ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৮:৫০:০৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

ডিএসসিসিতে অচলাবস্থা, উপেক্ষিত নাগরিকসেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ২০ জুন ২০২৫ শুক্রবার

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি)।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি)।

জন্মনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমসহ সব ধরনের নাগরিকসেবাই গত ১৪ মে থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি)। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। কবে চালু হবে তাও বলতে পারছেন না কেউ।

‘নগর ভবন’ নামের ডিএসসিসি কার্যালয়েই চলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের মূল কার্যক্রম। নগর ভবন অবরুদ্ধ থাকায় ডিএসসিসির পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রমেও চলছে অচলাবস্থা।

তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, নতুন হোল্ডিং নম্বর ও হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়া, জন্মনিবন্ধন, রাস্তার বৈদ্যুতিক বাতি, রাস্তা, নর্দমা, ফুটপাথ, বাজার, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল, হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়, দক্ষিণের এলাকাধীন হাসপাতাল, কবরস্থান ও শ্মশানঘাট, শরীরচর্চা কেন্দ্র (ব্যায়ামাগার), সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র (কমিউনিটি সেন্টার), মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, রাস্তার গাড়ি পার্কিং, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, পাঠাগার, সংগীত এবং স্কুল, বাস টার্মিনাল, গণশৌচাগার, পার্ক ও উদ্যান, খেলার মাঠবিষয়ক সেবা দেওয়া হয়। আপাতত নগর ভবনকেন্দ্রিক সব সেবা বন্ধ রয়েছে।

এ অচলাবস্থার শুরু হয় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের শপথ না পড়ানোকে কেন্দ্র করে। তাকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকরা ১৪ মে থেকে নগর ভবনে অবস্থান নিয়ে টানা কর্মসূচি পালন করছেন। ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনেই নগর ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে নগর ভবনে সব ধরনের দাফতরিক কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কর্মকর্তারা অফিস করতে পারছেন না। সে জন্য সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। বাইরে থেকে যতটুকু সম্ভব সেবা দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমে অচলাবস্থা কাটাতে নিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। সেবা কার্যক্রম শুরু করলেও এক্ষেত্রে আন্দোলন থেকে সরে আসার কোনো ‘সুযোগ নেই’ মন্তব্য করে ইশরাক বলেছেন, নগর ভবনের ফটকে ‘তালা ঝুলবেই’। কারণ বিষয়টিকে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন তারা। 

মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় ৭০ জন ওয়ার্ড সচিবের সঙ্গে নগর ভবনে বৈঠক করেছেন ইশরাক হোসেন। এই সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১০ প্রশাসনিক অঞ্চলের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। সভায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপিপন্থি সাবেক কাউন্সিলর ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের ‘নির্দেশনা’ দিয়েছেন ইশরাক। 

এ ছাড়া কাউন্সিলরদের কার্যালয় থেকে নাগরিকরা যেসব সেবা পেতেন, সেসব সেবা এ কমিটির মাধ্যমে দিতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ডের সচিবদের নিয়মিত অফিস করার পাশাপাশি নাগরিকসেবা তথা জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনদসহ অন্যান্য সেবা দেওয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবারও নগরভবনে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে ইশরাকপন্থিরা। তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমার ভুলি নাই’- এমন স্লোগান দেন।

জন্মনিবন্ধন সনদসহ দৈনন্দিন জরুরি সব সেবা চালু থাকার ঘোষণা দিয়ে ইশরাক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবে না। প্রধান ফটকের তালা খোলা হবে না, এটি আন্দোলনের একটা প্রতীক। জনগণের দৈনন্দিন সেবা, আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, এদিনও কার্যত অচল রয়েছে নগর ভবন। কয়েকজন সেবাপ্রত্যাশী ও কর্মকর্তা এলেও কিছুক্ষণ থেকে হতাশ হয়ে ফিরে যান তারা।

নগর ভবন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন নগর ভবনে বিভিন্ন প্রয়োজনে ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষ সেবা নিতে আসেন। নগর ভবন অবরুদ্ধ থাকায় চলমান রাস্তাঘাটের উন্নয়নকাজ তদারক করা যাচ্ছে না। মশককর্মীদের ওষুধ সরবরাহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করতে না পারায় রাজস্ব বঞ্চিত হতে হচ্ছে। নগর ভবনে থাকা দুটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের নতুন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন, জন্মমৃত্যু, ওয়ারিশ সনদসহ সব কাজই বন্ধ। আমাদের অফিসাররা ওয়াসা অফিসে বসে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে নাগরিকসেবা বাধাগ্রস্ত না হয়।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, শপথ না নিয়ে আইনকানুন ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইশরাক হোসেন যেভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন, এটি বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এই বিভাগের জনপ্রিয়