ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:৩৬:২৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

নারীর ক্ষমতায়নে এগিয়ে বাংলাদেশ

রাতুল মাঝি | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০১:৫৮ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার

নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ৬২ শতাংশ নারী আয়বর্ধক কাজে জড়িত। দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার সর্বোচ্চ। ৫০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে এই হার সবচেয়ে বেশি। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে কৃষিক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই নারীরা।

 

স্থানীয় প্রশাসনের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ দৃপ্ত। ইউপি, উপজেলা, জেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব তাদের সৃজনশীলতা দ্বারা, তাদের সঠিক বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সমাধান করে চলেছে সাধারণ জনগণের নানা সমস্যার।

 

প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিসভা, প্রশাসন, সব খাতেই নারীদের অগ্রযাত্রা দৃশ্যমান। বিশ্বের আর কোনো দেশের রাজনীতিতে নারীর এত উচ্চাসন নেই।

 

হার্ভার্ড ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘দ্যা গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট, ২০১৫ অনুযাীয় রাষ্ট্রক্ষমতায় নারীর অবস্থান বিবেচনায় সবাইকে পেছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অষ্টম।

 

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারীর অগ্রগতির নানা সূচকে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দ্যা গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে সার্বিক বিবেচনায় নারী উন্নয়নে বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে এবার জায়গা করে নিয়েছে ৬৪ নম্বরে।এই তালিকায় ভারতের অবস্থান ১০৮ ও পাকিস্তান ১৪৪ নম্বরে।

 

২০০৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯১ নম্বরে। মাত্র ১০ বছরে দেশ নারী উন্নয়নে যতটা এগিয়েছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এতটা পারেনি বলে প্রতিবেদনটিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, নারীর স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি উন্নত করা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।

 

নারীনির্ভর পোশাক শিল্প : দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত পোশাকশিল্পে কর্মরতদের প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী। প্রায় ২৫ লাখ নারী এ খাতে কর্মরত। হাজার বছর ধরে যেসব নারীদের রাখা হয়েছিল মূল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বাইরে, এখন তারাই হয়ে উঠেছে বিদেশি মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান শক্তি। চা ও চামড়াশিল্পেও ব্যাপকভাবে কাজ করছে নারীরা।


শিক্ষায় মেয়েরা এগিয়ে : দেশে বর্তমানে নারী শিক্ষার্থীরা যে জায়গাগুলোতে এগিয়ে রয়েছে তার একটি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়ে শিশু ভর্তির হার। সরকারি হিসেবে, বাংলাদেশের প্রাথমিক পর্যায়ে বর্তমানে ভর্তির হার শতকরা ৯১ শতাংশ। আর ছেলে শিশুর ভর্তির হার ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

 

গত কয়েক বছরের এসএসি ও এইচএসসির ফলাফলেও দেখা গেছে, সব কয়টি শিক্ষাবোর্ডেই মেয়ে শিক্ষার্থীরা ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন অথবা সমান ফলাফল করছেন। এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডেও মেয়েরা পিছে ফেলেছে ছেলেদের।

 

উচ্চশিক্ষাতেও মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সব সরকারই শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সেই সঙ্গে মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর জন্য নানা ধরনের উৎসাব্যজ্ঞক নীতি গ্রহণ করেছে। এসব উদ্যোগ মেয়েদের শিক্ষার হার প্রায় শতভাগে পৌঁছানোর ক্ষেএে বড় ভূমিকা রেখেছে।

 

 

বিসিএসে নারীর জয় : গত কয়েক বছর ধরেই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বাড়ছে। ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে যে ২০২০ জন নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে ৬৯৯জনই নারী। শতকরা হিসেবে যা ৩৪.৬ শতাংশ। কেবল সংখ্যায় নয়, শিক্ষা বাদে ২০টি ক্যাডারে নিয়োগ পরীক্ষার আটটিতেই প্রথম হয়েছেন নারী। আর শিক্ষার ৩০টি বিভাগের মধ্যে ১৩টিতেই প্রথম হয়েছেন নারী প্রার্থী।

 

বেশ কিছু ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে শতভাগই নারী। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো এক বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে এত বেশি নারী নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়া প্রথম ১০ কর্মকর্তার মধ্যে নারী ছয়জন।

 

সশস্ত্র বাহিনীতে নারী : ৯০ দশকের মাঝামাঝিতে সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের নিয়োগ ছিল এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সেনা, বিমান ও সেনাবাহিনীতে নারী অফিসার নিয়োগ নারী উন্নয়নে এবং নারী জাগরণে এক নতুন মাইলফলক। ১৯৯৬ সাল থেকে এই নিয়োগ শুরু হয়।

 

এখন বিমানবাহিনীর প্যারাট্রুপারও রয়েছেন নারী। আর বিমানবাহিনীর জঙ্গি বিমানও উড়াচ্ছেন নারী পাইলট। চলতি বছরই প্রথমবারের মতো সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিতেও নিয়োগ হয়েছে নারী ব্যাটালিয়ন।