ঢাকা, বুধবার ০১, মে ২০২৪ ১৭:৪৬:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মহান মে দিবসে মেহনতি মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা মদিনায় ভারি বৃষ্টিতে বন্যা, রেড অ্যালার্ট জারি দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু ভর্তি পরীক্ষায় ব্যর্থ, পদ্মায় ঝাঁপ দিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা মহান মে দিবস আজ ক্যারিয়ার সেরা র‍্যাংকিংয়ে জ্যোতি চুয়াডাঙ্গায় আজ ৪৩.৭ ডিগ্রি, ২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

নারীর অধিকার বাস্তবায়ন হলেই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ৯ মে ২০২৩ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট নারীনেত্রী রোকেয়া কবীর বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে নারী-পুরুষসহ সব জনগোষ্ঠীর সমান অংশগ্রহণে। মুক্তিযুদ্ধে এদেশের নারীরাও গেরিলা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করেছে, এখন নির্বাচন গণতন্ত্র হয়ে দাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ৫০ শতাংশ নারী এখনো অবহেলিত, তাই নারীর অধিকার বাস্তবায়ন হলেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। নারীকে তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণী করে রাখা হয়েছে। তৃতীয় চতুর্থ নয়, সব মানুষের সমান অধিকার দাবি করে রোকেয়া কবীর বলেন, ‘আমরা যে যেই ধর্ম পালন করি না কেনো আমরা বাংলাদেশের নাগরিক।’

রোকেয়া কবীর বলেন, ‘দেশ আজ স্বাধীনতার অর্ধ শতাধিক বছর অতিক্রম করছে। এখনো ঐতিহ্যগতভাবে সম্প্রীতিপূর্ণ এই দেশটিতে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে-মানুষে বিভাজন সৃস্টি করে পুরুষতান্ত্রিক বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাকে আরো জোরদার করা হচ্ছে। ধর্মকে সুকৌশলে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ধর্মের অপব্যবহার করছে এবং সহিংসার আশ্রয় নিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এধরনের সহিংসতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শিকার হচ্ছে যুব ও নারীসমাজ এবং দরিদ্রজনগোষ্ঠী।’ এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অসহিষ্ণু ও সহিংসতার বিরেুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনমত গড়ে তোলা খুবই জরুরি বলেও তিনি মনে করেন।

মঙ্গলবার (৯ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংস্থা আয়োজিত ‘জেন্ডার সমতা ও সমনাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক মুল্যবোধ’ বিষয়ক শীর্ষক সেমিনারে রোকেয়া কবীর প্রারম্ভিক বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক আবু হাসনাত মো. কিশোয়ার হোসেন।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর কাবেরী গায়েন বলেন, ‘গণতন্ত্র মানলে বহুতত্ত্ববাদ মানতে হবে।  দেশে ৫১ শতাংশ নারী আর পুরুষ হচ্ছে ৪৯ শতাংস। আজ আমরা মনে করতে পারছি না, আমাদের তৃতীয় লীঙ্গেও মানুষ আছে, আজ হিজরা জনগোষ্ঠী রাস্তায় যখন গাড়ি থামে সেই গাড়িতে বসে থাকা যাত্রীর নিকট হতে তাদের হাতালি দিয়ে কেনো হাত পেতে অর্থ উর্পাজন করতে হচ্ছে! পরিবারের কাছ থেকে তাদের কী সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার নেই!  রাষ্ট্রের কী দায়িত্ব নেই! তিনি বলেন, সব মানুষের সমঅধিকার বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি বলেন, সেই সঙ্গে বাল্যবিবাহ বেড়েছে এখন। আগে ১৮ বছরের পূর্বে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া নিষেধ ছিলো, এখন ১৬ বছরেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার কারণে অপুষ্টি নারী অপুষ্টি শিশু জন্ম দিচ্ছে! ১৬ বছরের মেয়েকে যাতে বিয়ে দেওয়া না হয় এই ব্যাপারে রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। 

সরকারের প্রসংশা করে কাবেরী গায়েন বলেন, নারীর শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাষ্ট্র যেভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, ঠিক একইভাবে বাল্যবিবাহ বন্ধের উদ্যোগের আহবান জানিয়েছেন। 

অধ্যাপক ড. এ. আই মাহবুব উদ্দীন আহমেদ বলেন, ছোটবেলা থেকেই পরিবার ও সমাজে পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা ও সামাজিকীকরণের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠার ফলে আমাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তৈরি হয়নি। এ কারণে জনগণের অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্ব মেনে নেওয়ার মানসিকতা সমাজে তৈরি হয়নি। সমাজের বিদ্যমান এসব বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির মূল কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি। সেই কারণগুলোর মূল উৎপাটনে তরুণ সমাজকেই কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

সেমিনারটির শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু হাসনাত মো. কিশোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘নারীর প্রতি বৈষম্য নতুন নয়। অতীতকাল থেকে তা চলে আসছে তবে বর্তমানে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতার ধরণ পাল্টেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসনের জন্য সুনির্দিষ্ট টার্গেট রয়েছে। বাংলাদেশ আগের চাইতে এ ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়েছে তবে এখনো আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারিনি। বেগম রোকেয়ার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ পূরণ করতে চাইলে কন্যাদের জাগ্রত হতে হবে। তবে কন্যাদের নয়, বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে ভূমিকা রাখতে হবে।’


শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন- পপুলেশন সায়েন্সেস ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামন মাজেদ এবং জান্নাতুন নূর তুলি। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ বেগম সুমী।