ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:১৫:৪৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

তীব্র তাপদাহে চুয়াডাঙ্গায় ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২৩ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে ও তাপদাহে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দীর্ঘদিন বৃষ্টির দেখা নাই। বৃষ্টির অভাবে গরম বেড়ে যাওয়ায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে প্রচুর মকুল আসে। সেই তুলনায় গুটিও এসেছে প্রচুর, কিন্তু বৃষ্টির অভাব তাপদাহে ঝরে যাচ্ছে এসব গুটি। আম বাগানে গাছের নিচে গেলে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য গুটি পড়ে আছে। কোনোভাবে রোধ করতে পারছেন না আম চাষিরা।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ জেলায় এবছর আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১৯১ হেক্টর জমিতে কিন্তু আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭৪ হেক্টর বেশি। এতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৬০ কোটি টাকা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আম চাষি ইকরামুল হক বলেন, “এ বছর কোনো বৃষ্টিই নেই। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। গরমের কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমগাছে সেচ দেওয়া হচ্ছে, তারপরও গুটি টিকানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আম নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হবে আমাদের।”

আম ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, “আমের মুকুল দেখে তিনটা বাগান কিনেছিলাম। প্রচুর পরিমাণ গুটিও এসেছে এই বছর। কিন্তু প্রচণ্ড তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। সেচ দিয়ে আমের গুটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু এত গরমে তাও হচ্ছে না।”

আমচাষি ও ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, “গত বছরের তুলনায় এই বছর আমের মুকুল ও গুটি এসেছে প্রচুর পরিমাণ। গত বছর শিলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। আশা ছিল, এই বছর সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। কিন্তু তীব্র তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি পানি দিয়ে ঝরে পড়া রোধ করার, তারপরও ঝরে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা চিন্তিত “

এদিকে, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সোমবার একই সময়ে ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও গত রোববার (২ এপ্রিল) থেকে টানা ১০ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে এ জেলায়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রতিদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এজেলায় টানা ১০ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। তার সঙ্গে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে একটানা ৮ দিন ধরে। তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। 

তিনি আরও জানান, এ জেলায় চলমান তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে অতিতের রেকর্ড ভাঙতে পারে। এবছর বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। মার্চে মাত্র ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এপ্রিলে এখন পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত কোন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও নেই।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, মৌসুমের শুরুতে আম গাছে প্রচুর পরিমাণ মুকুল ছিল। সেই তুলনায় গুটিও এসেছে অনেক। এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্রতাপদাহ। প্রচণ্ড রোদের উত্তাপ ও গরমের কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। এখন পর্যন্ত আমে যে গুটি রয়েছে তা ধরে রাখতে পারলে বাগান মালিকরা ভালো ফলন পাবেন। বৃষ্টিপাত হয়ে গেলে এসমস্যা থাকবে না। 

তিনি আরও বলেন, আমরা চাষি ও ব্যবসায়ীদের আম গাছে পানি সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। যে কয়দিন বৃষ্টিপাত না হবে সেই কদিন আমবাগানে খুব ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। সেচ দেওয়ার পর আমগাছের গোড়ায় মাঞ্চিং করে দিতে হবে। প্রয়োজনে বড় বড় গর্ত করে পানি ধরে রাখতে হবে গাছের পাশে। তাতে কিছুটা রস ধরে থাকলে গুটি পড়া রোধ হবে। একই সঙ্গে বোরন, দস্তা ও জিংক জাতীয় যে ওষুধ পাওয়া যায়, তা গাছে প্রয়োগ করলে সমস্যা কিছুটা সমাধান হবে।