অনেকে লিচুর জন্য আগাম টাকা দিয়ে রেখে যান। দেশ-বিদেশে থাকা এ গ্রামের আত্মীয়স্বজনেরাও লিচুর মৌসুমের জন্য মুখিয়ে থাকেন। লিচু পাকার সময়ে তারা ছুটে আসেন স্বজনদের বাড়িতে।

স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় দুইশ’ বছর ধরে এখানে লিচুর আবাদ হচ্ছে। কারো মতে, সুদূর চীন থেকে এই গ্রামেরই এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম এর বীজ নিয়ে আসেন।

তার গাছের লিচু খেয়ে গ্রামের কয়েকজন শখের বশে এ লিচুর আবাদ করেছিলেন। পরে কলম পদ্ধতিতে সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এ লিচুর আবাদ।

আবার কারো কারো মতে, গ্রামের মঙ্গল শাহ নামের এক ব্যক্তি ভারতের কোন এক স্থান থেকে লিচুর চারা এনে তার বাড়ির আঙিনায় রোপন করেন। সেখান থেকে অন্যান্য গ্রামবাসি গাছের শাখায় কলম করে লিচু চাষ সম্প্রসারণ করেন। এভাবেই ধীরে ধীরে এলাকায় লিচু চাষের প্রসার ঘটে।

সুমিষ্ট ও উৎকৃষ্ট জাতের কারণে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর কদর ক্রমেই বাড়ছে। দূর-দূরান্তের সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা ছুটছেন সেখানে।

গাছে ফুল আসার সাথে সাথেই বেপারি বা পাইকাররা লিচু বাগান কিনে নেন। আর লিচু পাকার পর তা চালান করে দেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু এখন দেশের বিভিন্ন শহর ও নগরে ছড়িয়ে পড়েছে। লিচুর মৌসুমে সৌখিন অনেকেই গাড়ি হাঁকিয়ে চলে আসেন মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে লাল টুকটুকে লিচু সংগ্রহ করতে।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে ৪০০-৫০০ চাষীর অন্তত ছয় থেকে সাত হাজার লিচুগাছ আছে। কোনো কোনো লিচুগাছ এক থেকে দেড়লাখ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর কদিন পরেই লিচু বিক্রির ধুম পড়বে বলে চাষিরা জানান।

-জেডসি