কোচ বাটলারকে নিয়ে সাবিনাদের যত অভিযোগ
স্পোর্টস ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১২:২৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে আজ সন্ধ্যা নামার ঠিক পরেই উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা। টানা দুইবারের সাফজয়ী ফুটবলারদের সঙ্গে ছিলেন অনেক নতুন ফুটবলারও।
সাংবাদিকের সামনে এসে হেড কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন সাবিনা-মাসুরারা। বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য সেই চিঠি হুবহু তুলে ধরা হলো।
“নারী জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ পিটার বাটলার ইস্যু নিয়ে আমাদের অবস্থান, প্রশ্ন এবং যত অভিযোগ
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা
সালাম নেবেন। একটা ক্রান্তিকালে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ জেনেছে কতটা প্রতিকূল পথ পাড়ি দিয়ে আমরা টানা দুইবার দেশের মানুষের জন্য সাফ শিরোপা এনে দিয়েছি। এই পর্যায়ে আসতে আমাদের কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে, এ সবকিছুই আপনাদের জানা। গত বছর অক্টোবরে নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকবার প্রমাণ দিয়েছি, আমরাই সেরা। সেই টুর্নামেন্ট চলাবস্থায় দলের কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে দলের খেলোয়াড়দের দূরত্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। ইচ্ছে মতো একাদশ গড়ে তিনি দলকে ডোবাতে চেয়েছিলেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে কোচের সিনিয়র ফুটবলারদের বাদ দেওয়া একাদশ যে ভুল ছিল, সেটা সবাই দেখেছে। কারণ ওই ম্যাচ আমরা হারতে হারতে কোনরকমে ড্র করেছিলাম। ভারতের বিপক্ষে আমাদের চাপে তিনি একাদশ বদলাতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সিনিয়র সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দল ভারতকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছিল। এটাই প্রমাণ করে আমরাই সঠিক ছিলাম। কিন্তু ওই ম্যাচে নামার আগেই জানতাম কোচের বিরুদ্ধে একরম বিদ্রোহ এই একাদশ তৈরি হয়েছিল। আমরা যদি ব্যর্থ হই, বাফুফে কর্তারা এবং দেশের মানুষের কাছে আমরা ভিলেন হয়ে যেতাম। ওই ম্যাচেই আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেত। এটা বুঝেও আমরা ঝুঁকি নিয়েছিলাম দেশের হয়ে লড়াই করার জন্য। দেশের জন্য আমাদের এই লড়াই ও আবেগ, ভালোবাসার মূল্য ফুটবল ফেডারেশন থেকে আশা করেছিলাম।
সেটা হয়নি। বরং সাফ থেকে ফেরার পর যা হলো, তার জন্য আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। এই বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্তে মেয়েদের দাবি-দাওয়াকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বাটলারকে কেন আমরা কোচ হিসেবে চাই না। সেটা জানাতেই আমাদের আজকের প্রয়াশ—
১. খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেপালে ঘটে যাওয়া এত এত ঘটনার পরও কোচ পারতেন বিষয়টি সেখানেই সমাধান করতে। সাফ জিতে আসার পর পরই তিনি পারতেন আমাদের সঙ্গে বসতে। সেটা না করে বরং আমাদের ইগনোর করেছেন প্রতিনিয়ত। সত্যি বলতে আমরা অবাক হয়েছিলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম যে, উনি কখন মিটিং ডাকবেন। কিন্তু ডাকেননি। বাংলাদেশে এসে বাফুফের এক ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমাদের ইস্যু নিয়ে কোচের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ওনাকে ওনার ব্যবহার আচার সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেন। আমাদের প্রশ্ন হলো, ওনাকে কেন সতর্ক করতে হবে, ওনার নিজের কি কোনো জ্ঞানবুদ্ধি নেই যে, ওনার কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়?
২. বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলে এই ঘটনা একেবারেই প্রথম। একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোচ ভুলে যান যে, তাঁর হাতে ৫টা পরিবর্তন আছে! সাফের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা যখন ১-০ গোলে হারার পথে, তখন হেড কোচ সানজিদাকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নামানোর সময় দেখেন খেলোয়াড় বদলের কাগজ তার কাছে নেই। আগে তিনটা পরিবর্তন করায় সঙ্গে থাকা তিনটি কাগজই শেষ হয়ে গেছে! তখন ম্যাচের ৯৫ মিনিট চলে। যেখানে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পিছিয়ে রয়েছে। তখনও বাংলাদেশের হাতে ২টা খেলোয়াড় পরিবর্তনের অপশন ছিল, কিন্তু কাগজ ছিল না। ব্যাপারটা খুবই লজ্জাজনক ও হাস্যকর। এত বড় ডিগ্রিধারী কোচের থেকে এটা আশা করা যায় না।
৩. ওই ম্যাচেই কৃষ্ণাকে নামানোর আগ মুহূর্তে এক সহকারী কোচ তার জার্সির নম্বর জিজ্ঞেস করলে আরেকজন টিমমেট বলে দেন। কৃষ্ণা তখনও সেভ গার্ড পড়ায় ব্যস্ত থাকায় দ্বিতীয়বার আবার জিজ্ঞেস করেন জার্সি নম্বর। আবারও অন্য টিমমেট বলে দেওয়ায় কোচ রেগে কৃষ্ণার দিকে তেড়ে আসেন। মামুলি জার্সি নম্বর না বলায় এরকম আচরণ কোনো কোচের পক্ষে সম্ভব কি না, আমাদের জানা নেই।
