ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, ডিসেম্বর ২০২৫ ২:১৯:১৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘ভারতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে টানাপড়েন আছে’ বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে তলব করে যা জানিয়েছে ভারত মা-মেয়ে হত্যা : সেই গৃহকর্মীর দোষ স্বীকার যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি চালকের অমর একুশে বইমেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি

‘১৯৫২’র ভাষা শহীদরাই ‘৭১ এর মুক্তিসংগ্রামের অনুপ্রেরণা’

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৪২ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদরাই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা। তারাই মুক্তিসংগ্রামের ক্ষেত্র তৈরি করেছেন। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই সকল আন্দোলন-সংগ্রামের ডালপালা গজিয়েছিল। এজন্য ভাষা আন্দোলন বাঙালির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনই মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার।’ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বক্তারা।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন আমাদের সকল অনুপ্রেরণার উৎস। ভাষা আন্দোলনই আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে প্রতিরোধ করতে হয়, কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন ঢেলে দিতে হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি একটা সময় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ব্যাপকভাবে বিকৃত করা হয়েছে। একুশকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু একুশের আগেও যে ভাষা আন্দোলন হয়েছে, সংগ্রাম হয়েছে- সেটিকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে লুকিয়ে রাখতেই এটি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানিরা বাংলাকে গভীরভাবে অপছন্দ করতো। তারা তাদের হীনমন্যতার কারণেই এটি করতো। কারণ ভাষা হচ্ছে সাংস্কৃতির আধার। এটিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারলেই সাংস্কৃতি বাধাগ্রস্ত হবে। সেই চিন্তা থেকেই তারা এটি করেছে।’ সর্বস্তরে বাংলা ভাষা নিশ্চিতের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে শিক্ষা যে কতমুখি তার শেষ নেই। ভাষা শেখার গোড়াতেই গলদ। আমরা এখন ভাষাটাকে রপ্ত করতে চেষ্টা করছি। একমুখি শিক্ষা চালুর চেষ্টা করছি নতুন কারিকুলামে। যে যে মাধ্যমে পড়ুক সবাই যেন একটি জায়গা পর্যন্ত একই ধারার শিক্ষা লাভ করতে পারি সে চেষ্টা করছি।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘পাকিস্তান-ভারত সৃষ্টির সঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টির রাজনৈতিক ইতিহাস ভিন্ন। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছে সাংস্কৃতিক আলোড়ন, লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে। বঙ্গবন্ধুর সেই সাংস্কৃতিক জাগরণ, রাজনৈতিক লড়াই- অত:পর সমাজ গঠনের জায়গায় দ্বিতীয় বিপ্লব ঘোষণা করেছিলেন। একটি মানুষ তার জীবনে রাজনৈতিক এবং সমাজ কাঠামো পরিবর্তনের লড়াই এবং তার প্রবক্তা হওয়া একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এটি ইতিহাসে ব্যতিক্রম। একজন নেতার শুধু এতোগুলো আন্দোলনই নয়, একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টির ইতিহাস তাঁর হাতে রচিত। সুতরাং আমরা সৌভাগ্যবান, বাংলাদেশ আজকে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা মাকে বিকৃত করে আমরা যেমন কোন আনন্দ পাই না। ঠিক মাতৃভাষা যখন বিকৃত হয় তখন মায়ের মুখ যেমন মলিন হয়, বিকৃত ভাষায় মাতৃভাষা তাই হয়।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘তোমাদের দ্বারা মাতৃভাষা যেন আরও শুদ্ধ হয়। তোমাদের দ্বারা আমাদের আগামী দিনের লেখক, কবি, সাহিত্যিক যেন সৃষ্টি হয়। এই প্রযুক্তির যুগে তুমি সবকিছু করবে। কিন্তু মাতৃভাষার মর্যাদাকে সুউচ্চ রাখতে, ওই ভাষা লিখতে, পড়তে, বলতে তাঁর শুদ্ধ উচ্চারণে হতে হবে আপোষহীন। প্রিয় মাতৃভূমিকে যদি আরও ভালোবাসতে পারি, মা, মাটি, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমি এটি আরও শুদ্ধ হয়, দক্ষ হয় তবেই তুমি বিশ্ব নাগরিক হবে। তুমি গর্ব করে বলতে পারবে- আমি বাঙালির সন্তান, বাংলা আমার ভাষা। যারা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে মাতৃভাষা, রাষ্ট্রভাষার মান রাখতে হয়, প্রাণ দিয়ে জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করতে হয়- তাদেরকে আমাদের মধ্যে ধারণ করতে হবে। আমরা চাই আমাদের হাত দিয়ে মাতৃভাষা শুদ্ধ হউক। আমাদের হাত দিয়ে জাতিরাষ্ট্র পুনর্গঠিত হউক। অর্থনীতি বিনির্মিত হউক-তাহলেই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন স্বার্থক হবে।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান, আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুড়িগ্রাম ল’ কলেজের অধ্যক্ষ এস মে আব্রাহাম লিংকন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। আলোচনা সভা শেষে সরকারি সংগীত কলেজের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।