ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৬:০৫:০৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

‘নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী শিক্ষা উদ্যোক্তা’

বিবিসি বাংলা অনলাইন | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৩৫ পিএম, ২৬ মে ২০২০ মঙ্গলবার

প্রয়াত নিলুফার মঞ্জুর

প্রয়াত নিলুফার মঞ্জুর

কোভিডে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার ভোরের দিকে মারা গেছেন ঢাকার অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল সানবিমসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর। তার বয়স হয়েছিল ৭৪।

কয়েকদিন আগে নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে তাকে ঢাকার কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা গেছেন।

প্রয়াত নিলুফার মঞ্জুর সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিক্ষা গবেষক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন বাংলাদেশে "মানসম্পন্ন স্কুল শিক্ষার একজন পথপ্রদর্শক''।

“আমার সবসময় মনে হয়েছে তিনি প্রধানত একজন উদ্যোক্তা ছিলেন, কিন্তু সানবিমস স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে ব্যবসার উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁর প্রধান লক্ষ্যই ছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রচলন।"

১৯৭৪ সালে ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকায় সানবিমস প্রতিষ্ঠা করেন নিলুফার মঞ্জুর, যার বাবা ড. মফিজ আলী ছিলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের একজন মন্ত্রী।

প্রথমদিকে এটি ছিল প্রাথমিক স্কুল। আশির দশকে মাধ্যমিক স্তর চালু করা হয়।

রাশেদা চৌধুরী বলেন, ৭০ এর দশকে যখন সানবিমস প্রতিষ্ঠা হয়, তখন উচ্চবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তদের অনেকে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার জন্য ভারতে তাদের ছেলে-মেয়েদের পাঠাতেন।

“আমার ধারণা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অন্যতম মোটিভেশন ছিল দেশেই সেই সুবিধা তৈরি করা," বলেন রাশেদা চৌধুরী, যিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রয়াত নিলুফার মঞ্জুরকে কাছাকাছি থেকে দেখেছেন, তার সাথে মেলামেশা করেছেন।

“তাঁকে আমি বর্ণনা করবো এমন একজন ব্যতিক্রমী শিক্ষা উদ্যোক্তা হিসাবে যিনি মূল্যবোধকে কখনই জলাঞ্জলি দেননি।''

রাশেদা চৌধুরী জানান, তার তিন সন্তানের সবারই প্রাথমিক শিক্ষা হয়েছে সানবিমসে।

“সুতরাং একজন অভিভাবক হিসাবেও আমি দিনের পর দিন দেখেছি কীভাবে নিলুফার বাচ্চাদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল হলেও তিনি সবসময় চেয়েছেন তার ছাত্র-ছাত্রীরা যেন দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি না ভোলে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তিনি কখনো ভোলেননি।''

“আমার নিজের সন্তানদের লক্ষ্য করে আমি দেখেছি, কীভাবে তাঁর স্কুলে শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা এবং দেশীয় সংস্কৃতি শেখানো হচ্ছে।''

রাশেদা চৌধুরী জানান, শিক্ষা বিষয়ক একটি গবেষণা কাজের জন্য বছর পাঁচেক আগে সানবিমস স্কুলে গিয়ে দেখেন ছাত্র-ছাত্রীরা রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা কাব্য-নাট্য মঞ্চস্থ করার জন্য রিহার্সাল দিচ্ছে।

“আমি দেখেছি আমার বাচ্চারা তাদের শিক্ষকদের অত্যন্ত সম্মান করতো। যেদেশে প্রাথমিক স্কুল পর্যায়েও ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষকদের কোনো রোল-মডেল মনে করে না, সেখানে সানবিমস ছিল ব্যতিক্রমী।“

নিলুফার মঞ্জুরের মৃত্যুর খবরে নিজে ব্যক্তিগতভাবে শোকাহত হয়েছেন রাশেদা চৌধুরী।

“ভীষণ খারাপ লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা পরিস্থিতির কারণে ইচ্ছা করলেও শেষবারের জন্য একবার তাকে দেখা হয়ে উঠবে না।''

প্রয়াত নিলুফার মঞ্জুরের স্বামী মঞ্জুর এলাহী বাংলাদেশের একজন অন্যতম শিল্পপতি। তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। স্ত্রীর সাথে তিনিও কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।