ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ১৭:৩২:১৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সবজির বাজারে স্বস্তি নেই যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ এভারকেয়ারের সিসিইউতে ভর্তি খালেদা জিয়া মহান মে দিবসে মেহনতি মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা মদিনায় ভারি বৃষ্টিতে বন্যা, রেড অ্যালার্ট জারি

শিশুদের হাঁপানি : চাই সযত্ন সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মাত্র সাত মাস বয়স রাইফার। কয়েকদিন ধরেই সর্দি লেগে আছে। প্রায় সময়ই কান্নাকাটি করছে ছোট্ট মেয়েটি। কাঁদতে কাঁদতে অনেক সময় বমিও করছে। রাতে ঘুমানোর পর নাক ঘড়ঘড় করছে। বারবার নাকে নেজাল ড্রপ দিয়ে চলেছেন রাইফার মা। এভাবেই চলছিল। কয়েকদিন পর আর থাকতে না পেরে ডাক্তারের কাছে নিতে হলো রাইফাকে। ডাক্তার শিশুটিকে দেখেই বুঝতে পারলেন, তার অবস্থা ভালো না। তিনি কয়েকটি টেস্ট আর রাতের জন্য অল্প কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। বললেন টেস্ট গুলো করানোর পর কাল যেন অবশ্যই রিপোর্ট দেখিয়ে নিয়ে যান।

পরদিন রিপোর্ট দেখেই ডাক্তারের সন্দেহ সত্যি হয়ে গেল। রাইফা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত। বেশি ঠান্ডা লাগার কারণে নিউমোনিয়াও হয়েছে। দ্রুত রাইফাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিলেন ডাক্তার।

রাইফার মতই ঠান্ডা লেগেছিল দুই বছর বয়সী শিশু আজাদের। কয়েকদিন পরপরই ঠান্ডা লেগে থাকে তার। প্রতিবারই নাকের ড্রপ আর ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয় ওকে। এভাবেই চলছিল। কিন্তু এবারের সর্দি আর কাশি কিছুতেই যেন ভালোই হচ্ছে না আজাদের। শেষ পর্যন্ত মায়ের পীড়াপীড়িতে বাবা ওকে নিয়ে যান এক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, আজাদের হাঁপানি হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের মত নয়। যার ফলে অল্পতেই তাদের বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হয়। এজন্য দরকার বাড়তি যত্ন।

তিনি বলেন, শীতকালে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এরমধ্যে শিশুরা হাঁপানি রোগে কষ্ট পায় বেশি। তাপমাত্রা কমে গেলে তা শিশুদের শ্বাসতন্ত্র সহ্য করতে পারে না। এতে তাদের সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়াও ঘুমানোর পর তাদের নিঃশ্বাস ভারি হয়ে ওঠে। এমনকি ঘড়ঘড় করে আওয়াজও হয়। শিশুদের শ্বাসনালি খুবই সংবেদনশীল। একটু ঠান্ডা লাগলেই তাদের সর্দি বা কাশি হয়ে যেতে পারে। এরপর আস্তে আস্তে তা হাঁপানিতে রূপ নেয়।

এছাড়াও বাইরের ধুলো-বালিও এই হাঁপানি রোগের আরেকটি অন্যতম কারণ। অনেক শিশুই ধুলো-বালি সহ্য করতে পারে না তাদের সংবেদনশীল শ্বাসনালির কারণে। তাই দেখা যায়, সুস্থ স্বাভাবিক বাচ্চা ধুলা-বালিতে খেলাধুলা করতে পারলেও হাঁপানি আক্রান্ত শিশুরা সেটা করতে পারে না। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পরই তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, এই হাঁপানি আবার বংশগতও হতে পারে। তবে হাঁপানি হলে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে সচেতনভাবে চলার পরামর্শ দেন তিনি। তার মতে, এলার্জি হয় এমন বিষয় যেমন ধুলো-বালি যত সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ঠা-া, সর্দি এবং কাশি হলেই সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের সামনে ধূমপান একেবারেই করা যাবে না। কারণ সিগারেটের ধোঁয়া বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদের সামনে ধূমপান করলে তা ওদের শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়।

বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন এই শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। যাতে করে কোথাও ধুলো-বালি না জমে। এছাড়াও ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শীতকালে শিশুদের জন্য লোমযুক্ত কোনো কাপড়চোপড় বিশেষ করে কম্বল ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া এলার্জিযুক্ত খাবার বিশেষ করে যেসব খাবারে শিশুর এলার্জি হয় সেসব খাবার তাকে দেয়া যাবে না। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদেরকে সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লালন পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা.রহমত উল্ল্যাহ।

 

সূত্র : বাসস