ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ২৩:১৫:০০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক: প্রধানমন্ত্রী সবজির বাজারে স্বস্তি নেই যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ

সাংবাদিক মনু’র ‘কবিতা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:২৫ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

আজ ২১ অক্টোবর ওয়াইডব্লিউসিএ মিলনায়তনে বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক, নারী অধিকার কর্মি দিল মনোয়ারা মনু’র ‘কবিতা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ গ্রন্থে মোড়ক উম্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কবি, কথা সাহিত্যিক কাজী মদিনা।  এসময় আলোচনায় অংশ নেন, প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক আনোয়ার সৈয়দ হক, দৈনিক প্রথমআলো’র সহযোগী সম্পাদক বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও কচি-কাঁচার মেলার সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজ; নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু এবং এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।

স্বাগত বক্তব্যে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শামসুল হুদা বলেন, দিল মনোয়ারা মনুর রচিত বইটি প্রকাশিত হয়েছে সেই লেখাগুলো ৪৫-৪৬ বছর আগের। ৮০-৮১ সালে লেখাগুলো বিভিন্ন পত্রিকার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এই বইটা প্রকাশ করতে গিয়ে আমি চমকৃত হয়েছি। তার লেখনির মধ্যে দিয়ে আদর্শ ও লক্ষ্য চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে, লেখনির মধ্যে দিয়েই তিনি স্পষ্ট করেছেন কোন পথে যেতে হবে। এটাই তার মুন্সিয়ানা।
অধ্যাপক ড. রওশন আরা ফিরোজ বলেন, স্বামী সবাই হয়। কিন্তু জীবনের চলার পথের সারথী সবাই হতে পারে না, প্রেরণার উৎস হতে পারে না। আমরা দেখি, স্ত্রীরা স্বামীর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য অনেক কিছুই করে। কিন্ত এক্ষেত্রে দেখেছি শামসুল হুদা উদাহরণ সৃষ্টি করছেন। মনুর লেখাতেই নারী অধিকার, বৈষম্যের কথা উঠে আসতো। এমনকি তার জীবনের প্রতিটি কাজেই এই বিষয়টি উঠে আসতো। মনু ছিলো একজন মানবদরদী, এক্টিভিষ্ট। তরুণ বয়সে লেখা হলেও লেখাগুলোতে ছিলো গভীর চিন্তার, দর্শনের প্রতিফলন। বিভিন্ন প্রথিতযশা ব্যক্তি, লেখক, কবিদের আদর্শ ও দর্শনের কথা এতে তরুণ প্রজন্মদের সামনে তুলে ধরেছেন। কবি সুফিয়া কামাল, মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা’র মতো কবিদের চিন্তা তার কর্ম দেশ ও রাজনৈতিক, সমাজিক সকল ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য তিনি। মনুকে স্মরণ করি।

সিনিয়র সাংবাদিক ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রর সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বইয়ের মোড়ক উন্মোচর করে বলেন, মনু একজন কবি, লেখক সর্বপরি সমাজকর্মি ছিলেন। তার পরিবার এখানে সমবেত হয়েছি। কারণ তিনি সকলেই পরিবারের সদস্য হিসেবেই ভাবতেন। সকলেই সহজে আপন করে নিতেন। 
‘অনন্যা’ পত্রিকাকে একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য মনুর অবদান ছিলেন ব্যাপক। তিনি শিশুদের জন্য অনেক কাজ করতেন। তাদের বিকাশের জন্য অনেক ভাবনা ছিলো। তাইতো তিনি কচিকাঁচার মেলার সাথে জড়িত হন এবং দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন। নারী অধিকাররের জন্য কাজের জন্য তার যে ডেডিকেশন তার অবর্ননীয় ছিলো। সারা জীবনই সে নারীর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তার কণ্ঠ সবসময়ই চিলো সোচ্চার। শুধু কাজ এবং কথাতেই নয় তার লেখার মধ্যে দিয়েই তা প্রকাশ হতো। তার লেখাগুলো নারী অধিকার, নারী বৈষম্য বিরুদ্ধে ছিলো ক্ষুরধার হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল যা এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
প্রখ্যাত লেখিকা, কথা সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, মনুকে যাতে আমরা ভুলে না যাই সে জন্য এ জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজন আমাদের অনুপ্রাণীত করে। মনু যা করেছে তা বইতে আছে। অন্যন্যা পত্রিকাকে মনু জনপ্রিয় করতে অবদান রেখেছে। মনু তাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে তথ্য বের করে তাদের জন্য অন্যন্যা পত্রিকায় লিখতেন। এভাবেই অন্যন্যাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। মনু সব সময় সকল কবি সম্পর্কে খোঁজ রাখতেন। প্রয়োজন পরলেই সকলের পাশে দাঁড়াতেন। দুঃখজনক যে, আমাদের দেশে কবি সাহিত্যিকদের মর্যাদা দেয়া হয় না। অনেক বিখ্যাত প্রখ্যাত কবি সাহিত্যিক আছে যাদের সম্পর্কে এই প্রজন্ম যানেও না। এই দায় রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রেকেই তাদের মূল্যায়নের জন্য প্রকৃত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কবি লেখক সোহরাব হাসান বলেন, মনু আপাকে সামাজিক আন্দোলনে দেখা যেতো। কচিকাঁচার মেলাকে দাড় করানোর জন্য তার অবদান অনেক। মানুষ চলে যাবার পরেই তার মূল্যায়ন হয়। তাকে নিয়ে স্মারক গ্রন্থ হয়েছে তা তাকে আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি যখন বেগমে ছিলেন, নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন সেই পত্রিকাতেই তিনি নারী অধিকার নিয়ে, নারীদের অসহায়ত্ব, বৈষম্য নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কখনই বিরূপ মন্তব্য করেত শুনি নাই। সমাজে একজন নারীর বেড়ে উঠা অত্যন্ত কঠিন যখন আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পুুরুষতান্ত্রিক। সেই অবস্থা থেকে দিল মনোয়ারা মনু দৃষ্টান্ত হতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক কাজী মদিনা বলেন, মনু সাংবাদিকতাকে ভালোবাসতেন বলে কলেজের শিক্ষকতা ছেড়ে অন্যন্যা পত্রিকায় যোগদান করেছিলেন। মানুষকে মূল্যায়ন করার গুণটি মনু লালন পালন করতো এবং চর্চা করতো।