ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮, জুলাই ২০২৫ ১৮:৪২:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু ২৪ জুলাই চীনে স্কুলের খাবার খেয়ে হাসপাতালে ২৩৩ শিশু গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের প্রাণহানী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল দেখবেন যেভাবে দুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা

মঙ্গলে কেন প্রাণ নেই, রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:০৯ পিএম, ৩ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মঙ্গল গ্রহ, বার বার আলোচনায় আসে। পৃথিবীর মতোই অনুরূপ বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও মঙ্গল গ্রহে কেন প্রাণের অস্তিত্ব নেই, যেখানে পৃথিবীতে প্রাণ ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। নাসার এক রোভার সম্প্রতি এমন একটি সূত্র খুঁজে পেয়েছে, যা এই প্রশ্নের জবাবের একটি সম্ভাব্য দিক উন্মোচন করেছে।

নতুন গবেষণা বলছে, মঙ্গলে এক সময় অল্প সময়ের জন্য নদী ও হ্রদ প্রবাহিত হলেও পুরো গ্রহটি মূলত মরুভূমিতেই পরিণত হয়েছিল। ফলে প্রাণ বিকাশের সম্ভাবনা স্থায়ী হয়নি।

মঙ্গল গ্রহে প্রাণ সৃষ্টির উপাদানগুলোর অনেকটাই থাকলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তরল পানি সম্ভবত দীর্ঘসময় ছিল না। অথচ প্রাচীন নদী ও হ্রদের নিদর্শনে বোঝা যায়, এক সময় এখানে পানি প্রবাহিত হয়েছিল।

চলতি বছরের শুরুতে, নাসার কিউরিওসিটি রোভার এমন কিছু শিলা আবিষ্কার করে, যেগুলোতে কার্বনেট খনিজের উপস্থিতি রয়েছে। পৃথিবীতে এরকম খনিজ, যেমন লাইমস্টোন, বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে শিলায় আটকে রাখে।

বুধবার ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এই কার্বনেট শিলার প্রভাব মডেল করে দেখিয়েছেন যে, কীভাবে এটি মঙ্গলের আবহাওয়া ও জলবায়ুর গতিপথকে বদলে দিতে পারে।

গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহবিজ্ঞানী এডউইন কাইট বলেন, ‘মঙ্গল গ্রহে কিছু নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বসবাসযোগ্য পরিবেশ ছিল।’ তবে এই ‘ওএসিস’গুলো ছিল ব্যতিক্রম, নিয়ম নয়।

পৃথিবীতে কার্বন ডাইঅক্সাইড আবহাওয়া উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে, যা পরে শিলায় জমা হয় এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু ভারসাম্য বজায় থাকে। কিন্তু মঙ্গলে আগ্নেয়গিরির গ্যাস নিঃসরণের হার তুলনামূলকভাবে খুবই কম, ফলে এই প্রাকৃতিক চক্রটি ব্যাহত হয়েছে।

মডেল অনুযায়ী, মঙ্গলে তরল পানির সংক্ষিপ্ত উপস্থিতির পর প্রায় ১০ কোটি বছরব্যাপী তা মরুভূমিতে রূপ নেয়, যা প্রাণ টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত দীর্ঘ ও কঠিন সময়।

কাইট বলেন, এখনও মঙ্গলের গভীরে তরল পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে, যা আমরা আবিষ্কার করতে পারিনি। নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার ২০২১ সালে মঙ্গলের একটি প্রাচীন ডেল্টায় অবতরণ করে এবং সেখানে কার্বনেটের চিহ্ন খুঁজে পায়।

বিজ্ঞানীরা এখন আরও বেশি কার্বনেট খুঁজে পেতে চান, যার সেরা উপায় হলো মঙ্গলের শিলা পৃথিবীতে এনে পরীক্ষা করা। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আগামী এক দশকের মধ্যেই এ লক্ষ্যে প্রতিযোগিতায় রয়েছে।

এই অনুসন্ধানের মূল প্রশ্ন- পৃথিবীর মতো প্রাণ বহনকারী গ্রহ কি বিরল? ১৯৯০ এর দশকের পর থেকে বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের বাইরের প্রায় ৬ হাজার গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। তবে কেবল পৃথিবী ও মঙ্গলেই এমন শিলা পাওয়া যায়, যা দিয়ে তাদের অতীত বোঝা সম্ভব।

কাইট বলেন, যদি প্রমাণ হয় যে মঙ্গলের পানিপূর্ণ যুগেও কোনো প্রাণ জন্ম নেয়নি, তাহলে বোঝা যাবে, মহাবিশ্বে প্রাণ সৃষ্টির প্রক্রিয়া বেশ কঠিন। আর যদি প্রাচীন প্রাণের কোনো নিদর্শন পাওয়া যায়, তাহলে তা হবে সুস্পষ্ট বার্তা: ‘গ্রহ পর্যায়ে প্রাণ সৃষ্টি অনেক সহজ’।