ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৯:২৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

একজন ‘প্রধানমন্ত্রী’ ধর্ষণ করেছিলেন ভার্জিনিয়া জিউফ্রেকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৪ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের কাছে থাকা ভার্জিনিয়া জিউফ্রেকে অজ্ঞাতনামা একজন ‘প্রধানমন্ত্রী’ নির্মমভাবে মারধর ও ধর্ষণ করেছিলেন। তিনি ভয় পেয়েছিলেন, ‘হয়তো যৌনদাসী হিসেবেই তাঁর মৃত্যু হতে পারে।’

ভার্জিনিয়া জিউফ্রে তাঁর স্মৃতিকথায় এমনটা দাবি করেছেন। প্রায় ছয় মাস আগে অস্ট্রেলিয়ায় জিউফ্রে আত্মহত্যা করেন।

এপস্টেইন ও তাঁর চক্রের বিষয়ে জিউফ্রে লিখেছেন, ‘তাঁদের সঙ্গে থাকার সময় তাঁরা আমাকে বহু ধনী, ক্ষমতাবান মানুষের কাছে পাঠাতেন। নিয়মিতভাবে আমাকে ব্যবহার করা হতো এবং আমাকে অপমান করা হতো। কিছু ক্ষেত্রে আমাকে শ্বাসরোধ, মারধর এবং এমনকি রক্তাক্ত করা হতো।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি মনে করতাম, একজন যৌনদাসী হিসেবে আমার মৃত্যু হতে পারে।’

জিউফ্রের মৃত্যুর ছয় মাস পর গতকাল মঙ্গলবার তাঁর স্মৃতিকথা ‘নোবডি’স গার্ল’ প্রকাশিত হয়েছে। এতে কিশোরী বয়সে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতন এবং নিজের ও তাঁর সঙ্গে নির্যাতিত অন্য মেয়েদের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে তাঁর সংগ্রামের মর্মান্তিক বর্ণনা রয়েছে।

বইয়ের মার্কিন সংস্করণে জিউফ্রে দাবি করেছেন, তাঁকে একজন লোক ধর্ষণ করেছিলেন, যাঁকে তিনি শুধু ‘একজন সুপরিচিত প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাজ্যের সংস্করণে ওই অংশগুলো প্রায় অভিন্ন। তবে সেখানে ওই লোককে ‘একজন সাবেক মন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বইয়ের দুই সংস্করণে এই অসংগতির কারণ স্পষ্ট নয়।

এপস্টেইনের ক্যারিবীয় দ্বীপে থাকার সময় জিউফ্র কীভাবে তাঁকে এক লোকের কাছে পাচার করেছিলেন, সেই বর্ণনা রয়েছে। ওই ব্যক্তি তাঁকে আগেকার যে কারও চেয়ে বেশি নৃশংসভাবে ধর্ষণ করেছিলেন বলে লিখেছেন জিউফ্রে। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর।

জিউফ্রে লিখেছেন, ‘তিনি বারবার আমার গলা টিপে ধরেছিলেন, যতক্ষণ না আমি জ্ঞান হারাই এবং আমাকে ভয় পেতে দেখে তিনি আনন্দ পেতেন। যখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভয়াবহভাবে আঘাত করতেন, তখন তিনি হাসতেন। আমি যখন তাঁকে থামতে মিনতি করতাম, তখন তিনি আরও বেশি উত্তেজিত হতেন।’

জিউফ্রে লিখেছেন, ‘পরে আমি অশ্রুসিক্ত চোখে এপস্টেইনের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, যেন তিনি আমাকে আর ওই ব্যক্তির কাছে আর না পাঠান।’

জিউফ্রে স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘আমি তাঁর পায়ে ধরে অনুরোধ করেছিলাম। আমি জানি না, এপস্টেইন লোকটিকে ভয় পেতেন নাকি তাঁর কাছে ঋণী ছিলেন। তিনি আমাকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি; বরং রাজনীতিবিদের নৃশংসতার কথা শুনে নির্দয়ভাবে বলেছিলেন, “কখনো কখনো তুমি এমনটাই পাবে।”’

জিউফ্রের এই স্মৃতিকথা এপস্টেইনের সঙ্গে ধনী ও ক্ষমতাশালী মানুষের কাছাকাছি থাকার কেলেঙ্কারিকে আরও তীব্র করবে। এ ঘটনা যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে মার্কিন কংগ্রেসকে পর্যন্ত নাড়া দিয়ে যাচ্ছে।

বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ওপর নতুন করে নজরদারি বাড়বে। যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের এই সদস্যের বিরুদ্ধে জিউফ্রে অভিযোগ এনেছিলেন, তিনি কিশোরী থাকাকালে এই ব্যক্তি তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিলেন।

বর্তমান রাজা চার্লসের ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।

স্মৃতিকথায় জিউফ্রে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তিনি তিনবার যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এর মধ্যে একবার যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সময় জেফরি এপস্টেইন ছাড়াও আরও আটজন তরুণী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

জিউফ্রে ও লেখক অ্যামি ওয়ালেস মিলে নতুন বইটি লিখেছেন।

স্মৃতিকথায় জিউফ্রে বলেছেন, ২০০১ সালের মার্চে তিনি প্রথমবার প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এপস্টেইনের বান্ধবী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে জাগিয়ে বলেছিলেন, দিনটি একটি ‘বিশেষ দিন’ হবে এবং ‘সিন্ডারেলার মতো’ তিনি একজন সুদর্শন প্রিন্সের দেখা পাবেন।

জিউফ্রে আরও বলেছেন, দিনের শেষের দিকে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যখন তাঁর দেখা হয়, ম্যাক্সওয়েল তাঁকে (অ্যান্ড্রু) বলেছিলেন তাঁর (জিউফ্রে) বয়স অনুমান করতে।

অ্যান্ড্রুর বয়স তখন ৪১ বছর ছিল। তিনি যথাযথভাবেই জিউফ্রের বয়স বলতে পেরেছিলেন। তখন জিউফ্রের বয়স ছিল ১৭ বছর।