ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ০:৪৩:০৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েল, ক্ষোভ বাড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫২ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৫ রবিবার

বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েল, ক্ষোভ বাড়ছে

বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েল, ক্ষোভ বাড়ছে

ইসরায়েলজুড়ে গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও হামাসের হাতে আটক সব জিম্মিকে দ্রুত মুক্ত করার দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ ও ধর্মঘট চলছে। গত সোমবার সকাল থেকেই শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সাধারণ নাগরিক, জিম্মিদের পরিবার, নিহতদের স্বজন, শিক্ষাবিদ, বিরোধীদলীয় গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা একত্রিত হয়েছেন।

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘অক্টোবর কাউন্সিল’ নামে গঠিত একটি সংগঠন, যেটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে।

আন্দোলনের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হলো— জিম্মিদের জীবিত অবস্থায় দ্রুত ফিরিয়ে আনা ও গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানো।

সকাল ৬টা ২৯ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। সময়টি প্রতীকী, কারণ ওই সময়েই গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। শুরু থেকেই সারাদেশের প্রায় ৩০০ স্থানে চলছে প্রতিবাদ। উত্তরের দান থেকে দক্ষিণের এলিয়াত পর্যন্ত মহাসড়ক, রাস্তার মোড়, শহরের প্রবেশপথ ও প্রধান ট্রাফিক পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

তেল আবিবে হোস্টেজ স্কোয়ারকে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু করা হয়েছে। দিনব্যাপী এই স্কোয়ারে জিম্মিদের পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা বক্তব্য রাখছেন। এর আগে, সকালে আরলোসরফ ট্রেন স্টেশন থেকে একটি বড় মিছিল সেখানে গিয়ে সমবেত হয়।

দিনব্যাপী ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন সেখানে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছে। সকাল ৭টায় জিম্মিদের স্বজনরা সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিজ ইচ্ছায় কাজে না যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

ইসরায়েলের জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন হিস্টাড্রুট আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটে না গেলেও, তাদের সদস্যদের এই আন্দোলনে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অন্তত ৯০টি পৌরসভা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গাজা সীমান্তবর্তী কিছু কিবুত্জ এবং স্থানীয় প্রশাসনিক পরিষদ সরাসরি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।

আন্দোলনের আয়োজকেরা বারবার বলছেন, এই বিক্ষোভের একমাত্র লক্ষ্য হলো, জিম্মিদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানো এবং যুদ্ধে জড়িত সেনাদের জীবন রক্ষা করা। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দাবিকে সামনে এনে বিভ্রান্ত করার জন্য নয়।

তারা বলছেন, আমরা এখানে একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে দাঁড়িয়েছি, জিম্মি ও সেনাদের জীবন রক্ষা। অন্য দাবি বা বার্তা অন্য দিনে তোলা যাবে। আজ আমরা একটাই কথা বলব, যুদ্ধ থামাও, জিম্মিদের ফেরাও।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা দেশজুড়ে হাজার হাজার পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী মোতায়েন করেছে, যাতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার থাকলেও কেউ যেন আগুন জ্বালানো, রাস্তা অবরোধ বা জনজীবন ব্যাহত না করে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু সেটা যদি সহিংস বা বিশৃঙ্খল হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি হচ্ছে, ৭ অক্টোবর হামলার ব্যর্থতা নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা। আয়োজকেরা বলছেন, সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া দরকার।

এদিকে, দেশজুড়ে চলমান এই আন্দোলন ইসরায়েল সরকারের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করেছে। কারণ, গাজা যুদ্ধ কয়েক মাস ধরে চললেও অনেক জিম্মির এখনো খোঁজ নেই। দিন দিন জনগণের ভেতরে ক্ষোভ বাড়ছে, বিশেষ করে যেসব পরিবার এখনো প্রিয়জনদের মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

তেল আবিব, হাইফা, জেরুজালেম, বিয়ারশেভা, নেস জিয়োনা, আশদোদসহ অনেক শহরে আন্দোলনের তীব্রতা বেশি।