ঢাবি’র প্রথম মুসলমান ছাত্রী ফজিলাতুন্নেসা
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪.কমআপডেট: ০৫:৪৭ পিএম, ৭ মার্চ ২০১৮ বুধবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান ছাত্রী ফজিলতুন্নেসা জোহা। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে মুসলিম মেয়েদের মধ্যে ফজিলতুন্নেসা প্রথম স্নাতক ডিগ্রীধারী। তার আগে আর কোনো মুসলমান মেয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করতে পারেনি। দেশেরে প্রথম নারী অধ্যক্ষ তিনি। ঢাকা ইডেন কলেজের অধ্যক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।
অসম্ভব মেধার অধিকারী ফজিলতুন্নেসা শুধু অসামান্য সুন্দরীই ছিলেন না তিনি ছিলেন গনিতবিদ্যায় এম এ। ১৯২৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন।
বাংলার রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থাকে ভ্রুকুটি দেখিয়ে অসম সাহস ও উচ্চ শিক্ষা লাভের প্রবল আকাংখায় বোরকা ছাড়া বহুবিধ অত্যাচার সহ্য করে উওরসুরী মুসলিম মেয়েদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করেন ফজিলতুন্নেসা। নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি সম্পর্কে সওগাতসহ অনেক পত্রিকায় তার বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প প্রকাশিত হয়।
আমাদের ব্যর্থতা আমরা এই গুণী নারীকে যথাযোগ্য সম্মান দিতে পারিনি। বর্তমান প্রজন্ম তাকে খুব একটা জানেনা। এমনকি বাংলাদেশেও ফজিলতুন্নেসাকে স্মরণ করা হয় না। ১৯৭৬ সালের ২১ অক্টোবর ফজিলতুন্নেসা মৃত্যুবরণ করেন।
ফজিলাতুন্নেসা ১৯০৫ সালে (জন্মতারিখ জানা যায়নি) ময়মনসিংহ জেলার করটিয়ার ‘কুমল্লীনামদার’ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ওয়াহেদ আলী খাঁ। করোটিয়ার জমিদার বাড়িতে সামান্য একটি চাকরি করতেন ওয়াহেদ আলী খাঁ। ফজিলতুন্নেসার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গ্রামে।
গ্রামের স্কুলেই তার শিক্ষাজীবন শুরু। ৬ বছর বয়সে ফজিলতুন্নেসা করটিয়ার প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। শৈশব হতেই ফজিলাতুন্নেসা লেখাপড়ায় আগ্রহী এবং মেধাবী ছিলেন। তিনি প্রতিটি ক্লাসে প্রথম হতেন। স্কুলের বাৎসরিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা থাকা সত্বেও ওয়াহেদ আলী মেয়েকে শিক্ষার পথে এগিয়ে দেন।
মাইনর পাস শেষে সামাজিক ও পারিবারিক বাধা অতিক্রম করে ১৯১৭ সালে তিনি ফজিলতুন্নেসাকে ঢাকা নিয়ে আসেন তার বাবা। সে সময়ের একমাত্র সরকারী বালিকা বিদ্যালয় `ইডেন স্কুলে` ভর্তি করে দেন। কঠোর অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের পুরস্কার তিনি পান। ১৯২১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ঢাকা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে মাসিক ১৫ টাকা হারে বৃত্তি পান। তখন থেকে লোকের মুখে মুখে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর ১৯২৩ সালে ইডেন কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন এবং শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। তারপর কলকাতার বেথুন কলেজে বিএ পড়ার জন্য যান। এই কলেজে তখন তিনিই ছিলেন একমাত্র মুসলিম ছাত্রী। ১৯২৫ সালে ডিসটিংশানসহ বিএ পাশ করেন ফজিলাতুন্নেসা। তার আগে কোন মুসলিম মেয়ে এই বিরল সম্মানের অধিকারী হয়নি।
বিএ পাশ করে তিনি ঢাকা ফিরে আসেন। এর পরে তার পিতা তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিতে মাস্টার্স ক্লাশে ভর্তি করে দেন। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী। কিন্তু এখানে তিনি কঠিন পরীক্ষায় পড়লেন। কারণ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার পরিবেশ ছিলনা। এক্ষেত্রেও ফজিলতুন্নেসা ছিলেন সফল। তিনি সতীর্থদের সাথে গড়ে তুলেন বন্ধত্বময় সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।
১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কশাস্ত্রে মিশ্র বিভাগে এমএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান দখল করেন। এমএ পাশ করার পর ১৯২৮ সালে কিছুদিন তিনি ঢাকার ইডেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্টেট স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রির জন্য ফজিালতুন্নেসা ইংল্যান্ড যান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে একজন মেয়েকে বিলেত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি নিজ চেষ্টায় `ষ্টেটস স্কলারশীপ` যোগাড় করেন।
