ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩২:১০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

আজ জাতিসংঘে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী:রোহিঙ্গা সঙ্কট তুলে ধরবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত :

জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আজ শনিবার নিউ ইয়র্কে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে বিশ্বনেতাদের সামনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের ‘মূল কারণগুলো’ তুলে ধরে তা নিরসনে বাংলাদেশের প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।

জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে আবুধাবির উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে রোববার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাবেন তিনি।

নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশন শুরু হয়েছে। আগামী ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর চলবে সাধারণ বিতর্ক, যেখানে এই বিশ্ব সংস্থার ১৯৩টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পক্ষে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন।

এবার এমন এক সময়ে বিশ্ব নেতারা জাতিসংঘ অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন, যখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গার পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছেও সমালোচিত হচ্ছেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও তিনি এবার জাতিসংঘ অধিবেশনে যাচ্ছেন না বলে মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই সঙ্কটের মুহূর্তে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণগুলো প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরবেন। পাশাপাশি সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের সুস্পষ্ট প্রস্তাব তিনি জাতিসংঘে উপস্থাপন করবেন।

গত বছর অক্টোবরে রাখাইনে সেনা অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘনর প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশন তাদের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের কথাও বাংলাদেশের প্রস্তাবে থাকবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম সাধারণ অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন এই বিশ্ব সংস্থার রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সঙ্কট যে এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়, জাতিসংঘ মহাসচিবও সে কথা বলেছেন।

২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর ওইদিনই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

তার আগে ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত ‘জাতিসংঘ সংস্কার’ বিষয়ক এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।

‘গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ’ বিষয়ক এক ফলোআপ বৈঠকেও তার অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে ওইদিন।

১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। অন্যান্য দেশের নেতারাও সেখানে থাকবেন।

একই দিনে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের সভাপতিত্বে ‘উইমেন্স ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট ফর লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে ওআইসি কনট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠকে যোগ দেবেন।

ওইদিন সন্ধ্যায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও কমনওয়েলথের বর্তমান চেয়ার-ইন অফিস মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকেট আয়োজিত কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। পরে ম্যাডিসন অ্যাভিনিউয়ের প্যালেস হোটেলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

রাতে নিউ ইয়র্কের ম্যারিয়ট স্কয়ারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অয়োজিত একটি সংবর্ধনা সভাতেও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

তিনি ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদপ্তরে পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ‘এসডিজি ইমপ্লিমেন্টেশন, ফাইন্যান্সিং অ্যান্ড মনিটরিং: শেয়ারিং ইনোভেশনস থ্রু সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রাইয়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। ইউএনডিপি ও ইউএন অফিসের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

একই দিনে ‘ক্রিয়েটিং এ পলিসি ভিশন ফর এসডিজি ফাইন্যান্স: ফ্যাসিলিটেটিং প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য এসডিজিস শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিজনেস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বিসিআইইউ) আয়োজিত একটি মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে ইথিওপিয়ার প্রতিনিধিদল আয়োজিত একটি উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত আলোচনাতেও সেদিন যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া এবং মহাসচিবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও পানি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের একটি প্যানেলের চতুর্থ বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

সেদিন সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এই সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসবেন প্রধানমন্ত্রী।

সফর শেষে ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।