ঢাকা, শনিবার ২০, ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:২২:২৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছেন তারেক রহমান আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আবারো আগুন-ভাঙচুর প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

জিরা চাষে সম্ভাবনা, বাড়বে আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৭ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা। অবশেষে সফল হলেন গবেষকরা। শুধু গবেষণাগারেই নয়, কৃষক পর্যায়েও জেগেছে সম্ভাবনা। এখন দেশের মাটিতেই হবে আমদানি নির্ভর জিরা চাষ। তাও চলতি বছরেই। ফলে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। আয় বাড়বে কৃষকের।
কৃষি গবেষকরা বলছেন, দেশে প্রতিবছর ৩০-৩৫ হাজার মেট্রিক টন জিরার চাহিদা থাকে। এ পরিমাণ জিরার বর্তমান বাজার অনুযায়ী আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা।

দেশে জিরার চাহিদা মেটাতে ২০০৮ সাল থেকে গবেষণা শুরু করা হয়। এর আগে ২০০৭ সালে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয় জিরা বীজ। প্রথমদিকে সফলতা না পেলেও পরবর্তীতে  সফল হন বগুড়ার শিবগঞ্জে অবস্থিত মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা। 

মসলা গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার এবং গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলের ৬৫ জন কৃষককে জিরার বীজ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জেও কিছু কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে জিরার চাষ শুরু করেন। ওই ৬৫ জন কৃষকের মধ্যে বগুড়ার ৩৫ এবং গাইবান্ধার ৩০ জন কৃষক রয়েছেন। তারা প্রত্যেকে গড়ে পাঁচ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জিরার চাষ শুরু করে সফলতা পেয়েছেন।

এছাড়া গবেষণা কেন্দ্রে দেড় বিঘা জমিতে জিরার চাষ করা হয়েছে। সেখান থেকে এবার প্রায় ৮০ কেজি জিরা পাওয়া যাবে। ওই দেড় বিঘা জমি থেকেই গত কয়েক বছর ধরে ৪০-৪৫ কেজি জিরা সংগ্রহ করা যেতো। তবে তারও আগে পাওয়া যেতো সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম জিরা। এবারই প্রথম ওই জমি থেকে উৎপাদিত জিরার পরিমাণ বেশি। অর্থাৎ গবেষকরা সফল হয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, প্রতি বিঘায় এক কেজি জিরার বীজ বপন করা যায়। আগামী মৌসুম থেকে এক বিঘা জমি থেকে আড়াই মণ জিরা পাওয়া যাবে। বীজ বপনের ১০৫-১১০ দিন পর জিরা পাওয়া যায়। বিঘাপ্রতি জমিতে এ সময়ের মধ্যে কৃষকের খরচ হবে সাত-আট হাজার টাকা। বর্তমান বাজার ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে জিরা বিক্রি হয়। সেই অনুযায়ী এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার জিরা বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা।

কৃষি গবেষকদের পরামর্শে এবার জিরা চাষ করেন বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলা এলাকার কৃষক ডা. মোস্তাফিজার রহমান। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, চার শতাংশ জমিতে জিরার চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। তবে সম্প্রতি টানা বৃষ্টির কারণে সামান্য ক্ষতি হয়েছে জিরার আবাদে। এছাড়া আর কোনো আশঙ্কা নেই। আগামীতে তিনি বাণিজ্যিকভাবে জিরার চাষ করবেন।

দীর্ঘ বছর ধরে জিরা নিয়ে গবেষণা করা বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান সুজা বলেন, ‘২০০৭ সালে ভারত থেকে জিরার বীজ সংগ্রহ করা হয়। পরে ২০০৮ সাল থেকে গবেষণাগারে জিরার চাষ শুরু করা হয়। প্রথমদিকে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়নি। অনেক চেষ্টার পর এখন এসে আমরা সফল হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, জিরা শীতকালীন ফসল হলেও জিরা চাষের জন্য কুয়াশা ক্ষতিকর। জিরার আবাদি জমিতে পানি জমে থাকা যাবে না। এমনকি মাটিও হতে হবে শুকনো। ভেজা মাটিতে জিরার চাষ একদমই হবে না। যেটুকু পানি না দিলেই না, শুধু সেটুকু পানি জমিতে দেওয়া যাবে। কিন্তু অনেক কৃষক জিরার জমিতে পানি দেন। যা এ ফসলের জন্য ক্ষতিকর।

বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মো. মাজহারুল আনোয়ার বলেন, শতভাগ আমদানি নির্ভর জিরা চাষে আমরা সফলতা অর্জন করেছি। এটা আমাদের জন্য একটি সুসংবাদ। পরীক্ষামূলকভাবে অনেক জিরা চাষ করছেন। আগামীতে বড় আকারে জিরা চাষ করা হবে। জিরা চাষে অনেক লাভবান হবেন কৃষকরা। এছাড়া অন্যান্য সবজির সঙ্গে একই জমিতেও জিরার আবাদ করা যায়।

তিনি আরো বলেন, জিরা চাষের জন্য উপযুক্ত হলো চরাঞ্চল এলাকার জমি। চরাঞ্চলের মাটিতে বালুর পরিমাণ বেশি হওয়ায় পানি ধরে রাখতে পারে না। ফলে চরের মাটিতে জিরা চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন কৃষক। একই সঙ্গে জিরার আমদানি কমে গেলে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।