ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৭:৪১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

কুবি ছাত্রী সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা : আসামির স্বীকারোক্তি

কুমিল্লা প্রতিনিধি | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে (২৩) ‘ধর্ষণের পর হত্যা’ করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামি কবিরাজ মো. মোবারক হোসেন। এবং তা দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় সুমাইয়ার তাহমিনা বেগম ফাতেমাকে (৫২)।

মোবারকের দেওয়া জবানবন্দির রেকর্ডপত্র হাতে পেয়ে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কবিরাজ মোবারক হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে ওসি আরও জানান, মোবারক হোসেন সুমাইয়াকে হত্যার আগে ধর্ষণ করেছিলেন। মূলত মোবারক ঝাড়ফুঁক করে সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে বশে এনে প্রথমে তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি দেখে ফেলেন সুমাইয়ার মা তাহমিনা বেগম ফাতেমা। তাই প্রথমে তিনি সুমাইয়ার মাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়ার কাছে আবারও যান মোবারক। তখন সুমাইয়া বাঁধা দিলে তাকে তিনি গলাটিপে হত্যা করেন। ঘাতক মোবারক আদালতে মা-মেয়েকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।

ওসি জানান, ধর্ষণের বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া কাপড়-চোপড়, বিছানা-চাদরসহ যাবতীয় বিষয় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর আরও ভালোভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে। গ্রেপ্তারের পর মোবারক দুই জনকে (মা-মেয়ে) হত্যার দায় স্বীকার করে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লার ১ নম্বর আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন এসে পৌঁছালেই পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে বলে জানিয়েছে।

পুলিশ বলছে, সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যার ঘটনায় ঝাড়ফুঁক করতে আসা কবিরাজ মোবারক হোসেন একমাত্র আসামি, এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত নয় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মা-মেয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ঝাড়ফুঁক কবিরাজ মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের ২৪ জুন কুমিল্লা শহরতলীর ধর্মপুর পশ্চিম চৌমুহনীর হজরত খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টা করে মোবারক। ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে সে সময় ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যাচেষ্টা করেন। ওই সময় ওই কক্ষে তার কাছ থেকে পানিপড়া নিতে এক নারী এলে সে সুযোগে দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পায় ওই শিক্ষার্থী। 
ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মোবারক হোসেন নিজেই। ওই ঘটনায় আদালতে মামলা হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়। তখন গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যায় মোবারক। কিছুদিন আগে দেশে ফিরে ‘জ্বিন তাড়ানো’সহ নানা কবিরাজির নামে আবারও শুরু করেন পুরোনো কুকর্ম।

মোবারকের বাড়ি জেলার দেবীদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামে। ওই গ্রামের কয়েকজন জানান, নুরানি পর্যন্ত গ্রামের একটি মাদ্রাসায় পড়েছে মোবারক। এরপর কুমিল্লা শহরের বদরপুর মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। এখানেই কবিরাজি আয়ত্ত করেন। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন না। বদরপুর মাদ্রাসায় পড়াকালে ইলিয়াস হুজুরের খাদেম হন।

মোবারকের বড় ভাই মো. সুজন মিয়া জানান, তার ভাই শহরে যাওয়ার পর বিপথগামী হয়েছেন। এর বেশি কিছু জানেন না।

উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরী এলাকায় নিজ ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া ও তার মা তাহমিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই দিন রাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে পুলিশ মোবারক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।