ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫০:৩৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ পুড়ে ছাই, রক্ষা পেল ৭ শিশু সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম সারা দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাক-সবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে

শাবিপ্রবির আন্দোলন: সমাধান কোন পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:০৪ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২২ বুধবার

শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।  ফোকাস বাংলা

শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ফোকাস বাংলা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলন এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত সমাধানের কোনো পথ তৈরি হয়নি। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা যতটাই অনড়, এ দাবির প্রতি ততটাই উদাসীন বিশ্ব বিদ্যালয় প্রশাসন। 

এ অবস্থায় গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশনসহ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। শিক্ষাবিদদের কেউ কেউ বলছেন, সমাধান শাবিপ্রবির উপাচার্যের হাতেই রয়েছে। কেউ মনে করেন, অধ্যাপক ফরিদউদ্দিনকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সংকট নিরসনের পরামর্শও দিয়েছেন কেউ কেউ।

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত ১৯ জানুয়ারি আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে ১৯ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। 

গতকাল রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন ১৫০ ঘণ্টা ধরে অনশনে থাকা তিন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন, জাহেদুল ইসলাম ও সাবরিনা মমতা।

তারা বলেন, অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর তালেবানি কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন তালেবানি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে আলপনা আঁকা নিষিদ্ধ করেছিলেন। তবে কেন করা হয়েছিল, সেটি শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারেনি।
 
পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে সড়কে আলপনা আঁকার দাবি আদায় করেন। সন্ধ্যা ৭টার পর শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের না হওয়ার বিষয়েও কড়াকড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এরপর বের হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হতো। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উপাচার্য। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মুক্তচিন্তার জায়গা, সেখানে শিক্ষার্থীদের ১৮-১৯ দিন ধরে গ্রন্থাগার বন্ধের সময় বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে আন্দোলন কর্মসূচিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের বিষয়ে বলা হয়, দেশের কোনো আইনে অনুজদের কর্মসূচিতে ‘ডোনেশন’ দেওয়া অপরাধ কিংবা বেআইনি, সেটি তাদের জানা নেই। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে কেন আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিষয়টি তাদের জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে নিন্দা জানিয়ে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া ওপরের নির্দেশে হলের ডাইনিং বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, অনশনের সপ্তম দিনে এসে চিকিৎসা সহায়তা বন্ধ হওয়ার বিষয়টি তারা কোনোভাবে আশা করেননি। যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপদ মনে করেন না, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এ জন্য তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এর আগে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙতে পারেন বলে গতকাল সন্ধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মুহাইমিনুল বাসার রাজ। তবে একই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে তারা শপথ করেছেন বলে জানান তিনি। 

মুহাইমিনুল বলেন, আমাদের আন্দোলনের ১৩তম দিন চলছে, অনশনে চলছে ৭ম দিন। অনশনের ১৪৭ ঘণ্টা পার হলেও ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশানুরূপ সিদ্ধান্ত আসেনি। তাই আমরা সহপাঠীদের মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব। তবে যতদিন উপাচার্য পদত্যাগ না করবেন ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ করেছি। বর্তমানে অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ১৯ জন সিলেটের তিনটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৯ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ মনে করছেন, এই আন্দোলনে তৃতীয় কোনো পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। আবার অনেক শিক্ষকই এ আন্দোলনকে যৌক্তিক মনে করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর মনে করেন, সমাধানের পথ ওখানকার ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যেই আছে। উপাচার্যের কাছে সমাধান আছে।