ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ২০:৫৩:৪১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

বিশ্ব বন্ধু দিবস: অটুট থাকুক বন্ধুত্ব

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ১ আগস্ট ২০২১ রবিবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

ছোট্ট একটি শব্দ ‘বন্ধু’, কিন্তু এর ব্যাপ্তি সীমাহীন, এর গভীরতা অনেক। বন্ধু মানে আস্থা, নির্ভরতা। বন্ধু মানে ভালোবাসা, যেখানে থাকে না কোনো স্বার্থ। বন্ধুত্বের কথা লেখা হয়েছে কবিতায়, গল্পে, চিত্রকর্মে, কখনো স্মৃতি হয়ে জমা হয়েছে স্থিরচিত্রে আবার কখনোবা গানে। তাইতো মানুষের মুখে মুখে ফিরে বন্ধুকে নিয়ে অসংখ্য গান। অনেকেই হয়তো আজ মনের অজান্তে গেয়ে উঠবেন-দেখা হবে বন্ধু কারণে আর অকারণে, দেখা হবে বন্ধু, চাপা কোনো অভিমানে, দেখা হবে বন্ধু সাময়িক বৈরীতায়, অস্থির অপারগতায়!

জীবনে চলার পথে বন্ধু খুব প্রয়োজন। বন্ধু ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নশ্বর পৃথিবীর অনেক সম্পর্কের মাঝে বন্ধু অন্যতম। বন্ধুত্ব তো তা-ই, যাকে নিক্তি দিয়ে মাপা যায় না। প্রকাশ করা যায় না সংজ্ঞা দিয়ে। মানুষ যুগে যুগেই বন্ধুত্বকে উদ্যাপন করেছে। কিন্তু বন্ধু দিবস কীভাবে এল? অনেকে মনে করেন, বন্ধু দিবসের প্রচলন শুরু বিভিন্ন কার্ড তৈরির প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। যেমন কার্ড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হল মার্কের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল। ১৯১৯ সালে তিনিই আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস পালনের প্রস্তাব করেছিলেন। এই দিনে বন্ধু দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রে, ১৯৩৫ সালে। তারপর ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ দিবসটি সাদরে গ্রহণ করে। তবে এখনো অনেক দেশ তাদের নিজেদের পছন্দসই দিনে বন্ধু দিবস পালন করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আমাদের দেশেও গত কয়েক বছরে বন্ধু দিবস জনপ্রিয়তা অর্জন কেরছে। জাতিসংঘ ২০১১ সালে সাধারণ অধিবেশনে ৩০ জুলাই দিনটি আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস ঘোষণা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস ধরে নেওয়া হয়।

বন্ধু দিবসের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে হলুদ গোলাপ আর ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের মতো বিষয়গুলোও। এই ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের ধারণাটিও এসেছে আমেরিকা থেকেই। আমেরিকার আদিবাসীদের মধ্যে অনেক আগে থেকেই বন্ধুত্বেরর স্বীকৃতি স্বরূপ ব্যান্ড দেওয়ার এই রীতি চালু ছিল। তারা তাদের বন্ধুদের জন্য ব্যান্ড তৈরি করে। এবং যাকে ব্যান্ড দেওয়া হয়, সে কখনোই ব্যান্ডটি খোলে না! আবার বন্ধুত্বের প্রতীক যে হলুদ গোলাপ সেই হলুদ রঙ হলো আনন্দের প্রতীক। তবে হলুদ গোলাপ মানে শুধু আনন্দই নয়, প্রতিশ্রুতিও। বন্ধুত্বে যে শুধু আনন্দই নয় বরং প্রতিশ্রুতি, সে কথাটিই মনে করিয়ে দেয় এই বন্ধু দিবস।

বন্ধু সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য

১. এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক জীবনে একজন মানুষের সঙ্গে গড়ে ৩৯৬ জনের বন্ধুত্ব হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রতি ১২ জনে একজন টিকে থাকে। ২. গবেষকদের মতে, বন্ধুরা কাছাকাছি থাকলে মানুষের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং তা রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। ৩. শিশুরা হাঁটা ও কথা বলা শেখার আগেই বন্ধুত্বের অনুভূতি টের পেতে পারে। একটি গবেষণায় বন্ধুদের মাঝে নাকি ‘জিনগত মিল’ পাওয়া গেছে!

জানা যায়, সেই গবেষণায় গবেষকরা ১ হাজার ৯৩২ জন মানুষের ওপর জরিপ চালান। আত্মীয়দের বাইরে তাদের বন্ধুবান্ধব ও অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে জিনগত বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণও করা হয়। একই সামাজিক পরিমণ্ডলের মানুষের জিনে প্রায় এক শতাংশ মিল পাওয়া যায়। আর অনাত্মীয় বন্ধুদের মধ্যে জিনগত মিল অনেকটা দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের সঙ্গে বিদ্যমান মিলের মতো। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।

‘বন্ধুত্ব’ ব্যাপারটা সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন। বন্ধুত্ব সম্পর্ককে সহজ করে। বলেকয়ে বন্ধুত্ব হয় না। মনের সঙ্গে মনের মিল হলেই শুধু সত্যিকারের বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্বে অহংকার ও হিংসার স্থান নেই। ‘বন্ধুত্ব’ এমন একটা বিষয়, যা অনেক ক্ষেত্রে জীবনের চেয়েও দামি হয়ে দাঁড়ায়। এমন নজির পৃথিবীতে বহু আছে। বন্ধুত্ব এমন একটি সম্পর্ক যাতে এক বন্ধু বিপদে পড়লে আরেক বন্ধু না জেনেবুঝেও আগুনে ঝাঁপ দিতে পারে।

তবে আজকাল এমন বন্ধুর সংখ্যা খুব বেশি নেই। এ সময়ে সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া বা থাকা দুটোই ভাগ্যের ব্যাপার। কোনো কিছু পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনি কাছে রাখার গুণটাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিচর্যার কোনো বিকল্প নেই। একপাক্ষিক কোনোকিছুই মজবুত হয় না। অবহেলা যে কোনো সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।

বন্ধু দিবসের এই শুভক্ষণে পৃথিবীর সব বন্ধুত্ব অটুট থাকুক চিরকাল। ভালো থাকুক সব বন্ধুরা। শৈশবের দূরন্তপনার বন্ধু, স্কুল জীবনের উচ্ছ্বলতার বন্ধু, কলেজের সবকিছু রঙিন চশমায় দেখা বন্ধু, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিণত বয়সের বন্ধু কিংবা বয়সের ভারে ন্যুব্জ স্মৃতিতে হারিয়ে যাওয়া বন্ধু-সবাই ভালো থাকুক। বন্ধুরা যত্নে থাকুক মনের চৌকাঠে। ও বন্ধু তোকে আজ মিস করছি ভীষণ...

-জেডসি