ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ০:৩৩:৪৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কমল স্বর্ণের দাম মক্কা ও মদিনায় তুমুল বৃষ্টির শঙ্কা খালেদার গ্যাটকো মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পেছাল কুড়িগ্রামে তাপদাহ: বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

অতিরিক্ত দামেও মিলছে না চিনি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫৯ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির দৌড়ে নাজেহাল ভোক্তা।  নতুন করে এই দৌড়ে যুক্ত হয়েছে চিনি। দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজারে দেখা দিয়েছে চিনির সংকট। অধিকাংশ দোকানেই মিলছে না চিনি। পাওয়া গেলেও মিলছে বাড়তি দামে। এজন্য দোকানিরা দায়ি করছেন ডিলারদের, আর ডিলাররা দুষছেন কোম্পানিকে।

বৃহস্পতিবার আরও এক দফা বড়লো চিনির দাম। এদিন কেজি প্রতি ৫ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এতে প্যাকেটজাত চিনির দাম হয়েছে কেজি প্রতি ১১২ টাকা আর খোলা চিনি ১০৭ টাকা। যা পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। কিন্তু কার্যকর হওয়ার আগেই কারওয়ান বাজারের অধিকাংশ দোকানে মিললোনা চিনি।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানিরা খোলা চিনি কেজি প্রতি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা বিক্রি করছেন। দোকানিরা জানিয়েছেন, প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ চাহিদা ও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম। ফলে চিনির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক দোকানদার বলেন, ‍‍`সরকার খুচরা চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমাদের কেনা দাম এর থেকেও বেশি। আর বেশি দামে বিক্রি করলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে জরিমানা করা হচ্ছে। এ কারণে কেউ চিনি বিক্রি করছে না।‍‍`

আরেক দোকানদার বলেন, ‍‍`আমার কেনা পড়ে প্রতি কেজি ১১০ টাকারও বেশি। আমি তো আর ১০৭ টাকায় বিক্রি করতে পারব না। তাই চিনি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।‍‍` ‍‍`আমরা পাইকারি বাজার থেকেও চিনি পাচ্ছি না। তারা বলছে বাজারে চিনির সরবরাহ কম। ভোক্তা অধিকারের জরিমানার ভয়ে অনেকই চিনি বিক্রি করছে না‍‍`, বলেন তিনি।

আরেক বিক্রেতা জানায়, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলেই বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। আমাদের কিছু করার নেই। আমরা খোলা চিনি পাইনা। পেলেও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। এর চেয়ে কমে বিক্রি করতে গেলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

 একজন ক্রেতা বলেন, কোনো কিছুর দামই তো কমে না। এখন আবার চিনির দামটাও বাড়ল। আমাদের কথা কেউ ভাবে না। বাসা ভাড়া, সন্তানদের পড়ালেখার খরচের পর বাজারে যখন আসি তখন খুব অসহায় মনে হয়।

 চিনি সরবরাহ এখনো স্বাভাবিক হয়নি দাবি করে কারওয়ান বাজারের চিনির ডিলারা বলেন, ‘মোকাম কিংবা মিল কোথাও চিনি পাওয়া যায় না। অগ্রিম টাকা নিলেও চাহিদামতো চিনি দিতে পারে না। দৈনিক ১০০ বস্তা চিনির পরিবর্তে ৪০-৫০ বস্তা চিনি দিচ্ছে।’ রমজানের চিনির জন্য আরও হাহাকার চলবে বলেও এ ব্যবসায়ী আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

 জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপের ম্যানেজার সিরাজুন্নবী বলেন, ‘শিগগিরই বাজারে চিনির সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে। আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে বাজারে প্যাকেটজাত চিনি সরবরাহ করছি। রমজান আসার আগেই চাহিদা অনুযায়ী ভোক্তারা নির্ধারিত মূল্যে চিনি কিনতে পারবে বলে আশা করা যায়।’

 পাকেটের গায়ের মূল্যের চেয়ে দাম বেশি নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোম্পানির পক্ষ থেকে দাম সমন্বয় করেই বিক্রি করছি, যেন সরকার নির্ধারিত মূল্যে সাধারণ ভোক্তারা চিনি ক্রয় করতে পারেন। তবে আমাদের অনুপস্থিতিতে বাজারভেদে ব্যবসায়ীরা চিনির দাম বেশি নিয়ে থাকতে পারেন।’

 বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তারা বলছে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে অধিদপ্তর সবসময় মাঠে কাজ করছে। আসন্ন রমজানকে ঘিরে রোজাদারদের চাহিদার শীর্ষে থাকা সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

 অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘চিনি পরিশোধনকারী মিলগুলোতে অধিদপ্তরের নজরদারি রয়েছে। মিল থেকে বাজারে আসা পর্যন্ত কোনো চক্র চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে কি না তা জানা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য আমরা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা চেয়েছি। যাতে করে চিনি সংকটের পেছনে কেউ থাকলে তাদের আইনের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারি।’

এর আগে, গত বছর সেপ্টেম্বরে হঠাৎ করে দেশের চিনির বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। চিনির সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে ব্যবসায়ীরা খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম বাড়িয়েছে কেজিতে ৬ টাকা। খোলা চিনি হয় ৮৪ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনির কেজি হয় ৮৯ টাকা।

 
খোলা চিনির দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয় আর প্যাকেটজাত চিনির দাম করা হয় ১০৭ টাকা। আর এবার খোলা চিনির দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।