ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ৫:৫৩:০৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা নান্দাইলে নারী শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় সুচি কৃষকরাই অর্থনীতির মূল শক্তি: স্পিকার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

গোটা গ্রামের জীবনধারাই পাল্টে দিয়েছেন এই দম্পতি

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:১৬ পিএম, ৭ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার

শক্তি লুম্বা ও ইলা লুম্বা।  ছবি : সংগৃহীত

শক্তি লুম্বা ও ইলা লুম্বা। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের হরিয়ানার ‘মাঙ্গার’ একটি সবুজ-শ্যামল গ্রাম। রাজধানী দিল্লির কাছেই এই গ্রামের অবস্থান। এক দম্পতির গড়ে তোলা ফার্মল্যান্ড বদলে দিয়েছে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা।

শক্তি লুম্বা ও ইলা লুম্বা। অনেক দিন ধরেই তারা গুরুগ্রামের কাছে জমি কেনার কথা ভাবছিলেন। সে জমিতে চাষ করার ইচ্ছাটাও ছিল বহু দিনের।

কিন্তু সেখানে না কিনে তারা অজ পাড়া গাঁ মাঙ্গারে নয় একর জমি কেনেন। সেখানে জমি কেনার সময় জলাশয় ও ফাঁকা মাঠ ছাড়া কিছুই ছিল না। চাষ আবাদও হতো না সেখানে।

জমি কিনে সেখানে গাছ লাগাতে শুরু করেন এই দম্পতি। আস্তে আস্তে চাষও শুরু হয়। যদিও চাষে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতেন না তারা। সকালে এসে চাষের কাজ দেখভাল করে রাতে দিল্লিতে নিজেদের বাড়ি ফিরে যেতেন দু’জনে।

চাষের জন্য প্রয়োজনীয় গোবর তারা আনতেন দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকা থেকে। সেখান থেকে গোবর আনাতে খরচও বেশ হচ্ছিল। তাই তারা ফার্মল্যান্ডের মধ্যেই খাটাল তৈরি করেন। তার পর সেই গবাদি পশুর গোবর চাষের কাজে ব্যবহৃত হতে থাকে। এই ভাবেই স্বনির্ভরতার দিকে এগোতে থাকে লুম্বা দম্পতির ফার্ম।

সেই ফার্মের কাজ বাড়তেই স্থানীয় মানুষরা অংশগ্রহণ করতে থাকেন। লুম্বা দম্পতি দেখলেন, গ্রামের মানুষ যখন ফার্মে কাজ করছেন, তখন তাদের বাচ্চারা ফার্মের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তখনই এই শিশুদের পড়াশোনার করানোর কথা মাথায় আসে তাদের। সে জন্য ফার্মের মধ্যেই স্কুল খোলেন ওই দম্পতি।

মাত্র চারজন নিয়ে শুরু হয় স্কুল। প্রথম দিকে সেখানকার স্থানীয়রা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চাইতেন না। অনেক বুঝিয়ে তাদের সে ব্যাপারে রাজি করান ওই দম্পতি। এক বছরের মধ্যেই সেই স্কুলে ছাত্র সংখ্যা বেড়ে হয় ১৫০। কিন্তু এর মধ্যে কম বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি ওই দম্পতিকে।

স্থানীয় কিছু স্কুলও ছাত্রদের আসতে বাধা দিয়েছে। ছাত্রদের খাবার দেওয়ার বিষয়ে আপত্তিও ওঠে একাংশের কাছ থেকে। তাদের দাবি ছিল, খাবারের লোভ দেখিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু সব বাধা শান্তভাবে সামাল দেন লুম্বা দম্পতি।

ফার্মল্যান্ডে খোলা স্কুলে শুধু পড়ানো নয়, স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতার মতো মৌলিক বিষয়গুলির পাঠও দেওয়া হয়। লুম্বা দম্পতির এই উদ্যোগ দেখে তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বন্ধু ও পরিচিতরা। আস্তে আস্তে স্কুলে ছাত্র সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

তবে শুধু স্কুল না। স্কুলের পাশাপাশি এলাকার নারীদের স্বনির্ভরতার পাঠও দিতে থাকেন তারা। নারীরা হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেদের বাড়িতে বসেই বিভিন্ন জিনিস বানাতে থাকেন। তাদের লোকের বাড়িতে কাজ পাওয়ার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না।

এ ভাবেই নয় একরের ওই ফার্মল্যান্ড মাঙ্গার এলাকার বাসিন্দাদের জীবন অন্য ধারায় বইয়েছে। এখন এই গ্রামের মানুষ অনেকটাই স্বনির্ভর। চাষ করার ইচ্ছা থেকে গোটা গ্রামের জীবনধারাই পাল্টে দিয়েছেন লুম্বা দম্পতি।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা