ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৫১:৩৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দশ দেশ

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৪৯ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২৫ মঙ্গলবার

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর ভবিষ্যতের কল্পনা নয়, বরং বাস্তবতার মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা, উৎপাদন, শিক্ষা এবং সৃজনশীল শিল্প- প্রায় প্রতিটি খাতে এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। তবে এই প্রযুক্তির দৌড়ে সবাই সমানভাবে অংশ নিচ্ছে না। কিছু নির্দিষ্ট দেশ প্রযুক্তি, মানবসম্পদ, নীতিমালা ও গবেষণায় এগিয়ে রয়েছে অনেকটাই। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন- জামিউর রহমান

যুক্তরাষ্ট্র : যুক্তরাষ্ট্র নিঃসন্দেহে এআই প্রযুক্তিতে বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসনে অবস্থান করছে। OpenAI, Google DeepMind, Microsoft, NVIDIA-এর মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের মাধ্যমে দেশটি প্রতিনিয়ত উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু গবেষণা নয়, বাস্তব জীবনের নানা খাতে যেমন- স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, স্বাস্থ্যগত বিশ্লেষণ, যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত বিশ্লেষণ এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রেও এআই-এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। ২০২৫ সালে ‘ATOM Project’ নামের একটি বৃহৎ উদ্যোগ চালু করে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, তারা ওপেন-সোর্স এআই-তে আবারও বিশ্বনেতা হওয়ার লক্ষ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দেশের নীতিনির্ধারকরাও এআই নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনা এবং আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।

চীন : চীন এআই ব্যবহারে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের মডেল অনুসরণ করছে- যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলগত লক্ষ্য অগ্রাধিকার পায়। চীন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এআই-কে ব্যবহার করছে জননিরাপত্তা, স্মার্ট সিটি এবং সামাজিক ব্যবস্থাপনায়। Facial recognition, surveillance, predictive policing-এর মতো খাতগুলোতে তারা অন্যদের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে। ২০২৫ সালে দেশটি ‘Project Spare Tire’ নামের এক প্রকল্পের মাধ্যমে নিজস্ব এআই চিপ তৈরি এবং প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা অর্জনের প্রচেষ্টায় নেমেছে। সাংহাইতে অনুষ্ঠিত WAIC সম্মেলনে চীন একটি আন্তর্জাতিক এআই নীতিমালাও প্রস্তাব করেছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ কৌশলেরই ইঙ্গিত দেয়।

যুক্তরাজ্য : যুক্তরাজ্য এআই গবেষণায় একটি ব্যতিক্রমধর্মী অবস্থান তৈরি করেছে, যেখানে নৈতিকতা, নিরাপত্তা এবং মানবিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান DeepMind এবং Alan Turing Institute এআই নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছে। স্বাস্থ্যসেবা, বায়োটেক, আইন ও অর্থনীতির খাতেও যুক্তরাজ্য ধীরে ধীরে এআই প্রযুক্তির বিস্তার ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি সরকার নতুন নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করছে যাতে নিরাপদ ও মানবিক এআই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।

কানাডা : উত্তর আমেরিকার আরেক দেশ কানাডাও এআই গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। মন্ট্রিয়লের Mila, টরন্টোর Vector Institute এবং অ্যাডমন্টনের AMII– এই তিনটি ইনস্টিটিউটকে কেন্দ্র করে দেশটি গড়ে তুলেছে এক শক্তিশালী গবেষণা পরিবেশ। ২০২৩ সালে কানাডা প্রায় ২.৪ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার বিনিয়োগ করেছে এআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তুলতে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে অংশ নিচ্ছে দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান, যা কানাডাকে এআই গবেষণার জন্য অন্যতম হাবে পরিণত করেছে।

জার্মানি : জার্মানি মূলত শিল্প খাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে এআই ব্যবহারকে বাস্তব ক্ষেত্রে রূপান্তর করছে। অটোমেশন, রোবোটিক্স ও ম্যানুফ্যাকচারিং-এ দেশটি Industry 4.0 ধারণার পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করছে। সরকার ঘোষিত ৬ বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ পরিকল্পনার মাধ্যমে গবেষণা, চিপ উন্নয়ন এবং শ্রমবাজারে এআই-এর ব্যবহার উৎসাহিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি জার্মান শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উৎপাদনপ্রক্রিয়ায় এআইকে একীভূত করে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যুক্ত করছে।

ভারত : ভারত এআই-এর ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে নবীন খেলোয়াড় হলেও অগ্রগমনের হার অত্যন্ত দ্রুত। দেশটির প্রযুক্তি খাতের বৈচিত্র্য এবং জনবলের বিশাল ভাণ্ডার তাকে এই খাতে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে। ভারতীয় স্টার্টআপগুলো BharatGPT এবং Krutrim-এর মতো জেনারেটিভ এআই মডেল তৈরি করে দেশীয় ভাষায় তথ্য ও সেবা প্রদানের চেষ্টা করছে। তবে এর পাশাপাশি রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জ, যেমন- কম কম্পিউটিং শক্তি, বিনিয়োগে ঘাটতি এবং মেধাপাচার। তথাপি, ২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জেনারেটিভ এআই ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে উঠে এসেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান : দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান প্রযুক্তি খাতে বরাবরই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, যা এআই-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৪ সালে ৯.৪ ট্রিলিয়ন ওন এআই-তে বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। রোবোটিক্স, স্মার্ট কার ও শহর ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করে তারা কৌশলগত সুবিধা নিচ্ছে। অপরদিকে, জাপান রোবোটিক্সে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ দক্ষ। তাদের কোম্পানি SoftBank, Fanuc ইত্যাদি এআই-নির্ভর উৎপাদন এবং স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

ইসরায়েল : ইসরায়েল, ছোট দেশ হলেও সাইবার সিকিউরিটি এবং প্রতিরক্ষা খাতে এআই ব্যবহার করে একটি বিশেষ অবস্থান তৈরি করেছে। টেকনিওন এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে ইসরায়েলের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

সিঙ্গাপুর : একইভাবে সিঙ্গাপুর ‘Smart Nation’ ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বড় ধরনের বিনিয়োগ ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। সরকারের পরিকল্পনায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবহন খাতকে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া চলছে।