ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ৮:২৪:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পূর্বাচল ৩০০ ফিটে নেতাকর্মীদের ঢল মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত পোস্টাল ভোটে নিবন্ধনের সময় বাড়লো হাদি হত্যায় মোটরসাইকেল চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে নিষিদ্ধ করল সরকার

হাতিরঝিলে দেখা মিললো মানব কুকুর!

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫৭ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর হাতিরঝিলে দেখা গেল মানব কুকুর! হিউম্যান ডগ সেজে হাতিরঝিলের রাস্তায় হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটেছেন টুটুল চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। আর তার গলায় পরানো রশি হাতে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেঁজুতি নামের এক তরুণী।

এমনই এক অদ্ভুতকাণ্ড দেখে অবাক, তাজ্জব বনে যান পথচারীরা। একইসঙ্গে সেই দৃশ্যের কিছু ছবি ও ভিডিওও ধারন করেন কৌতূহলদ্দীপক দর্শক। এমনকি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

এই দুই নর-নারী কেন এমন অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা করলেন- এই প্রশ্ন সবার চোখে-মুখে। সবাই জানতে চায় কেন, কি উদ্দেশ্যে তারা এমনটা করলেন। এর পিছনের কারণটা কি? এটা করার মধ্যদিয়ে তারা আসলে কি বোঝাতে চাইলেন…?

এই সব প্রশ্নের উত্তর জানার আগে জানা গেছে, হিউম্যান ডগ-এর ধারণাটি বাংলাদেশে এটাই প্রথম। এটি একটি ‘পারফর্মিং আর্ট’। পশ্চিমা ধারণার এই পারফর্মিং আর্ট প্রথম দেখা যায় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়। প্রকাশ্য রাস্তায় ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভ্যালি এক্সপোর্ট ও পিটার উইবেল এই পারফর্মিং আর্টে অংশ নেন।

কিন্তু ঢাকার অন্যতম জনাকীর্ণ ও রাজধানীর অবকাশযাপন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম হাতিরঝিলের রাস্তায় কেন, কি উদ্দেশ্যে পশ্চিমা এই ধারণাটি প্রদর্শিত হল, তার জবাব দিয়েছেন বিরল দৃশ্যটির নায়িকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী সেঁজুতি।

তিনি এটাকে ‘সমাজতাত্ত্বিক’ ও ‘আচরণমূলক’ কেসস্ট্যাডি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এই পারফর্মিং আর্টের উদ্দেশ্য, কার্টুনে যেমন বিভিন্ন প্রাণীকে মানুষের মতো কথা বলা ও আচরণগতভাবে দেখানো হয়, তেমনি এখানে মানুষকে প্রাণী চরিত্রে দেখানো হয়েছে।

লেখক ক্লদিয়া স্লানারের লেখাকে উদ্ধৃত করে সেঁজুতি বলেন, এই ছবিতে একজন নারী একজন পুরুষকে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা আরো ভালো কোনও সামাজিক অবস্থার চিত্র দেখায় না।

বরং সমাজ আমাদের ওপর যে সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে সেটাই ফুটে উঠেছে। আমরা যে কাজটা করেছি এই কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং এই কাজটাকে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিয়েছে সেটাই আমরা দেখতে চেয়েছি।

সেঁজুতি এই পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, রোগ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগে, কিন্তু তার আগে রোগটা নির্ণয় করতে হয়। এখন পরিচিত রোগের সঙ্গে তো সবাই পরিচিত। কিন্তু অপরিচিত/অজানা রোগ হলে কীভাবে বুঝব? এখন আমি অসুস্থ হলে সেটা আগে কাকে কষ্ট দেয়! আমার পরিবারকে।

আর আমরা অসুস্থ হলে কাকে কষ্ট দেয়!! সমাজকে। তাই সমাজকে সুস্থ করতে হলে আগে আমাদের সুস্থ থাকতে হবে তাই না? তাই আমরা সুস্থ আছি কি না, সেটা পরীক্ষা করলাম। কাটা দিয়ে কাটা তোলা বুঝে সবাই, কিন্তু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস কেউ মন দিয়ে করে না।

সেঁজুতি তার এই পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পারফর্মিং আর্টের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেতিবাচকভাবে। সেখানে বলা হচ্ছে, হাতিরঝিলে দেখা গেল মানব কুকুর কিংবা আমাদের সমাজে ঢুকে গেল পশ্চিমা নিম্ন প্রকৃতির সংস্কৃতি, ইত্যাদি ইত্যাদি।

অনেকে বলেছেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে ‘Taboo’ অনুষ্ঠান দেখলে হিউম্যান ডগ সম্পর্কে অনেকটা ক্লিয়ার হওয়া যাবে। সেখানকার একটি এপিসোডে ‘হিউম্যান ডগ’ নিয়ে একটি ডকুমেন্টরি আছে, ইউটিউবে পাওয়া যায়।

এটি আধুনিক দুনিয়ায় পুরাতন ক্রীতদাস প্রথাও বলা যায়। ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে এসব দেখা যায়। আপনি মানুষ কিনে তাকে দিয়ে যা ইচ্ছে, তা-ই করাতে পারেন। আধুনিক সভ্যতায় এটাকে ‘সাইকো অসভ্যতা’ও বলা যেতে পারে।

-জেডসি