এ ব্যাপারে সওগাত সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও খান বাহাদুর আবদুল লতিফ তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। ফলে তার বিলেত যাওয়ার পথ সুগম হয়। কিন্তু বাবার অসুখের খবর পেয়ে ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোর্স শেষ না করেই তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর আর তার বিলেত যাওয়া হয়নি। লন্ডন থেকে ফিরে ১৯৩০ সালে তিনি কলকাতায় প্রথমে স্কুল ইন্সপেক্টরের চাকুরিতে যোগদান এবং পরে কলকাতার বেথুন কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি এ কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান এবং একই সঙ্গে কলেজের উপাধ্যক্ষা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি বেথুন কলেজের চাকরি ছেড়ে স্বেচ্ছায় ঢাকা চলে আসেন এবং ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম নারী অধ্যক্ষ। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইডেন কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। বেগম ফজিলাতুন্নেছার অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগসহ ইডেন কলেজ ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত হয়। কিন্তু প্রশাসনিক কোন্দলের জের ধরে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তাকে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ্র পুত্র প্রথম বাঙালি সলিসিটর শামসুজ্জোহার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন ফজিলাতুন্নেসা। বিলেতে থাকাকালে তার সাথে শামসুজ্জোহার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খার মধ্যস্থতায় জোহার সাথে ফজিলতুন্নেসার বিয়ে হয়।
ফজিলাতুন্নেসা জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গ নির্জনে। ১৯৭৭ সালের ২১ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন এই বিদুষী নারী। তার স্মৃতি রক্ষার্থে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৭ সালে তার নামে হল নির্মাণ করা হয়।
- মিরপুর চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে বেরিয়ে গেল সিংহ
- খালেদা জিয়া জন্য জার্মানি থেকে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
- ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২০০
- পিঠা খেতে ঢাকা ছাড়লেন পরীমণি
- এআই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করলেন রোনালদো
- কনার নতুন ছবি ঘিরে বিয়ের গুঞ্জন
- নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকার ৫০ থানার ওসি বদলি
- ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট
- ইউএনও হলেন লাক্স সুন্দরী সোহানিয়া
- পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে যোগ দিলেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার
- বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত
- বিশৃঙ্খলায় ডুবছে গ্রোকিপিডিয়া
- লিভার ভালো রাখতে যে ৩ খাবার খাবেন
- আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল
- পুতিনকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদি
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
- নাসরিনের অধিনায়ক সানজিদা, সাবিনা-মাসুরারা অন্য ক্যাম্পে
- বিয়ে নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন রাশমিকা
- খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়
- হেলিকপ্টারে বিমানবন্দর যাবেন খালেদা
- বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে
- আজ মধ্যরাতে লন্ডনে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে
- লিভার ভালো রাখতে যে ৩ খাবার খাবেন
- ‘পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার’
- পিঠা খেতে ঢাকা ছাড়লেন পরীমণি
- আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে : প্রধান উপদেষ্টা
- খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের
- তলবের ১০ মিনিটেই হাজির জেডআই খান পান্না, চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা
- ইউএনও হলেন লাক্স সুন্দরী সোহানিয়া