৪. কেবল মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও প্রতিনিয়ত কোচ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেন। দলের অভ্যন্তরে খেলোয়াড়দের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়রের কথা বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের পোশাক-আশাক নিয়ে কথা বলতে ছাড়েননি। বডিশেমিংও করেছেন। মেয়েদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন, বাজে মন্তব্যও করেন কোচ। আমাদের বিরুদ্ধে কোচ সবসময় শৃঙ্ক্ষলা ভঙ্গের অভিযোগ করেন। এটা যে ডাহা মিথ্যা কথা তার বড় প্রমাণ হলো, অতীতের কোনো কোচ মেয়েদের শৃঙ্খলা নিয়ে কখনো কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেননি। পিটারের এরকম উল্টাপাল্টা আরচণের বিষয়গুলো সহকারী কোচরাও জানেন। কিন্তু তারা চাকরি যাওয়ার ভয়ে মুখ খোলেন না।
৫. আমাদের সঙ্গে কোচ যা যা ঘটিয়েছেন, তা জানিয়ে আমরা বাফুফে সভাপতির কাছে গত বুধবার একটি চিঠি দিয়েছি। যে চিঠিতে আমরা লিখেছি, আমরা একটি জটিল বিষয় আপনার নজরে আনতে লিখছি। কোচ পিটারের আচরণ দলের মধ্যে মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যা একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে ক্যাম্পে। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত ছয় মাসে পিটারের কাছ থেকে আমাদের অনেক গালিগালাজ শুনতে হয়েছে। আমাদের মানসিক হয়রানি এবং উৎপীড়নের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন কোচ। তার কারণে ক্যাম্পে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। খেলোয়াড়রাও তাতে ভীষণ অসম্মানিত এবং হতাশার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। খেলোয়াড়রা, বিশেষ করে দলের সিনিয়র সদস্যরা ধারাবাহিক বৈষম্য এবং অন্যায় আচরণের শিকার হচ্ছেন। কোচের এসব আচরণ কেবল অবমাননা কর নয়, দলগতভাবে পারফরর্ম করার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করেছে। এটা মানতে হবে যে, কোচিংয়ে শুধুমাত্র কৌশল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকলেই হয় না বরং পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস এবং সমর্থনের পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষমতাও কোচের থাকতে হয়। দুর্ভাগ্য বশত, কোচ পিটারের নেতৃত্বে খেলোয়াড়রা বিচ্ছিন্ন এবং হতাশাগ্রস্ত বোধ করে, যা একটি বাজে সংস্কৃতি তৈরি করেছে।
৬. আমরা কোনো অবস্থাতেই দলে বিভাজন চাই না। তাই বিভাজন সৃষ্টি করা কোচকেও আমাদের প্রয়োজন নেই। কোচ পিটার দলের কিছু জুনিয়র ফুটবলারকে গুটি হিসেবে ব্যবহার করে দলের অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। কিছু মেয়েদের ব্যবহার করে মিথ্যাচারও করছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আমরা সিনিয়ররা নাকি জুনিয়র মেয়েদের চাপ দিচ্ছি, যাতে তার অধীনে অনুশীলনে অংশ না নেয়। আমরা পরিষ্কার জানাতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। ভালোমন্দের বিচার করার বয়স-জ্ঞান ক্যাম্পে থাকা প্রতিটি মেয়ের হয়েছে। সুতরাং সবাই নিজ নিজ সিদ্ধান্তেই তাদের অবস্থান বেছে নিয়েছে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমরা আশা করছি বাফুফের সভাপতি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা পিটারের অধীনে কোনো ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না। তারপরও যদি সেরকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং পিটার বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব। ভেবে নেব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। ”
এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ১৭ জন ফুটবলার। এখন দেখার তাদের দাবির মুখে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে কি না ফুটবল ফেডারেশন, নাকি অবসরের সিদ্ধান্তের পথেই হাঁটবেন সফাজয়ী নারী ফুটবলাররা।
- সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক মাসুমা মারা গেছেন
- ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হন? মানুন ৫ পরামর্শ
- হাসপাতালে শাকিরা
- চুল পড়া কমায় এই ৫ খাবার
- ইউএস-বাংলায় চাকরি, বেতন ৩০ হাজার
- ঢাকায় বায়ু আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’
- কোচিংয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রীকে অপহরণ,অতঃপর
- ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৯ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
- আজ গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- উত্তরায় দম্পতিকে কোপানোর ভিডিও ভাইরাল, আটক ২
- রাজধানীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্বামী-স্ত্রীর
- কানাডা বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উল্টে আহত ১৫
- ৭ দফায় কত বাড়ল স্বর্ণের দাম
- বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা
- বিটরুট চাষে কৃষক দম্পতির সাফল্যের সম্ভাবনা
- জুরিবোর্ডে ইলিয়াস কাঞ্চন ও বাঁধন
- ফেসবুকে কত ভিউ হলে কত টাকা আয় হয়?
- নারী ক্রিকেটে জ্যোতির ইতিহাস
- বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে গেল ভারত
- রাজধানীতে বুধবার যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ
- প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে স্মৃতি মান্ধানার কীর্তি
- নগরীর অভিজাত তারকা হোটেলে ক্রিসমাস
- সংসার পাততে সপরিবারে ভারত ছাড়ছেন কোহলি
- চলে গেলেন ভাষা সৈনিক মরিয়ম বেগম
- রুম হিটার ব্যবহারের আগে যা জানা জরুরি
- ১০০ পোশাক কারখানা বন্ধ, বেকার ৫০ হাজার শ্রমিক: বিজিএমইএ
- স্বামীসহ সাবেক এমপি হেনরীর বিরুদ্ধে মামলা
- ঢাকার বাতাস আজও খুবই অস্বাস্থ্যকর
- বলিউড বাদশাহকে নিয়ে এ কেমন মন্তব্য বিদ্যার!
- পেঁয়াজ ও আলুতে স্বস্তি মিললেও বেড়েছে চাল-মুরগির দাম