ঢাকা, রবিবার ২৮, এপ্রিল ২০২৪ ০:৩৭:১৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খিলগাঁওয়ে একইদিনে তিন শিশুর মৃত্যু শেরে বাংলার কর্মপ্রচেষ্টা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মাজারে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

ঢাবির উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস: বৈষম্য নয় সমতা

শারমিন সুলতানা | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৫৪ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার

উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। ছবি : উইমেননিউজ২৪.কম

উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। ছবি : উইমেননিউজ২৪.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগ চালু হয়েছে ২০০১ সালে। সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের আওতায় এই বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে এই বিভাগের নাম ছিলো ডিপার্টমেন্ট অব উইমেন স্টাডিস। পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস’।  

সমাজে নারীর অবস্থান এবং দেশ উন্নয়নের মূল ধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে উইমেন স্টাডিস বিভাগ যাত্রা শুরু করে। নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে কিভাবে পিছিয়ে পড়া নারী সমাজকে সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই ব্যাপারেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়া হয় এই বিভাগ থেকে। তবে বর্তমানে নাম পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন করা হয়েছে শিক্ষার উদ্দেশ্যও। এখন উদ্দেশ্য কেবল নারীর ক্ষমতায়ন নয়। বর্তমানে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো, নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি পুরুষের মানসিক উন্নয়নের মাধ্যমে নারী বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি।

এ বিভাগে মেয়েদের পাশাপাশি পড়ছে অনেক ছেলে শিক্ষার্থী। ছেলেরা এই বিভাগে পড়ার জন্য আগ্রহী হচ্ছে কেন। কেন পড়তে এসেছে বা বিষয়টি নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ ভাবনা কি। পাশাপাশি এ বিষয়টি থেকে তারা কি শিখছে। এমন সব প্রশ্নের ধারণা থেকেই এ বিভাগের কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়।

উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়ছে খুলনার হামিম। এই বিষয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে সে বলে,আমরা সবাই নারীর অধিকার নিয়ে কথা বললেও এই ব্যাপারে কেউ সচেতন না। নারী-পুরুষ বৈষম্য সমাজের একটি অভিশাপ। আর এই বৈষম্য সম্পর্কে জানতে হলে এবং তা থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে এই বিষয়টিতে পড়তে হবে।

ভবিষ্যতে নারী পুরুষ বৈষম্য দূর হোক এটাই চাওয়া ঠাকুরগাঁও-এর সজীব হোসেনের। আর এই চাওয়া থেকেই এই বছর উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগে ভর্তি হয়েছে সজীব। ইচ্ছে করলেই মাইগ্রেশনের মাধ্যমে অন্য বিষয়ে সে ভর্তি হতে পারতো। কিন্তু সে তা করেনি।

এ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ। জানতে চেয়েছিলাম এই বিভাগে ভর্তির পেছনের কারণটা। আব্দুল্লাহর এখানে পড়ার পেছনের কারণটা অন্য দু চারজন থেকে কিছুটা ভিন্ন। সে বলে, চার বোনের একমাত্র ভাই আমি। বিয়ে হয়ে গেছে সব বোনের।পড়ালেখা শিখলেও পেশাজীবি নয় কোন বোনই। এজন্য ছোটবেলা থেকেই আমার ধারণা ছিল মেয়ে মানেই তো বিয়ে হয়ে যাওয়া। কিন্তু একটু বড় হওয়ার পরে বোনদের দেখে আমার মানসিকতার পরিবর্তন হয়। ওরা কিছু করে না বলে দেখতাম সংসারে ওদের কথার কোন মূল্যায়ন নেই। বিষয়টি আমার খুব খারাপ লাগে। তখন থেকেই আমি ভাবি যে, আমাদের সমাজে পরিবর্তন আসা দরকার। এজন্য অনেক আগে থেকেই এই সাবজেক্টটা আমার প্রথম পছন্দ ছিল। 

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নেত্রকোনার সুকেশ দেবনাথের ইচ্ছা এই বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে গ্রামীণ নারীর বৈষম্য দূর করতে কাজ করা।

কিশোরগঞ্জের শফিকুলের বন্ধুর বড় ভাই পড়তেন এই বিষয়টিতে। প্রথমে তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি এ বিষয়টিতে পড়তে এসেছিলেন। আর এখন সে এই বিষয়টির গভীরতা উপলব্ধি করতে পেরেছে বলেই ভবিষ্যতে নারী বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করতে চায়। 

কথা হয় বিভাগের প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থী ফাইরুজ হায়দারের সাথে। প্রশ্ন ছিল এই বিভাগে ছেলেরা কি শুধু পড়তে হবে বলে পড়ছে, না কি বিভাগের উদ্দেশ্যকে তারা গুরুত্ব দিয়েই অনুধাবন করছে। ফাইরুজের কথা থেকে জানা যায়, প্রথমে হয়তো অনেক ছেলেই কোন কিছু না ভেবে এই বিষয়ে পড়তে এসেছিল। তবে ক্লাসে এই বিষয়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষকদের আন্তরিক ধারণা দানের ফলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে বর্তমানে মেয়েদের পাশাপাশি অনেক ছেলেরাও এ ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে। তাদেরও চাওয়া সমাজ থেকে নারী পুরুষ বৈষম্য দূর হয়ে নিশ্চিত হোক নারীর ক্ষমতায়ন।