ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১৫:২২:৫৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫ রমজানের অর্ধেকেও কমেনি মাছ ও মাংসের দাম ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ফেইসবুকে সমালোচনার ঝড়

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৩৮ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ফেইসবুকে সমালোচনার ঝড়।  ছবি : আশিষ কুমার দে‘র ফেইজবুক ওয়াল থেকে

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ফেইসবুকে সমালোচনার ঝড়। ছবি : আশিষ কুমার দে‘র ফেইজবুক ওয়াল থেকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও। নানা পেশা নানা বয়সের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ফেইসবুকে। উইমেননিউজ২৪.কম’এর পাঠকদের জন্য কিছু মতামত তুলে ধরা হলো।

ফরিদা আখতার : আর একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, জন্ম দিয়েছে হাজারো প্রশ্নের। এবার ঢাকা শহরে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দেশের আরো হাজারটি ধর্ষণের ঘটনার মতোই একটি মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীরা সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়েছে পরদিন (৬ জানুয়ারি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রেকর্ড করা বুলি আউড়েছেন, পুলিশ শীঘ্রই অপরাধীকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন। হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছে। মেয়েটি ট্রমাটাইজড , সাথে স্বাস কষ্ট আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কথা দিয়েছেন মেয়েটির পাশে দাঁড়াবার। ছাত্র লীগ এবং ডাকসু মেয়েটির ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। রাতে মশাল ও মোমবাতি মিছিল হয়েছে। আরো অনেক ছাত্র সংগঠন প্রতিবাদ করেছে। আমিও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মিডিয়াতে খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে মেয়েটির নাম বা তার সম্পর্কে বর্ণনার বাড়াবাড়ি করা হয় নি ঠিকই, কিন্তু বেশি সহানুভুতি দেখাতে গিয়ে এমন স্কেচ ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মনে হয় যে নারীকেই মূখ ঢেকে থাকতে হবে। ডেইলী স্টারের মতো পত্রিকায় এমন স্কেচ দেখে অবাক হই। প্রশ্ন উঠেছে ঢাকা শহরে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদের যে জোয়ার দেখছি, তা কেন সারাদেশে সাধারণ নারীরা ধর্ষিত হলে দেখা যায় না। কেন তাদের ঘটনা একটি পরিসংখ্যানে পরিণত হয়? এইতো ২০১৯ সালেই ১৪১৩ টি গণধর্ষণসহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৭৬ জনকে মেরে ফেলা হয়েছে, আর ১০ জন আত্মহত্যা করেছে। এদের ব্যাপারে কি রাস্তায় এতো আন্দোলন হয়েছে? হয় নি। এটা কি তাহলে শ্রেণীর প্রশ্ন? দু’একটি “চাঞ্চল্যকর’ (মিডিয়ার ভাষা) ঘটনায় বড় প্রতিবাদ হয়েছে। দু’একজন ধর্ষণকারি গ্রেফতারও হয়েছে। কিন্তু বিচার হয়েছে কয়টি? শাস্তি পেয়েছে কতজন? কত জন ধর্ষক/নির্যাতনকারিকে চিহ্নিত করা হয়েছে? এবারের ঘটনায় এতো বেশি প্রতিবাদ হচ্ছে, কিন্তু দোষীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা এবং বিচার হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে তো? এর মধ্যে রাজনীতি ঢুকবে না তো? ধর্ষণকারির পরিচয় জানার পর প্রতিবাদের ভাষা ও ধরণ কেমন হবে? সারাদেশের নারী ধর্ষণের বিষয়টি আবার একটু নাড়া দেয়া হবে কি? মেয়েদের চলাফেরার নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর ও দক্ষিণের সিটি কর্পোরেশান নির্বাচনে বিষয়টির প্রতি নজর দেয়া হবে কি?


আশিষ কুমার দে : দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের শিকার। তাও খোদ রাজধানীতে; ক্লাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে কুর্মিটোলা স্টপেজে নামার পর! ঘটনাস্থলে পড়েছিল মেয়েটির প্রয়োজনীয় ওষুধ ইনহেলারসহ তার ব্যবহৃত আরো কয়েকটি ক্ষুদ্র সামগ্রি।
হায়রে সভ্যতা! হায়রে নারী অধিকার! হায়রে নারী স্বাধীনতা! হায়রে নারীর নিরাপত্তা!
এ ঘটনায় ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
নির্যাতিতা ছাত্রীটি কারও সন্তান, কারও বোন, কারও স্বজন। সে আমারও প্রিয়জন হতো পারতো।
নরপিশাচদের ঘৃণ্য জৈবিক লালসার শিকার নিরাপরাধ ছাত্রীটিকে একবার আপনজন ভেবে দেখুন তো, আপনার অনুভূতি কেমন হয়।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীসহ দেশের সকল নারীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান- জঘন্যতম এই ঘটনার বিরুদ্ধে আপনারা ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুরুষরূপী নরপিশাচদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের মধ্য দিয়ে আপনারা প্রমাণ করুন- নারীরা শুধু পুরুষদের ভোগের বস্তু নয়; গৃহকোণে কিংবা কর্মস্থলে নিজ নিজ কর্মে নিয়োজিত সুদর্শনা ও কোমলদেহী আকর্ষণীয় পদার্থ নয়।
আপনারা প্রমাণ করুন- যে নারীরা বীরসন্তানদের জন্ম দিতে পারেন, সে নারীরা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে কুলাঙ্গার ধর্ষকদের ওপর বীরের বেশে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের নির্মূল করতেও পারেন।

শাওন মাহমুদ : কুর্মিটোলার বাসস্ট্যান্ড থেকে অজ্ঞান করে ধরে নিয়ে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে গত সন্ধ্যায়। শুধু ধর্ষণই নয়, তাকে প্রচন্ড শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। রাত দশটার দিকে জ্ঞান ফিরে আসবার পর মেয়েটি নিজেই একটি সিএনজি ডেকে বন্ধুর বাসায় যান, বন্ধুরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অজ্ঞাত ধর্ষকের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনও। অথচ শহরে পুলিশ সপ্তাহ চলছে।

রাজীব নূর : দেশটা কী ধর্ষকের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে?
আমি আতঙ্কিত। আমার মেয়ে বড় হচ্ছে এবং মেয়ের আরো দুইটা বোন এই ঢাকা শহরে পড়াশোনা করে। ওরা একা একা নাটক দেখতে যায়। কাজ-বাজ খুঁজে বেড়ায়।

আঙ্গুর নাহার মিন্ট : সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা কি রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার গালে কষে একটা চড় দেয়নি?! আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই কি পুলিশ সপ্তাহ পালনে ব্যস্ত ছিলেন? অদ্ভুত এক বর্বর সমাজে পরিণত হচ্ছি আমরা যেখানে ধর্ষণ ক্রমশ লঘু অপরাধে পরিণত হচ্ছে! গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র, সরকার আর সমাজের কাছে! ২০২০ সালেও হারকিউলিসকেই কি ডাকতে হবে!?