ঢাকা, শনিবার ১৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৪২:০৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিশ্বে প্রতি ২০ নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন না পলাতক ব্যক্তিরা ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান

জননী সাহসিকা সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:২৬ পিএম, ২০ জুন ২০২৫ শুক্রবার

জননী সাহসিকা সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ

জননী সাহসিকা সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ

আজ ২০ জুন শুক্রবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যাক্তিত্ব ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রসেনানী বেগম সুফিয়া কামালের ১১৪তম জন্মদিন। তিনি ১৯১১ সালের এই দিনে বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারে মাতুলাললয়ে জন্মেছিলেন। তার বাবা সৈয়দ  আব্দুল বারি এবং মা সাবেরা খাতুন। স্বামী কামাল উদ্দিন। 
মাত্র ১০/১১ বছর বয়সেই তার লেখা প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। ১২ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর শায়েস্তাবাদ ছেড়ে স্বামীর সঙ্গে বরিশাল চলে আসেন। স্বামীর সহযোগিতায় তার শিক্ষা ও কাব্য প্রতিভার বিকাশ ঘটে। সেই সময় বিপ্লবী অশ্বিনী দত্তের ভাই তরুণ নামে একটি পত্রিকা বের করতেন। সেই পত্রিকায় সুফিয়া কামালের লেখা প্রথম ছোট গল্প ‘সৈনিক বধু’ ছাপা হয়। তার প্রথম কবিতা ‘বর্ষা’। 
এরপর তার স্বামী মারা গেলে তিনি মা ও শিশুকন্যাসহ কলকাতায় চলে যান। 
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই  সুফিয়া কামাল কলকাতা করোনেশন স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি নেন। ক্রমশ উঠে দাড়ালেন নিজের পায়ে। নিজেকে তৈরি করে নিলেন কঠিন সংগ্রামের মুখোমুখি হতে। নতুন করে মন দিলেন সাহিত্যচর্চায়। এই নিভৃতিচারি লেখকই  পরবর্তী সময়ে বিশ্বভুবনে জায়গা করে নেন। 
সাহিত্যক্ষেত্রে জায়গা করে নেয়ার পেছনে যাদের অবদান আছে তারা হলেন, কাজী নজরুল ইসলাম এবং সওগাত সম্পাদক  মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ৷ নাসির উদ্দীন তার মধ্যে  আবিষ্কার করেন  যথার্থ  কাব্য প্রতিভার। তিনি শুধু সুফিয়া কামালের কবিতাই ছাপেননি, মহিলা সংখ্যা সওগাতে ছেপে দেন তার ছবিও। সে সময় এটা ছিল এক চরম বিষ্ময়কর ঘটনা! 
১৯৪৭ সালে বেগম পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হলে নাসির উদ্দীন তার ওপর সাপ্তাহিক বেগম সম্পাদনার ভার দেন। 
ঐ বছর ২০ জুলাই বেগম পত্রিকার সম্পাদকীয়তে সুফিয়া কামাল লিখেছিলেন-‘মুসলিম সমাজ আজ কঠোর  দায়িত্ব গ্রহণের সম্মুখীন। অর্জিত স্বাধীনতা, সম্মান ও গৌরবের স্থান  রাখতে হলে কেবল পুরুষেরই  নয়, নারীকেও এগিয়ে আসতে হবে নতুন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের কাজে। এজন্য আমাদের মানসিক প্রসার ও আকাঙ্ক্ষার ব্যাপ্তি আর জীবন সম্পর্কে হোক স্থির ধারণা’। 
সুফিয়া কামাল ১৯৬২ সালে  বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৭৬ সালে নূরুন্নেছা খাতুন বিদ্যা বিনোদিনী পুরস্কার, ১৯৭৬ সালে নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক, শেরে বাংলা জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার পান। 
আন্তর্জাতিক পুরস্কারের মধ্যে  রয়েছে, ১৯৭৭ সালে রাশিয়া থেকে লেনিন পুরস্কার, ২৯৮১ সালে চেকোস্লোভাকিয়া সংগ্রামী নারী পরিষদ পুরস্কার। এই পুরস্কার বিশ্বের ১৬টি দেশের সংগ্রামী নারীদের দেয়া হয়। ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মেম্বার অব কংগ্রেস পুরস্কার এবং ক্লাব অব বোস্টন সনদ পান। 
সুফিয়া কামালের উল্লেখযোগ্য  বইগুলো হচ্ছে, কেয়ার কাঁটা, সোভিয়েতের দিনগুলো, মায়াকাজল, একালে আমাদের কাল, সাঁঝের মায়া, উন্মুক্ত পৃথিবী, মন ও জীবন, প্রশান্তি ও প্রার্থনা, দিউয়ান, মৃত্তিকার ঘ্রাণ, স্বনির্বাচিত কবিতা, ইতল বিতল, নওল কিশোরের দরবারে প্রভৃতি। 
১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর এই মহীয়সী নারীর মহাপ্রয়াণ ঘটে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে, জাতির সংকটে, বাতিঘরের মতো বাংলাদেশের মানুষকে যিনি পথ দেখিয়েছেন, সব কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যিনি ছিলেন সোচ্চার তিনি থাকবেন দেশের মানুষের হৃদয়ে চির ভাষ্মর হয়ে।