ঢাকা, বুধবার ২৪, এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৪:৫৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল কুড়িগ্রামে তাপদাহ: বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডে অপরিচিত দুজন

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:০৪ এএম, ৩ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডে অপরিচিত দুজন

সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডে অপরিচিত দুজন

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানিয়েছে, বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে অন্তত দুজন অপরিচিত পুরুষ জড়িত। হত্যাকাণ্ডের পর সংগৃহীত আলামত থেকে তাদের ডিএনএ পাওয়া গেলেও এখনো তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের আচরণ রহস্যজনক বলে মনে করেন র‌্যাব। গতকাল সোমবার হাইকোর্টে এফিডেভিট করে জমা দেওয়া র‌্যাবের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়।

র‌্যাবের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে দুজন অজ্ঞাত পুরুষ ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। তদন্তকালে ওই দুই অজ্ঞাত পুরুষ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে ব্যাপক তদন্ত করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী সাগরকে বাঁধার জন্য ব্যবহৃত চাদর এবং রুনির টি-শার্ট থেকে প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষণে প্রতীয়মান হয় হত্যাকাণ্ডে কমপক্ষে দুজন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিল। এ অপরিচিত অপরাধী শনাক্তকল্পে ডিএনএ প্রস্তুতকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাব যথাক্রমে ইন্ডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস এবং প্যারাবন স্ন্যাপশট ল্যাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বর্তমানে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি/অবয়ব প্রস্তুতের প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।

আসামি তানভীরের ব্যাপারে র‌্যাবের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, তানভীরের সঙ্গে রুনির পরিচয় ২০১০ সাল থেকে। ফেসবুকের মাধ্যমে শুরু এবং সামনাসামনি দেখা হয় ২০১১ সালে রুনি দেশে ফেরার পর। তানভীরের সঙ্গে রুনির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। প্রতিদিন বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে ফোনে আলাপ হতো। তারা প্রায়ই দেখা-সাক্ষাৎ করতেন।

মোবাইল কললিস্ট অনুযায়ী হত্যার দিন আনুমানিক সকাল ৭টা ২১ মিনিটে রুনির ফোন থেকে তানভীরের ফোনে কল যায়। যার স্থায়িত্ব ছিল ৮ সেকেন্ড। প্রতিদিন তানভীর ও রুনির মধ্যে একাধিকবার যোগাযোগ হলেও হত্যার দিন তানভীর রুনিকে একবারও ফোন করেননি। এমনকি রাতে হত্যার খবর জানার পরও তানভীর রুনি বা সাগরের বিষয়ে কোনো খোঁজখবর নেয়নি বা তাদের জানাজাসহ কোনো ধরনের ধর্মীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। স্বাভাবিকভাবে আসামি তানভীরের ঘটনার পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আচরণ খুবই রহস্যজনক।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ৭০ বারেরও বেশি সময় নিয়েছে তদন্তের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব ও পুলিশ।

এরই মধ্যে মামলার এক সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের মামলা বাতিল চেয়ে করা আবেদনের ওপর রায় প্রদানকালে গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্ট ৪ মার্চের আগেই র‌্যাবকে এ মামলার সর্বশেষ অবস্থা ও তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। তানভীরের মামলা বাতিল আবেদনের ওপর দেওয়া এক রায়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের এ আদেশ দেন।

সেদিন রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, ‘দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও তদন্তের মাধ্যমে এ মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়া এবং অপরাধীদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার এবং বিচারের সম্মুখীন না করতে পারা- নিঃসন্দেহে দুঃখ ও হত্যাশার বিষয়। প্রযুক্তিনির্ভর, এলিট ও চৌকস বাহিনী হিসেবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার, ভেজাল প্রতিরোধসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনন্য সফলতা কিছুটা হলেও ম্লান হবে, যদি এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন ও দোষীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করতে না পারে।’

এর পর আদালত তার রায়ে, সামগ্রিক ঘটনা ও আইনগত অবস্থা বিবেচনায় সাগর-রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত নিম্নআদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানকে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ৪ মার্চ বা তার পূর্বে এ মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা এবং অপরাধের সঙ্গে বর্তমান আসামি তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন হলফনামাসহ দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। সে অনুযায়ী গতকাল সোমবার র‌্যাবের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এফিডেভিট করে দাখিল করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলানগর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। পরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।