ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ০:৫১:৪৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

আফগানিস্তানে উদ্ধার করা হচ্ছে পুরুষদের, বঞ্চিত নারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১০ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে উদ্ধারকর্মীদের সবাই পুরুষ এবং ধর্মীয় বিধিনিষেধের কারণে তারা শুধু পুরুষ ভিকটিমদের উদ্ধার করছেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে গুরুতর বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন নারীরা।

সরকারিভাবে আহত নারী ও মেয়ে শিশুদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কিন্তু তারপরও পুরুষদের তুলনায় উদ্ধার হওয়া নারী ও মেয়েশিশুদের অনুপাত ব্যাপকভাবে কম।

গত ৩১ আগস্ট রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কুনারে ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং তারপর ৫ দশমিক ২ এবং ৪ দশমিক ৫ মাত্রার দু’টি ‘আফটার শক’ হয়। ভূপৃষ্ঠের অগভীর অঞ্চলে হওয়া এ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩ হাজার ১২৪ জন এবং প্রায় ৬ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

ভূমিকম্পে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। আফগানিস্তানে ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরুও হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে যে উদ্ধারকর্মীরা শুধুমাত্র পুরুষ ভিকটিমদের উদ্ধার করছেন। নারী এবং দশ বছরের অধিক বয়সী মেয়ে শিশুদের উদ্ধার করা হচ্ছে না।

সরকারিভাবে আহত নারী ও মেয়ে শিশুদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কিন্তু তারপরও পুরুষদের তুলনায় উদ্ধার হওয়া নারী ও মেয়েশিশুদের অনুপাত ব্যাপকভাবে কম।  

আফগানিস্তানের নারী অধিকারকর্মী ফাতেমেহ রেজায়ি জানিয়েছেন, তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে অপরিচিত নারী ও পুরুষদের মধ্যে শারীরিক সংস্পর্শ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এমনকি ভূমিকম্পের মতো জরুরি অবস্থাতেও এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়নি। ফলে, পুরুষ উদ্ধারকর্মীরা আহত নারীদের স্পর্শ করতে পারেন না — তাদের ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলতেও ভয় পান, কারণ এতে ধর্মীয় বা সামাজিক শাস্তির আশঙ্কা থাকে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডিডব্লিউকে ফাতেমেহ রেজায়ি বলেছেন, “অপরিচিত কোনো পুরুষ উদ্ধারকর্মী পরিবারের নারী ও মেয়েদের স্পর্শ করবে— অধিকাংশ পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এমনটা বরদাস্ত করতে প্রস্তুত নন। এমনকি অপরিচিত কেউ পুরুষ আটকে পড়া নারী ও মেয়ে শিশুদের সহযোগিতা করবে— এটাও তারা চান না।”

পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় অল্প যে কয়েক জন নারী ও মেয়ে শিশুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হচ্ছে, কঠোর পর্দাপ্রথার কারণে তাদের অধিকাংশকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না। কারণ হাসাপাতালগুলোতে প্রায় সব চিকিৎসকই পুরুষ।

“আমরা এখনও জানি না, নিহত এবং আহতদের মধ্যে কতজন নারী ও মেয়ে শিশু আছে”, ডিডব্লিউকে বলেছেন রেজায়ি।

আহত নারীদের জন্য নেই নারী চিকিৎসক

কুনারে ভূমিকম্পের পর আহত অবস্থায় উদ্ধারকৃতদের কুনার এবং পার্শ্ববর্তী নানগারহার প্রদেশের হাসপাতালগুলোতে আনা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালগুলোতে নারী চিকিৎসকের গুরুতর সংকট থাকায় অল্প যে কয়েকজন আহত নারীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে— তারা চিকিৎনা পাচ্ছেন না।

জাহরা হাগপারাস্ত নামের এক চিকিৎক ডিডব্লিউকে জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে যে ভূমিকম্পে কুনারে শত শত নারী নিহত ও আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেক গর্ভবতী নারীও আছেন, কিন্তু তারা চিকিৎসা পাচ্ছেন না।”

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগের পর ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় কাবুল দখল করে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান বাহিনী। ক্ষমতা দখল করার পর থেকে আফগানিস্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্র থেকে নারীদের বিতাড়ন করা শুরু হয়। গত তিন বছরে অনেক নারী চিকিৎসকে চাকরিচ্যুত ও হয়রানি করেছে তালেবান প্রশাসন।

জাহরা হাগপারাস্তও  তাদের মধ্যে একজন। তালেবান সরকারের হাতে চাকরিচ্যুতি ও হয়রানির শিকার হওয়ার পর সম্প্রতি জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছেন এই নারী চিকিৎসক। ডিডব্লিউকে তিনি বলেন, “ভূমিকম্পের পর দুর্গত নারীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অনেক নারী চিকিৎসক এগিয়ে আসতে চেয়েছেন, কিন্তু আফগান সরকার তাদের অনুমতি দেয়নি।” সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ডিডব্লিউ