ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৪:২৯:২৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

নিজবাড়ির `শেষ ছবি` শেয়ার করে তেহরান ছাড়ছেন ইরানি নারী-পুরুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ১৯ জুন ২০২৫ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি  

সংগৃহীত ছবি  

ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণের মধ্যে ইরানের রাজধানী তেহরান ছেড়ে যাচ্ছেন বহু বাসিন্দা। অজানা অনিশ্চয়তা আর প্রাণভয়ের মধ্যে শহর ছাড়ার আগে তারা নিজেদের ঘরের শেষ ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করছেন। ছবিগুলোর শিরোনাম– 'দ্য লাস্ট ফটো অফ হোম', অর্থাৎ ‘বাড়ির শেষ ছবি’।

ছবিগুলোর বেশিরভাগেই দেখা যাচ্ছে সাজানো-গোছানো ঘর, খালি সোফা, জানালার পর্দা, সুটকেসে ভরা জিনিসপত্র আর ঘরের কোণায় রাখা টবের গাছ। এসব ছবির পেছনে লুকিয়ে আছে একটি অশ্রুসিক্ত বিদায়ের গল্প।

“বাড়ি ছেড়ে যাওয়া মানে যেন হৃদয়ের একটা অংশ ফেলে যাওয়া”

একজন ইরানি নারী লিখেছেন, ‘গাছগুলোতে পানি দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। জানি না কোনোদিন আবার ফিরে এসে এসব দেখব কি না।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘যেসব জিনিস পেতে রাতজেগে কাজ করেছি, সেগুলোকে বিদায় জানালাম। আশা করি, আমি ফিরে এলে এগুলো ঠিকঠাকই থাকবে।’

তেহরান ছাড়ার সিদ্ধান্তের পেছনে আতঙ্ক, দুর্বিষহ যানজট ও নিরাপত্তাহীনতার বড় ভূমিকা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, তারা বাঁচার জন্যই যাচ্ছেন, আবার অনেকেই বলছেন, কোথাও যাওয়ার উপায়ই নেই তাদের।

সবাই কিন্তু শহর ছাড়তে পারছেন না। একজন গর্ভবতী নারী বলছেন, ‘আমার ছোট মেয়ে আছে, এতটা যানজটে আমি কীভাবে বাঁচব?’

আরেক নারী জানান, তেহরান থেকে শিরাজে ৮০০ কিলোমিটার একা ড্রাইভ করে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চান না, বিশেষ করে যখন জ্বালানি সংকট চলছে।

অনেকে জানিয়েছেন, সাধারণত ১০-১২ ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে এখন সময় লাগছে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত। জ্বালানির সংকট আর যানজট মিলিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক জটিল বাস্তবতা।

তেহরানের এক ৪০ বছর বয়সী নারী বলেন, ‘করোনা, মুদ্রাস্ফীতি, যুদ্ধ সব কিছু মোকাবিলা করে এই জায়গায় এসেছি। এখন যদি আমার সবকিছু ধ্বংস হয়, তাহলে বরং এখানেই আমার আর আমার সন্তানদের শেষ হোক। নতুন করে শুরু করার শক্তি আমার আর নেই।’

দেশের বাইরে থাকা লাখো ইরানিরাও প্রিয়জনদের জন্য উদ্বিগ্ন। অনেকেই জানাচ্ছেন, অনুরোধ করেও পরিবারকে সরিয়ে আনতে পারছেন না। একজন প্রবাসী জানান, তার তেহরানবাসী আত্মীয় শুধু এক লাইন জবাব দিয়েছেন, ‘কারও অর্থ নেই, কারও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই আমাদের শহর ছাড়তে বলো না।’

এই মুহূর্তে তেহরান যেন এক শূন্যতা ও উৎকণ্ঠার শহর। সবার মনে একটাই প্রশ্ন– ‘ফিরে আসা যাবে তো?’ আর ততদিন পর্যন্ত, সোফার পাশের গাছটার ছায়ায়, জানালার পর্দার নীচে কিংবা হেডফোন রেখে যাওয়া ডেস্কে শুধু অপেক্ষা জমে থাকে।