ঢাকা, বুধবার ২৪, এপ্রিল ২০২৪ ৩:৫৯:৩৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা নতুন করে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

করোনাভাইরাস সম্পর্কে শিশুকে বোঝাবেন যেভাবে

বিবিসি বাংলা | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:১৪ পিএম, ১৪ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস যেমন ছড়িয়ে পড়ছে, তেমনি ছড়িয়েছে বিভিন্ন ধরনের খবর। মানুষজনের উদ্বেগও দিনকে দিন বাড়ছে। এরমধ্যে শিশুরাও রয়েছে যারা সাধারণত বাবা-মায়ের কাছেই কোনো কিছু বুঝতে চায়।

কিন্তু শিশুকে কীভাবে বোঝাবেন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে? তার মনে ভয় কীভাবে দূর করবেন?

আশ্বস্ত করুন

ডা. পুনম কৃষ্ণা যুক্তরাজ্যের একজন চিকিৎসক। যার নিজের ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি হলো উদ্বেগ কমানো। তাকে বুঝিয়ে বলা যে তোমার যখন ঠাণ্ডা লাগে, পেট খারাপ হয়, বমি হয় এই ভাইরাসটি সেরকম।’

তিনি বলেন, ‘অভিভাবকদের উচিৎ শিশুদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলাপ করা। নতুবা সে স্কুলে বা বন্ধুদের কাছ থেকে ভুল তথ্য পাবে। তার কাছ পর্যন্ত পৌঁছানো গণমাধ্যমের খবর হয়ত সে সঠিকভাবে বুঝবে না। আর এতে তারই ক্ষতি ‘

‘সরাসরি ও সত্যি কথা বলা, আমি আমার ছেলের সাথে সেটাই করছি। আমার কাছে যারা আসছেন আমি সেসব অভিভাবকদের সেটাই করতে উৎসাহিত করছি’, বলেন ডা. কৃষ্ণা।
শিশুদের মনোবিজ্ঞানী ডা. রিচার্ড উলফসন মনে করেন শিশুদের বয়সের ওপর নির্ভর করবে তার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে। তিনি বলেন, ‘ছয়, সাত বছর বয়সী বা তাদের নিচে যাদের বয়স তাদের ক্ষেত্রে সম্ভাবনা হলো তারা যা শুনবে তাতেই বিচলিত হবে। কারণ তাদের বাবা-মায়েরা তাদের আশ-পাশেই বিষয়টি নিয়ে আলাপ করছে।’

তিনি বলেন, ‘এটা তাদের জন্য ভীতিকর হতে পারে। প্রথমত ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে তাদেরকে আশ্বস্ত করুন। আপনি হয়ত জানেন না কী হতে যাচ্ছে, কিন্তু তাদের বলুন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’

বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা নেওয়া

ডা. উলফসন স্বীকার করছেন যে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারে না যে তার শিশু এতে আক্রান্ত হবে কিনা। কিন্তু অকারণে ঝুঁকি সম্পর্কে দুঃশ্চিন্তা না করে আশাবাদী থাকাই ভালো। তিনি বলছেন, ‘শুধু আশ্বস্ত করা নয়, রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে তাদের ক্ষমতা বাড়ানো দরকার।’

‘তাদের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। যাতে করে তারা নিজেদের আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে এবং একই সঙ্গে এমন অনুভব করে যে এর মাধ্যমে সে নিরাপদ এবং বিষয়টি তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’, বলেন তিনি।

ডা. উলফসন বলেন, ‘আমাদের উচিৎ স্বাস্থ্য ভালো রাখার কিছু উপায় আছে যা তুমি করতে পারো। যেমন নিয়মিত হাত ধোয়ার বিষয়টা। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে শুধু এটা বলে বসে না থেকে তারা নিজেরা করতে পারে এমন কিছু তাদের করতে দেওয়া ভালো।’

তার সঙ্গে একমত পোষণ করে ডা. কৃষ্ণা বলছেন, ‘নিজেকে রক্ষা করার প্রতিরোধী কাজগুলো যেমন শিশুর সঙ্গে হাত ধোয়ার মতো বিষয়টি নিয়ে গল্প করা।’

শিশুকে আস্বস্ত করা এবং একই সঙ্গে কিছু বাস্তবসম্মত প্রতিরোধমূলক কৌশল শেখানোই হবে অভিভাবকদের জন্য সবচাইতে ভালো পরামর্শ। শিশুরা অন্যমনস্ক হতে পারে, খেলায় ব্যস্ত হয়ে যেতে পারে বা তার মনোযোগ কম হতে পারে তাই তাকে মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

তবে পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে শিশুদের মনে করিয়ে দেওয়ার বিষয়টি শুধু উদ্বেগ প্রশমনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ছোট শিশুরা খুব কৌতূহলী হয়। তারা সবকিছু ছুঁয়ে দেখে। স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে খাবার ও পানীয় আদানপ্রদান করে।

ডা. কৃষ্ণা বলেন, ‘সাধারণত এটি রোগ জীবাণু ছড়ানোর অন্যতম কারণ। তাদেরকে পরিচ্ছন্নতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেওয়া মানে চারপাশের মানুষজনকেও নিরাপদে থাকতে সাহায্য করা।’

ভুয়া খবর থেকে সতর্ক থাকতে হবে

শিশুদের উদ্বেগের অন্যতম উৎস হতে পারে তাদের অভিভাবকরাই। ডা. কৃষ্ণা বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত ছোটরা যদি দেখে তাদের বাবা-মায়েরা নিজেরা উদ্বিগ্ন, তারা তাদের নানা ধরনের আলাপচারিতা শোনে এবং সেখান থেকে নিজেদের তথ্য সংগ্রহ করে।’

তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়েরা শিশুদের আশপাশে কেমন আচরণ করবেন সে বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিৎ। কিন্তু তারা স্কুলে কী শুনছে সেটির ওপরে নিয়ন্ত্রণ রাখা খুব কঠিন।’
ডা. উলফসন বলেন, ‘আমার তিনজন নাতি রয়েছে। তাদের বয়স ১২, ১০ ও ৮ বছর। তারা প্রত্যেকে এসে আমাকে বলেছে, আমি শুনেছি আমাদের স্কুলে একজন এসেছে যে অন্য কোথাও গিয়েছিল। তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে কারণ ওদের ওটা হয়েছে।’

‘এর অর্থ হচ্ছে কত দ্রুত গল্প ছড়ায়। সত্যি কথা বলা শেখানো খুব জরুরি’, বলেন তিনি।

কিশোর বয়সীদের যেভাবে বোঝাতে পারেন

এই বয়সীদের জন্য বিষয়টা বেশ অন্যরকম। তারা খবরের জন্য অভিভাবকদের ওপর কম নির্ভরশীল। তারা বন্ধুদের কাছ থেকে বেশি খবর পায়। তথ্য আদান প্রদানে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা আছে।

ডা. উলফসন বলেন, ‘তথ্যের বিষয়ে তারা তাদের বন্ধুদের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। সমস্যা হলো কিশোর বয়সী কাউকে এটা বলে আস্বস্ত করা যাবে না যে সবকিছু ঠিক হয় যাবে।’
‘এই বয়সীরা অভিভাবকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তর্ক করতে পারে। তারা বাবা-মা বললেই সবকিছু মেনে নেবে না’, বলেন ডা. উলফসন।

তবে তার মতে বয়স যতই হোক না কেন শিশুরা যাতে পরিবারে সবকিছু আলাপ করতে পারে সে রকম পরিবেশ তৈরি করাই শ্রেয়।