ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ৭:১৮:২২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে

চার বছরে ১১ কিশোরীকে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৪৬ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার

ধর্ষক নওরোজ হিরা সিকদার

ধর্ষক নওরোজ হিরা সিকদার

ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত চার বছরে ১১ কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে নওরোজ হিরা সিকদার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। এই ক্ষমতা ব্যবহার করেই চার বছর ধরে তিনি কিশোরীদেকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার রাতে হিরাসহ দুজনকে আসামিকে বাকেরগঞ্জ থানায় মামলা করেছে নির্যাতনের শিকার এক কিশোরী। আর ১১ জনের পক্ষে আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন শেখ ইমরান হোসেন নামের স্থানীয় আরেক ব্যক্তি।

অভিযুক্ত নওরোজ হিরা সিকদার বর্তমানে পলাতক। তিনি উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৯ অক্টোবর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর গ্রামের সিকদার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় হিরা সিকদারকে মারধর করা হয়। এ সময় হিরার পকেট থেকে তার মোবাইল ফোনটি পড়ে যায়। পরবর্তীতে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি মোবাইলটি পেয়ে তার ভেতর বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে হিরার অশ্লীল ভিডিও দেখতে পান। তার মধ্যে তার মেয়ের ছবিও রয়েছে। এরপর এক এক করে গ্রামের বেশিরভাগ ব্যক্তির মোবাইলে ওইসব ভিডিও চলে যায়। এসব ভিডিওচিত্র দেখিয়ে সে ওই কিশোরীদের একাধিকবার ধর্ষণ করে আসছিল।

এদিকে, ১১ ভুক্তভোগীর পক্ষে থানায় অভিযোগ দেওয়া শেখ ইমরান হোসেন জানান, হিরা সিকদার বিভিন্ন সময় গ্রামের মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসছে। এর মধ্যে তার স্কুলের কয়েকজন কিশোরী শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছিল। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হওয়ার ক্ষমতায় ওই কিশোরীদের ফল বদলে দেওয়ার নাম করে তাদের ধর্ষণ করে সে। আবার কাউকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া, বিয়ে করে সংসার করা, ভালো ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়ে তাদের ধর্ষণ করেছে সে।

২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে বর্তমান বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত হিরা ১১টি মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। তাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। শারীরিক সম্পর্কের সময় এসব মেয়ের অগোচরে হিরা তা মোবাইলে ধারণ করে। পরবর্তীতে ওই মোবাইলের ভিডিওচিত্র দেখিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের আবারও ধর্ষণ করে আসছিল।

তাদের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ের পর তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ওই ভিডিওচিত্র দেখানোর ফলে তাদের তালাক দেওয়া হয়। এছাড়াও তার ধর্ষণের শিকার হয়েছে একই পরিবারের তিন বোন এবং আরেক পরিবারের দুই বোন। কিন্তু ভিডিওর জন্য তারা কারও কাছে কোনও অভিযোগ করতে পারেনি।

হিরার ঘনিষ্ঠ এক স্বজন নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানিয়েছেন, হিরা বিবাহিত। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতো। ওই সময় তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে হিরা এক ছেলেকে বলাৎকার করে। এ ঘটনা এলাকাবাসী দেখে ফেললে হিরার মাথার চুল থেকে শুরু করে ভ্রু পর্যন্ত ফেলে দিয়ে তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর হিরাকে তালাক দেয় তার স্ত্রী। এরপর থেকে হিরা গ্রামের বাড়িতে থাকা শুরু করে।

অভিযুক্ত হিরা যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সেই কমিটির সভাপতি মীর মহিসন বলেন, ‘আমি হিরা সিকদারের বিচার চাই। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার বিষয়টি আমি জানি। আমরাও তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আবুল কালাম মামলা দায়ের ও অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হিরা সিকদারের বিরুদ্ধে আরও নারী নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।