ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৪২:০০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

ওমিক্রন কতটা আতঙ্কের: জেনে নিন আদ্যপান্ত

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০৭ এএম, ১২ জানুয়ারি ২০২২ বুধবার

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

মানুষ যখনই নতুন স্বাভাবিকতা (নিউ নরমাল) থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছে, তখনই নভেল করোনা ভাইরাসের নতুন কোনো ধরন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ‘সর্বশেষ’ বাধার নাম নাম ওমিক্রন। অন্যান্য ধরনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গতিতে ছড়িয়ে পড়ায় ওমিক্রন নিয়ে দুশ্চিন্তা যেমন আছে, তেমনি আছে স্বস্তির কারণও। সবচেয়ে বড় সাহসের জায়গা হলো, এটি ডেল্টার মতো প্রাণঘাতী নয়। ডেল্টায় আক্রান্ত হলে যেখানে প্রতি ১০০ জনে ২ থেকে ৩ জনের মৃত্যু হয়, সেখানে ওমিক্রনে মৃত্যুর হার ০.০৩ শতাংশ। অর্থাৎ ওমিক্রনে আক্রান্ত প্রতি ৩২৯০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। ওমিক্রনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির হারও কম; ০.৩৯ শতাংশ। 

গবেষকরা বলছেন, একটি জনগোষ্ঠীর কতজন ওমিক্রনে আক্রান্ত হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে ওই জনগোষ্ঠীর অ্যান্টিবডির ওপর। অর্থাৎ, করোনার সর্বশেষ ঢেউয়ে যদি অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে, তা হলে ওমিক্রন খুব একটা আঘাত হানতে পারবে না। 

দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আবদুল করিম গত মাসে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ওমিক্রনের আগে করোনার অন্যান্য ধরনে আক্রান্ত হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ৭০ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি ছিল। এ কারণে ওমিক্রন খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি।

এক নজরে ওমিক্রন: করোনার এই ধরনটি সর্বপ্রথম শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়; গত ২৪ নভেম্বর। গ্রিক বর্ণমালার ১৫তম অক্ষর ‘ওমিক্রন’ অনুযায়ী করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের নামকরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সঙ্গে ওমিক্রনকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ (উদ্বেগজনক ধরন) হিসেবে ঘোষণা করে সংস্থাটি। গত দেড় মাসে অন্তত ১১০টি দেশে ওমিক্রনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত কম বয়সী পুরুষরা ওমিক্রনে বেশি আক্রান্ত হন। 

প্রথম ওমিক্রন শনাক্তকারী চিকিৎসক ও ‘সাউথ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের’ সভাপতি ড. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েতজি জানান, ডেল্টায় আক্রান্তরা স্বাদ-গন্ধ পান না। কিন্তু ওমিক্রনে আক্রান্তদের মধ্যে এ ধরনের উপসর্গ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট কিংবা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো ঘটনাও বিরল। ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে ১ থেকে ২ দিন ক্লান্তি ভাব; সেই সঙ্গে শরীর ও মাথাব্যথা হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে হালকা কাশি ও গলাব্যথা হয়।

মৃত্যুহার .০৩ শতাংশ: ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে ওমিক্রন। ‘ইউকে হেলথ সিকিউরিটি’ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৮০ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। মৃত্যুর হার .০৩ শতাংশ; অর্থাৎ ওমিক্রনে আক্রান্ত প্রতি ৩২৯০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৮০ জনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ৯৮১ জনকে। অর্থাৎ ওমিক্রনে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ০.৩৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে।

ভারতে ওমিক্রনে মৃত্যুর হার যুক্তরাজ্যের চেয়ে কম। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের গত সোমবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৩ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের। ৭৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি রাজস্থানের বাসিন্দা।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও কানাডার তথ্যের বরাত দিয়ে গত শুক্রবার ফ্রান্সের জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ওমিক্রনে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির হার করোনার অন্যান্য ধরনের তুলনায় ৭০ শতাংশ কম।

আক্রান্তের হার বাড়লেও কমছে মৃত্যু: ওমিক্রনের সংক্রমণ শুরুর পর বিশ্বে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, গত ৯ জানুয়ারি বিশ্বে দৈনিক গড় (৭ দিনের হিসাবে) সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৬৬ হাজার ৮২৭ জন। একই দিন বিশ্বে দৈনিক গড় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ২৮৫ জন, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ এর চেয়ে দৈনিক গড় মৃত্যু কম ছিল ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর, ৬ হাজার ২৬৫ জন। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর দৈনিক গড় মৃত্যু সর্বোচ্চ উঠেছিল ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি। ওই দিন গড় মৃত্যু ছিল ১৪ হাজার ৭০৭ জন।

‘পিকে’ উঠছে ২৫ দিনে: দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন শনাক্ত হয় গত ২৪ নভেম্বর। ওই সময় দেশটিতে দৈনিক গড় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৭৭৫ জনের মতো। এরপর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। দৈনিক গড় আক্রান্তের সংখ্যা চূড়ায় (পিক) ওঠে ১৮ ডিসেম্বর। এরপর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে। চূড়ায় উঠতে সময় লাগে ২৪ দিন। 

ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও স্পেনে দৈনিক ওমিক্রনের সংক্রমণ চূড়ায় উঠেছে যথাক্রমে ২৪, ২২, ৩২ ও ২৬তম দিনে। অর্থাৎ গড়ে ২৫ দিনে ওমিক্রণের সংক্রমণ সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।